দুই সপ্তাহ আগেই ইলিশে বৈশাখী হাওয়া

নিজস্ব প্রতিবেদক: সাধারণত প্রতিবছর বাংলা নববর্ষ পয়লা বৈশাখের কয়েক দিন আগে ইলিশ মাছের দাম বাড়ে হু হু করে। তাই গতকাল আগাম মজুতের জন্য কারওয়ান বাজারে ইলিশ কিনতে আসেন মনজুরুল হাসান। তবে সফল হয়নি তার উদ্দেশ্য। পয়লা বৈশাখ আসতে দুই সপ্তাহ বাকি থাকলেও  বেড়ে গেছে ইলিশের দাম। প্রতিদিনই বাজারে দামের উত্তাপ বাড়ছে।

দুই হালি ইলিশ কিনতে সাধারণ সময়ের তুলনায় গতকাল প্রায় দুই হাজার টাকা বেশি লেগেছে এমনটা মন্তব্য করে মনজুরুল বলেন, ভেবেছিলাম পয়লা বৈশাখের কাছাকাছি সময় ইলিশের দাম বেশি হবে, আগেভাগেই কিনি। সে আশার গুড়ে বালি। পয়লা বৈশাখের দুই সপ্তাহ বাকি থাকতেই ইলিশ বিক্রি হচ্ছে হালিপ্রতি হাজার টাকার বেশি দরে।

এদিকে মার্চ-এপ্রিল দুই মাস জাটকার ভরা মৌসুম। এ সময় দেশের পাঁচটি অভয়াশ্রমে ইলিশ ধরা বন্ধ রাখা হয়েছে। এখন বাজারে হিমাগারে মজুত করা ইলিশের প্রাধান্য বেশি। বলতে গেলে মজুত ইলিশেই চলবে বৈশাখের উৎসব। তাই দামে তার প্রভাবও বেশি লক্ষ্য করা যাচ্ছে।

বাজারে এখন তাজা ও মজুত ইলিশের দামেও কিছু পার্থক্য রয়েছে। একেকটি মাঝারি আকারের তাজা ইলিশ কিনতে গতকাল গুনতে হয়েছে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা। তবে ওই আকারের মজুত ইলিশের দাম ১০০ থেকে ২০০ টাকা কম। যদিও কিছুদিন আগে এসব মাছ ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায় পাওয়া যেতো। আর বাজারে এক কেজির ওপরে একটি ইলিশ কিনতে ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে দেড় হাজার টাকার ওপরে।

মাছ বিক্রেতারা বলছেন, রাজধানীতে প্রতিবছর পয়লা বৈশাখ উপলক্ষে ইলিশের চাহিদা বাড়ে। কিন্তু এ সময়টাতেই জাটকা সংরক্ষণে প্রধান কয়েকটি নদীর অভয়াশ্রমে ইলিশ ধরা পুরোপুরি বন্ধ থাকে। অভয়াশ্রমের বাইরের এলাকা থেকেই শুধু তাজা ইলিশ আসে। ফলে স্বাভাবিক ইলিশের সরবরাহ কমে যায়। এতে দেশের হিমাগারগুলোয় ইলিশ সংগ্রহ করে রাখেন ব্যবসায়ীরা। যার প্রভাব দামে পড়ে ব্যাপকভাবে। অনেক সময় আবার মজুত পর্যাপ্ত থাকলেও সিন্ডিকেটে দাম বাড়ানো হয়।

এদিকে বৈশাখ আসতে এখনও দেরি থাকলেও এরই মধ্যে বাজারে আসতে শুরু করেছে হিমাগারের ইলিশ। মোহাম্মদপুরের টাউন হল কাঁচাবাজার, কারওয়ান বাজার, মালিবাগ, কাপ্তান বাজার, সেগুনবাগিচাসহ বেশ কয়েকটি বাজার ঘুরে হিমাগারের ইলিশেরই প্রাধান্য দেখা গেছে।

জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের এক মাছ বিক্রেতা বলেন, এখন ইলিশ ধরা বন্ধ। এতদিন বাজারে কম ইলিশ ছিল। এখন বৈশাখ উপলক্ষে বিভিন্ন জায়গা থেকে মানুষ ইলিশ কেনা শুরু করেছে। সরবরাহ কম, তবে হিমাগারে যেসব মাছ রাখা ছিল, তা আস্তে আস্তে বাজারে আসছে। ভালো দাম না পেলে তো মজুত থেকে কেউ এখন ইলিশ বেচবে না। তাই দাম একটু বেড়েছে।

দাম কত বেশি জানতে চাইলে সেগুনবাগিচা বাজারে ফিরোজ মোল্লা বলেন, ছোট মাছে হালিপ্রতি ২০০ থেকে ৩০০ টাকা বেশি। মাঝারিতে ৫০০ থেকে ৮০০ ও বড় মাছের হালিতে এক হাজার থেকে এক হাজার ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। বৈশাখের আগে যত সময় কমবে, দাম ততোই বাড়বে। কারণ সরবরাহের তুলনায় চাহিদা বেশি থাকবে।

এদিকে মিয়ানমার থেকে কিছু ইলিশ আসছে বলে জানান কয়েকজন মাছ ব্যবসায়ী। তবে এ বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পাওয়া যায়নি। তারা জানান, এ বছর উৎপাদন বেশি হওয়ায় দেশেই প্রচুর ইলিশ মজুত রয়েছে। সেসব ইলিশে বৈশাখের চাহিদা পূরণ সম্ভব।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০