Print Date & Time : 22 June 2025 Sunday 8:07 am

দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকার আরও দুটি প্রণোদনা ঘোষণা

নিজস্ব প্রতিবেদক: করোনাকালে ক্ষতিগ্রস্ত এবং ক্ষতি থেকে উত্তরণের পাশাপাশি ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্পে গতি সঞ্চার এবং সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণে দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকার আরও দুটি প্রণোদনা প্যাকেজ ঘোষণা করেছে সরকার। গতকাল অর্থ মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

নতুন দুই প্রণোদনা কর্মসূচির বিষয়ে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, করোনা মহামারির প্রভাব মোকাবিলায় দেশের কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতে গতি সঞ্চার, গ্রামীণ প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং অতিদরিদ্র বয়স্ক ও বিধবাদের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী নতুন দুটি প্রণোদনা কর্মসূচি অনুমোদন করেছেন। কর্মসূচি দুটির মোট বরাদ্দ দুই হাজার ৭০০ কোটি টাকা, যার বাস্তবায়ন অবিলম্বে শুরু হবে।

তিনি বলেন, ‘নতুন অনুমোদিত এই দুটিসহ মোট প্রণোদনা প্যাকেজের সংখ্যা হলো ২৩টি, যার মোট আর্থিক পরিমাণ এক লাখ ২৪ হাজার ৫৩ কোটি টাকা, যা জিডিপির চার দশমিক ৪৪ শতাংশ। আমার বিশ্বাস প্রধানমন্ত্রী যে উদ্দেশ্যে এ দুটি নতুন প্রণোদনা ঘোষণা করেছেন, তা অবশ্যই কার্যকর হবে এবং নতুন এ দুটি প্রণোদনার মাধ্যমে আমাদের পিছিয়ে পড়া জনগোষ্ঠী অত্যন্ত উপকৃত হবে। পাশাপাশি আমাদের অর্থনীতিতেও আরও গতি সঞ্চার হবে।’

তথ্যমতে, নতুন প্রথম প্যাকেজটির আকার এক হাজার ৫০০ কোটি টাকা, যার আওতায় ক্ষুদ্র, কুটির ও মাঝারি শিল্প খাত এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য নেয়া কার্যক্রম সম্প্রসারণে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প (এসএমই) ফাউন্ডেশনকে ৩০০ কোটি, বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প সংস্থাকে (বিসিক) ১০০ কোটি এবং জয়িতা ফাউন্ডেশনকে ৫০ কোটি টাকা দেয়া হবে।

পাশাপাশি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে বিভিন্ন কার্যক্রম গ্রহণ করতে এনজিও ফাউন্ডেশনকে ৫০ কোটি, সোস্যাল ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনকে ৩০০ কোটি, পল্লী দারিদ্র্য বিমোচন ফাউন্ডেশনকে ৩০০ কোটি, ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনকে ১০০ কোটি এবং বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডকে ৩০০ কোটি টাকা দেয়া হবে।

দ্বিতীয় প্যাকেজের এক হাজার ২০০ কোটি টাকায় আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে দেশের ১৫০টি উপজেলায় দরিদ্র্য বয়স্ক এবং বিধবা ও স্বামী পরিত্যক্তা নারীর ভাতার ব্যবস্থা করা হবে।

গত বছরের মার্চে দেশে কভিড-১৯ মহামারি শুরুর পর বৃহৎ, মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পের জন্য পৃথক ঋণ প্রণোদনা ঘোষণা করেছিল সরকার। এরই মধ্যে এসব প্রণোদনার অধিকাংশ অর্থ নির্বাচিতদের মধ্যে বিতরণ করা হয়েছে।

মহামারির প্রকোপ চলতে থাকার মধ্যে গত নভেম্বরে অর্থনীতিতে প্রথম প্রণোদনার প্রভাব নিয়ে অর্থ বিভাগ আয়োজিত তিন দিনব্যাপী আলোচনায় আরেকটি প্যাকেজ ঘোষণার সুপারিশ করেন অর্থনীতিবিদরা।

সভাগুলোয় মহামারি মোকাবিলায় গ্রামীণ অর্থনীতিকে বেগবান করার লক্ষ্যে ব্যাংক ব্যবস্থার পাশাপাশি কুটির, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প খাতসংশ্লিষ্ট সরকারি ও আধাসরকারি সংস্থা/প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে ঋণ কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো, নারী উদ্যোক্তা উন্নয়নে আরও পদক্ষেপ নেয়া এবং দারিদ্র্য হ্রাসের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন অব্যাহত রাখতে পল্লি এলাকার প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়ন এবং অতিদরিদ্র পরিবারের জন্য সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচি সম্প্রসারণের সুপারিশ করা হয়।