Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 7:26 pm

দুই বছর পরে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সঙ্গে অর্থ মন্ত্রণালয়ের বৈঠক

শেখ আবু তালেব: পুঁজিবাজার উন্নয়নে অংশীজনের সঙ্গে মতবিনিময় ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয়ে উদ্যোগ নেয়া হয় অর্থ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে। এজন্য সর্বপ্রথম ২০১৯ সালে অংশীজনদের নিয়ে একটি বৈঠক আয়োজন করেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। সেই বৈঠকের সুপারিশের অগ্রগতি নিয়ে আজ ফের বসছে অর্থ মন্ত্রণালয়।

দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, পুজিবাজার ইস্যুতে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে টানাপড়েনের সময়ে এই বৈঠকটির আয়োজন করা হয়। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বৈঠকের বিবদমান ইস্যুতে উদ্ভূত সমস্যার আশু সমাধান না হলেও বিক্ষুব্ধ বিনিয়োগকারীদের সান্ত¡না দেয়া যাবে। তাই সংশ্লিষ্ট সবার কাছেই বৈঠকটি গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে দেখা দিয়েছে।

চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, পুঁজিবাজারের উন্নয়নে অর্থমন্ত্রীর সঙ্গে অংশীজনের মতবিনিময় সভার প্রস্তাবগুলোর যথাযথ বাস্তবায়ন কাজের সমন্বয় ও তদারকির জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।

জানা গেছে, বৈঠকে উপস্থিত থাকতে চিঠি দেয়া হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান, অর্থ বিভাগের সিনিয়র সচিব ও ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশের (আইসিবি) ব্যবস্থাপনা পরিচালককে।

একইসঙ্গে সংশ্লিষ্ট নিয়ন্ত্রক সংস্থায় পুঁজিবাজার ইস্যুতে দায়িত্বপালনকারী কর্মকর্তাদেরও থাকতে বলা হয়েছে। তথ্য অনুযায়ী, পুঁজিবাজার ইস্যুতে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে উদ্যোগ নিয়েছিল অর্থ মন্ত্রণালয়। এটিকে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে নিয়ে আসা ও নিয়মিত বৈঠক করতে একটি কমিটি গঠন করা হয় ২০১৯ সালে। কমিটির প্রথম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। ওই বৈঠকে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার পাশাপাশি অংশীজনদের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত হওয়া বৈঠকে বিভিন্ন নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে একাধিক প্রস্তাবনা আসে। এর মধ্যে ছিল পুঁজিবাজার উন্নয়নে বিশেষ তহবিল গঠন, বন্ডে বিনিয়োগের সুবিধা দেয়া এবং বিশেষ তহবিলের বিনিয়োগ পুঁজিবাজার এক্সপোজারের বাইরে রাখা। এগুলো এরই মধ্যে নীতিমালা দিয়ে বাস্তবায়ন করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। কিন্তু এর বাইরেও পুঁজিাবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার পক্ষ থেকে দাবি করা হয়, লোকসানি

প্রতিষ্ঠানগুলোকে লভ্যাংশ দেয়ার সুযোগ দেয়া, অদাবিকৃত লভ্যাংশের অর্থ পুঁজিবাজার স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে দেয়া ও পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগকৃত অর্থের গণনা ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ করা। এছাড়া এনবিআরের প্রতি অনুরোধ করা হয়, করপোরেট কর কমিয়ে আনতে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, এর মধ্যে সমাধানযোগ্যগুলোয় নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো নীতিমালা করেছে। কিন্তু আইনি বাধ্যবাধকতা থাকায় কিছু প্রস্তবানা বাস্তবায়নযোগ্য নয় বলে মনে করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এই ইস্যুতে বিবাদ দেখা গেছে বিএসইসি ও বাংলদেশ ব্যাংকের মধ্যে, যা গত ৩০ নভেম্বর প্রকাশ্যে আসে। একটি বৈঠকের আলোচনা নিয়ে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিপরীত ধর্মী বক্তব্য দেয়।

এর ফলে পতন হয় উত্থানে থাকা পুঁজিবাজার। বাজার সামাল দিতেই এই কমিটির বৈঠক ফের ডাকা হল। আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের অতিরিক্ত সচিব এবং পুঁজিবাজার কার্যক্রম সমন্বয় ও তদারকি কমিটির আহ্বায়ক মফিজ উদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।