ক্রীড়া প্রতিবেদক: দেখতে দেখতে প্রায় শেষ হয়ে এলো বাংলাদেশের নিউজিল্যান্ড সফর। বাকি মাত্র আর একটি টেস্ট। এরই মধ্যে কিউইদের বিপক্ষে ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি সিরিজে সফরকারীরা হয়েছে হোয়াইটওয়াশ। টেস্ট সিরিজেও সেই একই প্রতিচ্ছবির সামনে দাঁড়িয়ে হাথুরুসিংহের শিষ্যরা। তবে এটা আর হতে চাইছে না টিম বাংলাদেশ। সেই লক্ষ্য নিয়েই গতকাল সিরিজের শেষ টেস্ট খেলতে ওয়েলিংটন থেকে ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছেছে সাকিব আল হাসান-মুশফিকুর রহিমরা।
গতকাল স্থানীয় সময় বেলা ১টা ১৫ মিনিটে ক্রাইস্টচার্চে পৌঁছায় মুশফিক বাহিনী। বিমানবন্দরে প্রবাসী বাংলাদেশি সমর্থকরা ফুল দিয়ে টাইগারদের শুভেচ্ছা জানান। এই ক্রাইস্টচার্চে একদিনের ম্যাচ দিয়ে টাইগারদের নিউজিল্যান্ড সফর শুরু হয়েছিল। বলা যায়, সেখান থেকেই শুরু মুশফিকদের হতাশার গল্পটা।
নিউজিল্যান্ডের অন্যান্য শহরের তুলনায় ক্রাইস্টচার্চের বর্তমান আবহাওয়া অনেকটাই বাংলাদেশের মতো। ঠাণ্ডা, বাতাস ও রোদÑসবকিছুই সহনীয়। সকাল থেকে বেলা গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে রোদের ঝাঁজ বাড়তে থাকে। গতকাল সেখানে ক্রিকেটাররা পৌঁছানোর পর দেখা যায় কড়া রোদ।
যে কোনো ফরম্যাটের ক্রিকেটে টাইগারদের শুরুটা এ সফরে হয়েছে কী দুর্দান্ত! বলা যায়, প্রতিটি ম্যাচেই জয়ের মতো অবস্থাও তৈরি করেছিলেন সফরকারীরা। কিন্তু কেন জানি কোনো এক অদৃশ্য বস্তুর ভরে শেষটা বার বারই হয়েছে বিবর্ণ, যার সবশেষটা দেখা গেছে সদ্য শেষ হওয়া ওয়েলিংটন টেস্টে। যে ম্যাচে প্রথম থেকে চতুর্থ দিনের শেষ ঘণ্টার আগপর্যন্ত প্রাধান্য ছিল টাইগারদের। কেউ বলতে পারেননি এই টেস্টে হারবে মুশফিকরা; কিন্তু যা কারও ধারণায়ও ছিল না, শেষ পর্যন্ত তা-ই হয়েছে। ৭ উইকেটে অবিশ্বাস্য হার দেখতে হয়েছে লাল-সবুজের প্রতিনিধিদের।
দ্বিতীয় ও শেষ টেস্ট সামনে রেখে বাংলাদেশ শিবিরে আতঙ্কের নাম ইনজুরি। ইমরুল কায়েস, মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, মুমিনুল হকদের রয়েছে ছোটখাটো চোট। এরই মধ্যে ক্রাইস্টচার্চ টেস্টে মুশির খেলা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা। প্রথম টেস্টের শেষ দিনে মাথায় বলের আঘাতের পর হাসপাতালে যেতে হয়েছিল তাকে। কোনো সমস্যা ধরা না পড়লেও নিউজিল্যান্ডের চিকিৎসকরা এক্ষেত্রে অন্তত চার সপ্তাহ খেলাধুলা না করার পরামর্শ দিয়ে থাকেন। মুশফিকের জন্যও ওয়েলিংটন হাসপাতাল থেকে সে পরামর্শই দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ দলের ইংলিশ ফিজিও ডিন কনওয়ে সংবাদমাধ্যমে এ নিয়ে বলেছেন, ‘এসব ক্ষেত্রে নিউজিল্যান্ডের চিকিৎসকরা অন্তত তিন থেকে চার সপ্তাহ না খেলার কথা বলেন। ইংল্যান্ডেও দুই থেকে তিন সপ্তাহের আগে মাঠে না নামার পরামর্শ দেওয়া হয়। সেদিক দিয়ে ক্রাইস্টচার্চে মুশফিকের খেলার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। মাঠে ফিরতে তিন থেকে চার সপ্তাহ সময় লাগতে পারে।’
তার আগে অবশ্য ওয়েলিংটন টেস্টেই পাওয়া মুশফিকের বাঁ হাতের বুড়ো আঙুলের চোটও পুরোপুরি সারতে হবে। এ মুহূর্তে সেটাকেই বড় সমস্যা মনে করছেন ফিজিও, ‘ওর আঙুলের অবস্থাই বেশি খারাপ। সূক্ষ্ম যে চিড় ধরা পড়েছে, সেটা নতুন। এই চোট সারার জন্য আরও সময় দিতে হবে।’
ফিজিওর আশা, হায়দরাবাদে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু ভারতের বিপক্ষে একমাত্র টেস্টে ফিরতে পারবেন মুশফিক। নিউজিল্যান্ড সফরে
এখনও জয়শূন্য বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টে
ভালো অবস্থায় থেকেও শেষটা ড্র কিংবা কিছুই জোটেনি সফরকারীদের। সঙ্গী হয়েছে সেই হারই। তাই তো সিরিজের শেষ ম্যাচটায়
অন্তত জয় কিংবা ড্র নিয়ে দেশের বিমানে উঠতে চায় টাইগাররা।
Add Comment