Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 4:17 pm

দুই শিশু সন্তানকে হত্যার পর মায়ের আত্মহত্যার চেষ্টা

প্রতিনিধি, টাঙ্গাইল: ফ্যান পড়ে নয়, পা‌রিবা‌রিক কল‌হের জের ধ‌রেই দুই শিশু সন্তান‌কে হত‌্যার পর আত্মহত‌্যার চেষ্টা ক‌রেছেন মা। হাসপাতালে চি‌কিৎসাধীন অবস্থায় পু‌লি‌শের কা‌ছে স্বীকারোত্তিমূলক জবানবন্দীতে একথা জানান মা সাহিদ বেগম।
গণমাধ্যমকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার।
এরআগে রোববার (২৪ এ‌প্রিল) দুপুরে টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপ‌জেলার নিকরাইল ইউ‌নিয়‌নের ১নং পুনবার্সন গ্রামের নিজ বাড়ির ঘর থেকে ওই শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করা হয়। এসময় শিশুদের মা আহত অবস্থায় পাশেই পড়ে ছিল।
মৃত সা‌জিম (৬) ও তার ভাই সা‌নি (৪ মাস) বয়সের। তারা ওই এলাকার ইউসুফ আলীর ছে‌লে। হত্যার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করা সাহিদা বেগম বর্তমা‌নে টাঙ্গাইল জেনা‌রেল হাসপাতা‌লে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
মৃত শিশুদের নানী সূর্য বেগম জানান, তার মেয়ের জামাই ইউসুফ তাদের এখানেই থেকে মাছ শিকার করে সংসার চালান। রোববির ভোরে সে মাছ ধরার জন্য বাড়ি থেকে বের হয়ে যান। অনেক বেলা হলেও তার মেয়ে এবং নাতিদের কোন সারাশব্দ না পেয়ে ডাকাডাকি করতে থাকেন। পরে তিনি তার মেয়ের জামাইকে ফোন করে বিষয়টি জানান। পরে ইউসুফ বাড়িতে এসে টিনের বেড়া কেটে ঘরে ঢুকে দুই সন্তানকে মৃত অবস্থায় ও তার স্ত্রীকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে।
টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে দাঁয়িত্বরত চিকিৎসক তানভীর আহমেদ জানান, মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত সাহিদাকে দুপুরে হাসপাতালে আনা হয়। মাথায় কয়েকটি সেলাই দেয়ার পর তাকে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ সুপার সরকার মোহাম্মদ কায়সার বলেন, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, পারিবারিক কলহের জের ধরে সাহিদা বেগম তার দুই শিশু সন্তানকে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। পরে তিনি নিজে চলন্ত ফ্যানের সাথে কাটা পড়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এ জন্য মৃত দুই শিশুর শরীরের কোন আঘাতের চিহ্ন নেই।
তিনি আরও বলেন, সাহিদা বেগম হাসপাতালে পুলিশের কাছে নিজে হত্যা করার ঘটনা স্বীকার করেন। বর্তমানে তিনি পুলিশ পাহারায় হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
সাহিদার ভাই ও ভাবি মানসিকভাবে যন্ত্রনা করতো। তাদের মধ্যে এক সপ্তাহ আগেও ঝগড়া হয়েছিল। এর ফলে সাহিদা আশঙ্কা করছিলেন তার ভাই ও ভাবি তাদের সন্তানকে মেরে ফেলবেন। এই আশঙ্কা থেকেই সাহিদা তার দুই ছেলেকে হত্যা ক‌রে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করে।