দুদকের ‘ভুলের’ শিকার কামরুল ইসলামের সাজা বাতিল

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) ভুল তদন্তের কারণে ১৫ বছরের কারাদণ্ড পাওয়া নিরপরাধ মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের সাজা বাতিল করে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

সেই সঙ্গে মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন উচ্চ আদালত। এছাড়া মামলাটিতে ভুল ব্যক্তিকে যুক্ত করার ক্ষেত্রে দায়ী কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নিতেও নির্দেশ দেয়া হয়েছে। আর কামরুল ইসলাম যদি ক্ষতিপূরণ চেয়ে দুদকে আবেদন করেন, তবে দুদককে তা বিবেচনা করতে বলেছেন হাইকোর্ট।

এ মামলার দণ্ড চ্যালেঞ্জ করে নিরপরাধ মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের রিটে জারি করা রুল যথাযথ ঘোষণা করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এ রায় দেন।

আদালতে মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী। আর দুদকের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. খুরশীদ আলম খান।

আইনজীবী মিনহাজুল হক চৌধুরী পরে সাংবাদিকদের বলেন, ‘মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের ভুল সাজার বিরুদ্ধে করা রিট আবেদনটি আজকে আদেশের জন্য ছিল। আদালত উভয়পক্ষের শুনানি শেষে জারি করা রুলটি যথাযথ ঘোষণা করেছেন। ‘রুল যথাযথ ঘোষণা করার অর্থ হচ্ছে, এই আসামিকে সাজা পরোয়ানা মূলে গ্রেপ্তার করা যাবে না এবং কোনোভাবে হয়রানি করা যাবে না।’

এ আইনজীবী বলেন, ‘বিশেষ জজ যে রায়টি দিয়েছিলেন সে রায়টি বাতিল করা হয়েছে হাইকোর্টের রায়ে। এছাড়া মোহাম্মদ কামরুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিচারিক আদালত যে সাজা পরোয়ানা জারি করেছিলেন, সে সাজা পরোয়ানাটি হাইকোর্ট রিকল করেছেন এবং মামলাটি পুনঃতদন্ত করার নির্দেশ দিয়েছেন।’

ওই তদন্ত দুদকও করতে পারে, আবার দুদকের এখতিয়ারের বাইরের ধারা থাকলে অন্য তদন্তকারী সংস্থাগুলোও তা করতে পারে বলে জানান মিনহাজ।

১৯৯৮ সালের এসএসসির সনদ জালিয়াতি করে কলেজে ভর্তি হওয়ার অভিযোগে ২০০৩ সালে এক যুবকের বিরুদ্ধে মামলা করে তৎকালীন দুর্নীতি দমন ব্যুরো। তার ১০ বছর পর ২০১৩ সালের ২৮ নভেম্বর এ মামলায় অভিযোগপত্র দেয় বর্তমান দুর্নীতি দমন কমিশন-দুদক। পরের বছরই মামলার রায় হয়।

রায়ে আসামিকে পলাতক দেখিয়ে দণ্ডবিধির তিনটি ধারায় পাঁচ বছর করে ১৫ বছরের সাজা দেয় বিচারিক আদালত। সেই সঙ্গে ১০ হাজার টাকা করে মোট ৩০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়।

ওই রায়ের পর পুলিশি তৎপরতা টের পেয়ে মোহাম্মদ কামরুল ইসলাম বিচারিক আদালতের রায় চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট আবেদন করেন। হাইকোর্ট তার প্রাথমিক শুনানি নিয়ে রুল জারি করে। সে রুলের জবাবে দুদক বলে, এটা তদন্তকারী কর্মকর্তার ‘সরল বিশ্বাসের ভুল’।

গত সোমবার সেই রুলের ওপর শুনানি শেষে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ বৃহস্পতিবার রায় দেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০