রুবাইয়াত রিক্তা: পুঁজিবাজারে নিয়মিত উত্থান-পতন থাকবেই। এর বাইরে বছরের কয়েকটি নির্দিষ্ট সময়ে মন্দার কবলে পড়ে বাজার। ফলে দেখা যাচ্ছে বেশির ভাগ সময় দেশের পুঁজিবাজার মন্দার মধ্য দিয়েই পার করে। গত মাসে ছিল এপ্রিলের মন্দা। এখন শুরু হয়েছে বাজেটের মন্দা। এরপর শুরু হবে রোজার মন্দা। আগামী দুই মাস হয়তো এ রকম মন্দার মধ্য দিয়ে যেতে হবে। আর এ দীর্ঘ মন্দায় দিশাহারা বিনিয়োগকারীরা। মন্দার কারণে নতুন বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমে গেছে। যে কারণে লেনদেন কমে গেছে উল্লেখযোগ্যহারে। গতকাল সূচক ও লেনদেন কমলেও আগের দিনের তুলনায় অধিকসংখ্যক শেয়ারের দর বেড়েছে। ব্যাংক ও আর্থিক খাতের কিছু শেয়ারের দর আগের দিনের তুলনায় বেড়েছে।
গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে সূচক কমেছে ৩২ পয়েন্ট। ১১২টি কোম্পানির দর বেড়েছে। কমেছে ১৯২টির। বাকি ৪২টির দর অপরিবর্তিত ছিল। লেনদেনের শীর্ষে ছিল প্যারামাউন্ট টেক্সটাইল, শাহজিবাজার পাওয়ার, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স, ডরিন পাওয়ার, আরএসআরএম স্টিল, ন্যাশনাল ফিডমিল। এদিন সূচক পতনে বড় ভূমিকা পালন করে গ্রামীণ ফোন। শেয়ারটির দর চার টাকা ২০ পয়সা কমেছে। যার কারণে সূচকের পতন হয় সাড়ে ৯ পয়েন্ট। এছাড়া আইসিবি ও ইউনাইটেড পাওয়ারের কারণে ৩ পয়েন্ট করে, এক্সিম ব্যাংক ও লাফার্জ সুরমার কারণে সূচক কমে ২ পয়েন্টের বেশি করে।
ডিএসইতে গতকাল লেনদেন হয়েছে প্রায় ৫৩৮ কোটি টাকা। লেনদেনে এগিয়ে ছিল বস্ত্র খাত। মোট লেনদেনে এ খাতের অবদান ১৫ শতাংশ। এরপরে ব্যাংক খাতে লেনদেন হয় ১৪ শতাংশ। জ্বালানি খাত ১৩ শতাংশ, আর্থিক খাত ১২ শতাংশ এবং ওষুধ ও রসায়ন খাত ১১ শতাংশ অবদান রাখে। তবে গুরুত্বপূর্ণ এসব খাতে আগের দিনের তুলনায় লেনদেন কমেছে। দীর্ঘদিন পর লেনদেন বেড়েছে পাট খাতে ৭ শতাংশ। এ খাতের তিনটি কোম্পানির দরই বেড়েছে। এর মধ্যে সোনালি আঁশ ১৯ টাকা ৭০ পয়সা, নর্দার্ন ১৯ টাকা ১০ পয়সা ও জুট স্পিনার্সের দর বেড়েছে ২ টাকা ৩০ পয়সা। এছাড়া কাগজ ও প্রকাশনা এবং ভ্রমণ ও অবকাশ খাতে লেনদেন বেড়েছে দশমিক ৮ শতাংশ করে।
দেশের পুঁজিবাজার যেন দীর্ঘমেয়াদি মন্দার কবলে পড়েছে। গত ছয় বছর থেকে বাজার এ মন্দার কবল থেকে বেরিয়ে আসতে পারছে না। হঠাৎ মাঝেমধ্যে একটু আশার আলো দেখা গেলেও কয়েক দিনের মধ্যেই আবার নিভে যায় সেই আশা। এখন আর শেয়ার ব্যবসাকে পেশা হিসেবে নেওয়া সম্ভব নয়। তাই এটি এখন সচ্ছল লোকদের ব্যবসাক্ষেত্রে পরিণত হয়েছে। যারা তাদের অলস টাকা ব্যাংকে না রেখে এখানে বিনিয়োগ করতে পারেন। অসচ্ছল বা স্বল্প আয়ের লোকদের জন্য এটি নয়। কারণ এখানে বিনিয়োগ করে কবে মুনাফা হবে, তত দিন পুঁজি আটকে রাখা তাদের পক্ষে সম্ভব নয়। তাই যাদের অলস টাকা অনেক আছে তারাই ধৈর্য ধরে এ বাজার থেকে মুনাফা করতে পারেন।