Print Date & Time : 23 June 2025 Monday 12:42 am

দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা পরিশোধে ব্যর্থ এসএ গ্রুপ

সাইফুল আলম, চট্টগ্রাম: দেশের ব্যাংক খাতের আলোচিত ঋণখেলাপি চট্টগ্রামের এসএ গ্রুপ। গ্রুপটির দুই প্রতিষ্ঠান গত ২৭ মে মোট দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার দুটি চেক পূবালী ব্যাংক, আগ্রাবাদ শাখার অনুকূলে জমা প্রদান করে। কিন্তু তহবিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করতে পারেনি ব্যাংকটি। প্রতিষ্ঠান দুটিকে এ পাওনা আগামী এক মাসের মধ্যে পরিশোধে আইনি নোটিস দিয়েছে ব্যাংকটি। অন্যথায় আইনি প্রক্রিয়ায় টাকা আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
পূবালী ব্যাংক সূত্রমতে, দেশের ব্যাংক খাতের আলোচিত ঋণখেলাপি শিল্প গ্রুপ চট্টগ্রামের এসএ গ্রুপ। কয়েক বছর ধারাবাহিকভাবে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যর্থতা ও অদক্ষতায় সংকুচিত হয় গ্রুপটির ব্যবসা। এতে অর্থায়নের সঙ্গে যুক্ত একাধিক ব্যাংকের নিয়মিত পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছে গ্রুপটি। গ্রুপটির দুই প্রতিষ্ঠান গত ২৭ মে মোট দুই কোটি ৩০ লাখ টাকার দুটি চেক পূবালী ব্যাংক, আগ্রাবাদ শাখার অনুকূলে জমা প্রদান করে। এর মধ্যে রয়েছে সামান্নাজ সুপার অয়েল লিমিটেড দেড় কোটি টাকা এবং এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের ৮০ লাখ টাকা।
ব্যাংক কর্তৃপক্ষ চেক দুটি ২০ সেপ্টেম্বর নগদায়নের জন্য উপস্থাপন করে। কিন্তু পাওনাদার প্রতিষ্ঠানগুলোর ব্যাংক তহবিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করতে পারেনি ব্যাংকটি। এ পাওনা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে প্রতিষ্ঠান দুটির কাছে আইনি নোটিস পাঠিয়েছে ব্যাংকটি। নোটিসে আগামী এক মাসের মধ্যে চেক দুটি অর্থাৎ দুই কোটি ৩০ লাখ টাকা পরিশোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলা হয়। অন্যথায় ব্যাংকটি আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে টাকা আদায়ের উদ্যোগ গ্রহণ করবে। এছাড়া চলতি বছরের ৯ এপ্রিল ব্যাংকটি এসএ অয়েল রিফাইনারি লিমিটেডের ১০০ কোটি ৮০ লাখ এবং সামান্নাজ সুপার অয়েল লিমিটেডের ১৮৭ কোটি ১০ লাখ টাকা খেলাপির দায়ে চট্টগ্রামের অর্থঋণ আদালতে মামলা করে। যা বর্তমানে চলমান আছে।
এসএ গ্রুপ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, তেল ব্যবসায় প্রতিযোগিতার সক্ষমতায় পিছিয়েছে দেশের ভোগ্যপণ্যের ব্যবসায়ী ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের উদ্যোক্তা পরিচালক শাহাবুদ্দীন আলমের মালিকাধীন এসএ গ্রুপ। এ গ্রুপের অন্যতম প্রধান প্রতিষ্ঠান এসএ অয়েল রিফাইনারি, সামান্নাজ সুপার অয়েলসহ মোট সাতটি তেল উৎপাদন ও বিপণন কোম্পানির সমন্বয়ে এসএ গ্রুপের তেলের ব্যবসায় পরিচালিত হতো। কিন্তু এক দশকের ব্যবধানে শীর্ষ আমদানিকারক গ্রুপের তালিকা থেকে বাদ পড়ে গ্রুপটি। পাশাপাশি অত্যধিক ব্যাংকঋণ, ব্যাংকঋণের সুদ, প্রয়োজনীয় খরচ নির্বাহে অক্ষমতা ও ক্রমাগত লোকসানের কারণে নিয়মিত পাওনা পরিশোধে ব্যর্থ হচ্ছেন এসএ গ্রুপের উদ্যোক্তারা। ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক পাওনা অনাদায়ে অর্থঋণ আদালত ও চেক প্রত্যাখ্যানের একাধিক মামলা করেছে।
এ বিষয়ে ব্যাংকটির আইনজীবী মুহাম্মদ নাঈম ভূঁইয়া এক বিজ্ঞপ্তিতে জানান, নেগোশিয়েবল ইনস্ট্র–মেন্ট অ্যাক্ট ১৮৮১-এর ১৩৮ ও ১৪০ ধারামতে, চেক ডিজঅনার হওয়া একটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আর এ অপরাধে শাস্তি হিসেবে এক বছর কারাদণ্ড অথবা চেকের তিনগুণ অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করা যাবে। যেহেতু আইন অনুসারে লিগ্যাল নোটিস দেওয়া হয়েছে, এর মধ্যে যদি পাওনা পরিশোধ করতে না পারে, তাহলে ফৌজদারি আইনে মামলাসহ প্রয়োজনীয় আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করা হবে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এসএ গ্রুপের কর্ণধার ও মার্কেন্টাইল ব্যাংকের পরিচালক মো. শাহাবুদ্দিন আলমের সঙ্গে একাধিকবার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি সাড়া দেননি।
উল্লেখ্য, খাদ্যপণ্য, পানি, পেপার, টেলিকম, তেল রিফাইনারি ও আবাসন ব্যবসা নিয়ে এসএ গ্রুপ। গ্রুপটির চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন ব্যবসায়ী শাহাবুদ্দিন আলম। এছাড়া তিনি মার্কেন্টাইল ব্যাংক লিমিটেডের একজন উদ্যোক্তা পরিচালক ও ঝুঁকি ব্যবস্থাপনা কমিটির চেয়ারম্যান