দুই কার্যদিবসে সূচক কমেছে ১২০ পয়েন্ট

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গত দুই কার্যদিবসে সূচকের টানা পতন হয়েছে। এতে প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ১২০ পয়েন্ট ৬ হাজার ১৫৬ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। এ সময় বাজারটিতে লেনদেন কমেছে ৩০৬ কোটি টাকা এবং বাজার মূলধন কমেছে ১৪ হাজার ৩৯ কোটি ৭৬ লাখ টাকা। আর দ্বিতীয় ধাপে ফ্লোর প্রাইস তুলে দেয়া ২৩ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০টির টানা তিন দিন দরপতন হয়েছে।

প্রায় দেড় বছর গত ১৮ জানুয়ারি পুঁজিবাজার থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার সিদ্ধান্তের কথা জানায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। বিএসইসির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্রথম ধাসে ৩৫ প্রতিষ্ঠান বাদে সবগুলো থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া হয়। ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার পর মাত্রাতিরিক্ত বিক্রির চাপে রোববার লেনদেনের এক পর্যায়ে ডিএসইর প্রধানসূচক ২১৪ পয়েন্ট পড়ে যায়। তবে শেষ দিকে বিক্রির চাপ কমায় প্রধান সূচক ৯৬ পয়েন্ট কমে দিনের লেনদেন শেষ হয়। পরের কার্যদিবস সোমবার অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার দাম বাড়ার পাশাপাশি বাড়ে সবকটি মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে প্রায় ছয় মাস পর ডিএসইতে হাজার কোটি টার ওপরে লেনদেন হয়। এ পরিস্থিতিতে সোমবার বিকালে আরও ২৩ প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া হয়। পরের কার্যদিবস মঙ্গলবার বেশিরভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিটের দাম কমলেও বাড়ে মূল্যসূচক। সেই সঙ্গে লেনদেন বেড়ে সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ হয়। তবে গত বুধবার লেনদেন কমার পাশাপাশি কমে সবকটি মূল্যসূচক, যা গতকালও অব্যাহত ছিল।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, গতকাল বৃহস্পতিবার দিনের লেনদেন শেষে ডিএসইতে দাম বাড়ার তালিকায় স্থান করে নিয়েছে ৮৫টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও ইউনিট। বিপরীতে দাম কমেছে ২৮২টির। আর ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের দরপতন হওয়ায় ডিএসইর প্রধান মূল্যসূচক ডিএসইএক্স ৭০ পয়েন্ট কমে ৬ হাজার ১৫৬ পয়েন্টে নেমে গেছে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসই শরিয়াহ্ আগের দিনের তুলনায় ২০ পয়েন্ট কমে ১ হাজার ৩৫২ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে। আর বাছাই করা ভালো ৩০টি কোম্পানি নিয়ে গঠিত ডিএসই-৩০ সূচক আগের দিনের তুলনায় ২৪ পয়েন্ট কমে ২ হাজার ১১৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে। সবকটি মূল্যসূচক কমার পাশাপাশি লেনদেনও হাজার কোটি টাকার নিচে নেমে এসেছে। দিনভর ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে ৮৭০ কোটি ৯০ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১ হাজার ১৭৩ কোটি ২১ লাখ টাকা।

টাকার অঙ্কে সব থেকে বেশি লেনদেন হয়েছে ফু-ওয়াং ফুডের শেয়ার। দিনভর কোম্পানিটির ২৮ কোটি ৩৯ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছ। দ্বিতীয় স্থানে থাকা ফরচুন সুজ ২৪ কোটি ৫৩ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে। ২৩ কোটি ৭৪ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেনের মাধ্যমে তৃতীয় স্থানে রয়েছে খুলনা প্রিন্টিং অ্যান্ড প্যাকেজিং। এছাড়া লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় রয়েছেÑকর্ণফুলী ইন্স্যুরেন্স, বিডি থাই অ্যালুমিনিয়াম, আইএফআইসি ব্যাংক, ওরিয়ন ইনফিউশন, এক্সপ্রেস ইন্স্যুরেন্স, অলিম্পিক অ্যাকসেসরিজ এবং সেন্ট্রাল ফার্মাসিউটিক্যালস।

গতকাল অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) সার্বিক মূল্যসূচক সিএএসপিআই কমেছে ২৫৯ পয়েন্ট। বাজারটিতে লেনদেনে অংশ নেয়া ২৬০টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৬০টির দাম বেড়েছে। বিপরীতে দাম কমেছে ১৭৮টির এবং ২২টির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। লেনদেন হয়েছে ১৫ কোটি ৩৬ লাখ টাকা। আগের কার্যদিবসে লেনদেন হয় ১৩ কোটি ৩৫ লাখ টাকা।

ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া দ্বিতীয় ধাপের ২৩ প্রতিষ্ঠান

গত সোমবার দ্বিতীয় ধাপে আরও ২৩ প্রতিষ্ঠানের ওপর থেকে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়া হয়। তবে ফ্লোর প্রাইস তুলে নেয়ার পরের তিন কার্যদিবসে ২৩টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২০টির টানা দরপতন হয়েছে। প্রতিষ্ঠানগুলো হলোÑবারাকা পাওয়ার, বাংলাদেশ সাবমেরিন কেব্?ল, বিএসআরএম স্টিল,  কনফিডেন্স সিমেন্ট, ডিবিএইচ, ডরিন পাওয়ার, এনভয় টেক্সটাইল, এইচআর টেক্সটাইল, আইডিএলসি, ইনডেক্স অ্যাগ্রো, কেডিএস অ্যাকসেসরিজ, কাট্টলী টেক্সটাইল, ন্যাশনাল হাউজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্স, পদ্মা অয়েল, সায়হাম কটন, শাশা ডেনিমস, সোনালী পেপার, শাইনপুকুর সিরামিকস, সামিট পাওয়ার ও ইউনাইটেড পাওয়ার। এছাড়া বাকি তিনটি প্রতিষ্ঠান মালেক স্পিনিং, ন্যাশনাল পলিমার ও  সোনার বাংলা ইন্স্যুরেন্স একদিন দরবৃদ্ধি পেলেও বাকি দুদিন দরপতনের তালিকায় ছিল।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০