শেয়ার বিজ ডেস্ক : চাহিদা বৃদ্ধি এবং স্বাধীনতার পক্ষে ইরাকের কুর্দিস্তানে গণভোট নিয়ে ভ‚-রাজনৈতিক উদ্বেগে আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দামে প্রভাব পড়েছে। সোমবার লন্ডনের ব্রেন্ট তেলের দাম গত দুই বছরের মধ্যে সর্বোচ্চে পৌঁছায়। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্রের বাজারেও পণ্যটির দাম বেড়েছে আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জ্বালানি তেল রফতানিকারক দেশগুলোর সংগঠন ওপেকের উত্তোলন হ্রাস প্রচেষ্টা কার্যকর হচ্ছে। খবর বিবিসি।
নিউইয়র্ক মার্কেন্টাইল এক্সচেঞ্জে (নিমেক্স) ভবিষ্যতে সরবরাহ চুক্তিতে গত সোমবার ব্যারেলপ্রতি জ্বালানি তেলের দাম বেড়েছে তিন শতাংশ। সবশেষ লেনদেনে এ বাজারে পণ্যটির দাম ব্যারেলপ্রতি বিক্রি হয় ৫২ ডলার ২২ সেন্টে।
অন্যদিকে লন্ডন ইন্টারকন্টিনেন্টাল এক্সচেঞ্জে (আইসিই) ভবিষ্যৎ সরবরাহ চুক্তিতে ব্যারেলপ্রতি দাম বেড়েছে তিন দশমিক আট শতাংশ। এদিন এ বাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেল বিক্রি করা হয়েছে ৫৯ ডলার দুই সেন্টে। ২০১৫ সালের জুলাইয়ের পর এটিই ছিল পণ্যটির সর্বোচ্চ দর।
বিশ্লেষকরা বলছেন, জ্বালানি তেলের চাহিদা বৃদ্ধি, বিশেষ করে চীনের চাহিদা ও ইরাকের কুর্দিস্তান অঞ্চলে তুরস্কের তেলের সংযোগ বন্ধ করে দেওয়ার হুমকির কারণে গত সোমবার জ্বালানি তেলের দামে প্রভাব পড়ে।
ইরাকের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল কুর্দিস্তানের স্বাধীনতার প্রশ্নে গণভোট অনুষ্ঠিত হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা উপেক্ষা করেই ভোট দিয়েছেন অঞ্চলটির বাসিন্দারা।
এ গণভোটের পরিণতি ভয়াবহ হবে বলে এরই মধ্যে হুঁশিয়ার করেছেন ইরাকের প্রধানমন্ত্রী হায়দার আবাদি। কুর্দি অঞ্চল থেকে তেল আমদানি বন্ধ করতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহŸানও জানিয়েছে ইরাক সরকার।
ইরাক ছাড়াও আশপাশের কয়েকটি দেশে কুর্দিরা ছড়িয়ে আছে। তাই এ গণভোটকে ঘিরে প্রতিবেশী দেশগুলোর মধ্যে উৎকণ্ঠা তৈরি হয়েছে। তুরস্কও প্রতিবেশী দেশগুলোর একটি। দেশটির প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোয়ান বলেছেন, ইরাক সীমান্তে তুর্কি সেনারা অবস্থান করছে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে প্রস্তুত রয়েছে। একই সঙ্গে তিনি হুমকি দিয়ে বলেছেন, তুর্কি সেনারা তেলের পাইপলাইন বন্ধ করে অবরোধ জারি করতে পারে।
কমার্স ব্যাংকের এক গবেষণা নোটে বলা হয়েছে, কুর্দিস্তানের পাইপলাইন বন্ধের এ নিষেধাজ্ঞা বাস্তাবায়িত হলে প্রতিদিন বাজারে পাঁচ লাখ ব্যারেল তেল কম সরবরাহ হবে।
ইতোমধ্যে ওপেক সদস্যদেশ, রাশিয়া ও আরও কয়েকটি দেশ জ্বালানি তেলের দর বাড়াতে চলতি বছরের শুরুর দিকে এক চুক্তির আওতায় প্রতিদিন ১৮ লাখ ব্যারেল তেল কম উত্তোলন করছে। এর ফলে গত তিন মাসে তেলের দাম বেড়েছে ১৫ শতাংশ।
গত সপ্তাহে ওপেকের বৈঠকে কয়েকটি দেশ বলেছে, উত্তোলন হ্রাসের কৌশলে বাজার ও তেলের দামে প্রত্যাশিত প্রভাব পড়ছে।