Print Date & Time : 17 June 2025 Tuesday 5:19 am

দুর্গম গ্রামে ত্রাণের জন্য হাহাকার

শেয়ার বিজ ডেস্ক: বন্যাকবলিত এলাকার মানুষ এখন বাঁচার জন্য লড়ছে। কেউ অভুক্ত, কারোর জীবন বাঁচানোর সংগ্রাম আধা পেট খেয়ে। ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে যাওয়ায় অনেকে স্থানীয় প্রশাসনের চালু করা আশ্রয়কেন্দ্রে ঠাঁই নিয়েও পাচ্ছে না খাবার। বন্যার পানিতে ভেসে গেছে গবাদি পশু। সরকারের পাশাপাশি বন্যাদুর্গত এলাকায় বানভাসি মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ ও বিভিন্ন সংগঠন। তবে দুর্গত এলাকায় সেসব ত্রাণ তেমন যাচ্ছে না। সড়কের দু’পাশেই বিতরণ হচ্ছে বেশি। ফলে দুর্গম গ্রামে ত্রাণের জন্য হাহাকার করছে মানুষ। খাদ্য, সুপেয় পানি আর চিকিৎসার সামগ্রী দ্রুত পৌঁছানো না গেলে এসব এলাকার মানুষ আরও বিপর্যয়ে পড়ার শঙ্কা রয়েছে।

এদিকে বন্যায় নতুন করে কোনো এলাকা প্লাবিত হওয়ার আশঙ্কা নেই বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. কামরুল হাসান। রোববার দুপুরে সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে কামরুল হাসান এ তথ্য জানান। সচিব কামরুল হাসান বলেন, গত ২৪ ঘণ্টায় কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও ফেনী জেলার ভারতীয় সীমান্তবর্তী অঞ্চল এবং ত্রিপুরার অভ্যন্তরীণ অববাহিকায় উল্লেখযোগ্য বৃষ্টি হয়নি। এ সময় উজানের নদ-নদীর পানি হ্রাস অব্যাহত আছে। ফলে মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, ফেনী, কুমিল্লা ও চট্টগ্রাম জেলার নিম্নাঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি অব্যাহত আছে।

বন্যার সার্বিক অবস্থা তুলে ধরে দুর্যোগ সচিব বলেন, বন্যায় দেশের ১১ জেলার ১০ লাখ ৪৭ হাজার ২৯ পরিবার পানিবন্দি। আর বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় ৫২ লাখ মানুষ। সচিব জানান, ১১টি জেলার ৭৩টি উপজেলার ৫৪৫টি ইউনিয়ন-পৌরসভা বন্যায় প্লাবিত ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বন্যায় ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, নিখোঁজ রয়েছেন ২ জন। পানিবন্দি ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৩ হাজার ৬৫৪টি আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এসব আশ্রয়কেন্দ্রে ৪ লাখ ১৫ হাজার ২৭৩ জনকে আশ্রয় দেয়া হয়েছে। এ ছাড়া ২২ হাজার ২৯৮টি গবাদি পশুও সেখানে রাখা হয়েছে। ১১ জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের চিকিৎসাসেবা দেয়ার জন্য ৭৪৮টি মেডিকেল টিম চালু রয়েছে বলেও জানান তিনি।

এদিকে অনেক স্থানে বিদ্যুৎ উপকেন্দ্রে পানি ওঠায় ও বৈদ্যুতিক খুঁটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। ফলে বন্যাকবলিত বিভিন্ন এলাকায় বর্তমানে বিদ্যুৎহীন রয়েছেন প্রায় পৌনে আট লাখ মানুষ। তবে গত শনিবার (২৪ আগস্ট) পর্যন্ত এ সংখ্যা ছিল ৯ লাখের কাছাকাছি। পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় একদিনের মধ্যেই দুই লাখ গ্রাহক পুনরায় বিদ্যুৎ সংযোগের আওতায় এসেছেন। গতকাল রোববার এক বার্তায় এ তথ্য জানিয়েছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়। প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
কুমিল্লা: স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যার কবলে কুমিল্লা। জেলার ১৭টি উপজেলার মধ্যে ১৪টি উপজেলাই বানের পানিতে নিমজ্জিত। পানিবন্দি লাখো মানুষ। এসব উপজেলার মধ্যে সারাদেশ থেকে ত্রাণ ও উদ্ধার কর্মীরা দাউদকান্দি, বুড়িচং, ব্রাহ্মণপাড়া এলাকায় বেশি প্রবেশ করছেন। ত্রাণ পাচ্ছেন না পানিবন্দি নাঙ্গলকোট, লাকসামের কিছু এলাকা ও মনোহরগঞ্জ উপজেলার লাখ লাখ পানিবন্দি মানুষ। রোববার সকালে এমন অভিযোগ করেছেন সেসব উপজেলার বানভাসি মানুষ। তাদের অভিযোগ প্রচার-প্রচারণা কম থাকায় ব্যক্তি ও সংগঠন কেন্দ্রীক ত্রাণ ও উদ্ধার কাজ করা বাইরের স্বেচ্ছাসেবকরা একদম আসছেন না।
উপজেলা তিনটির মধ্যে নাঙ্গলকোট ও মনোহরগঞ্জ উপজেলা একেবারেই নোয়াখালীর পাশে। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে যারাই ত্রাণ সহায়তা নিয়ে কুমিল্লায় আসছেন, তাদের সবাই কাছাকাছি অঞ্চল বুড়িচং বা আশপাশের উপজেলাগুলোয় প্রবেশ করছেন। মহাসড়ক থেকে দূরের উপজেলা হওয়ায় সেখানের বানভাসিদের কাছে যাচ্ছেন না কেউ।

স্থানীয়দের অভিযোগ, সংবাদমাধ্যম এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রচার প্রচারণা কম থাকায় ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন এসব এলাকার মানুষ। গোমতী নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে প্রবেশ করার খবরে বুড়িচং উপজেলার প্লাবনের খবর বেশি প্রচার হওয়ায় সারাদেশ থেকে দলে দলে নৌকা ও ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে প্রবেশ করছেন সেখানেই। কিন্তু ডাকাতিয়া নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে প্লাবিত হয়েছে জেলার দক্ষিণের তিন উপজেলা। এসব এলাকায় অন্তত আড়াই লাখ মানুষ পানিবন্দি আছেন। সরকারি ত্রাণ সেসব মানুষদের জন্য খুবই অপ্রতুল বলে জানিয়েছেন সেসব এলাকার বানভাসিরা।

জাহাঙ্গীর আলম নামের নাঙ্গলকোট উপজেলার এক বানভাসি বলেন, আমাদের নাঙ্গলকোট দুর্গম এলাকা হওয়ায় এখানে কোনো সাংবাদিকও আসেন না। আমরা যে পানিতে তলিয়ে আছি, আমাদের খবরগুলো প্রচার করেন না। আমাদের এদিকে শুকনো খাবার, বিশুদ্ধ পানির খুব প্রয়োজন। সরকারি সহায়তা আমাদের জন্য যথেষ্ট নয়। তারেক আহমেদ নামের আরও এক বানভাসি বলেন, নাঙ্গলকোটে শুধু পানি আর পানি। অনেক অসুস্থ মানুষ, বৃদ্ধ মানুষ, গর্ভবতী নারীও আটকে আছে তাদের উদ্ধার করা খুব দরকার। পাশাপাশি ত্রাণ সহায়তাও। দেশের মানুষদের এদিকটার প্রতি একটু মনোযোগ দেয়ারও অনুরোধ করব।

খন্দকার ইসমাঈল নামের মনোহরগঞ্জ উপজেলার এক বানভাসি বলেন, মনোহরগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের মানুষ খুবই কষ্ট পাচ্ছে। পানিতে আটকা অনেক মানুষ। তাদের উদ্ধার করতে নৌকা ও স্পিডবোট দরকার।
নাঙ্গলকোট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সুরাইয়া আক্তার লাকী বলেন, নাঙ্গলকোটে ত্রাণ সরবরাহে কিছুটা সংকট আছে আমরা সেটা স্বীকার করছি। এ উপজেলার কিছু জায়গায় একেবারেই পৌঁছানো যাচ্ছে না। তবে আমরা চেষ্টা করছি স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে তাদের কাছে ত্রাণ সহায়তা দেওয়া। বর্তমানে নাঙ্গলকোটে উদ্ধারের মতো পরিস্থিতি শুধু একটি জায়গায় আছে। সেখানে নৌকা ও স্পিডবোট পাঠিয়ে সে এলাকার লোকদের উদ্ধার করা হবে।

মনোহরগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও) উজালা রানী চাকমা বলেন, এখানে বন্যা পরিস্থিতি অবনতির দিকে। আজকে পানি কিছুটা বেড়েছে। মনোহরগঞ্জ উপজেলার অনেক দুর্গম এলাকা রয়েছে যেগুলোয় নৌকা ছাড়া যাওয়া একেবারেই অসম্ভব। আমাদের কাছে নৌকার প্রচুর সংকট রয়েছে। বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনকে পাঠিয়ে সেসব এলাকায় ত্রাণ সহায়তা পাঠানো হচ্ছে। আমরা চেষ্টা করছি যেন একটা মানুষও অভুক্ত না থাকে। লক্ষ্মীপুর: টানা ভারী বর্ষণে লক্ষ্মীপুরের সর্বত্র জলাবদ্ধতায় পানিবন্দি হয়ে পড়েন প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ। এর মধ্যে পানি কমতেও শুরু করেছিল জেলা শহরসহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ইউনিয়নগুলোয়। কিন্তু শুক্রবার থেকে নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালীসহ খালসহ বিভিন্নভাবে ঢুকছে লক্ষ্মীপুরে। এতে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার কয়েকটি ওয়ার্ড ও পূর্বাঞ্চলের ইউনিয়নগুলোর অধিকাংশ এলাকার মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। শনিবার বিকালে থেকে বন্যার পানির চাপ বেড়ে গেছে। নতুন করে আরও কয়েকটি গ্রাম প্লাবিত হচ্ছে।

পানিবন্দি এলাকা ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, লক্ষ্মীপুরের ১টি পৌরসভা ও ৪৫টি ইউনিয়ন প্রায় সাড়ে ৬ লাখ মানুষ পানিবন্দি। এতদিন বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে মানুষের ঘরবাড়ি ডুবে ছিল। গত দুদিন ধরে নোয়াখালীর বন্যার পানি রহমতখালী খাল হয়ে লক্ষ্মীপুরে ঢুকে পড়ছে। এতে সদর উপজেলার পূর্বাঞ্চলের চন্দ্রগঞ্জ, চরশাহী, দিঘলী, মান্দারী, বাঙ্গাখাঁ, উত্তর জয়পুর ইউনিয়নসহ বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে। কোথাও কোথাও প্রায় ৪ ফুট পানিতে ডুবে আছে জনপদ। রামগতি ও কমলনগর উপজেলার চরকাদিরা-হাজীগঞ্জ বেড়ির পশ্চিম পাশে ভুলুয়া নদীতে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়ে প্রায় ২৫ দিন ধরে পানিতে ডুবে আছে বিস্তীর্ণ জনপদ। রামগতি-কমলনগর ও নোয়াখালীর আন্ডারচর ও চরমটুয়া গ্রামের ৩ লক্ষাধিক মানুষ এতে দুর্ভোগ পোহাচ্ছে। জলাবদ্ধতার এ পানি কোথাও সরছে না। শনিবার দিনব্যাপী লক্ষ্মীপুরের আকাশে সূর্যের হাসি থাকলেও মানুষের চেহারায় ছিল বিষাদে চিহ্ন।

সন্ধ্যায় জেলা প্রশাসন সূত্র জানিয়েছে, ভারী বর্ষণ ও জোয়ারের কারণে এখন পর্যন্ত লক্ষ্মীপুর জেলায় ৬ লাখ ৫৭ হাজার মানুষ পানিবন্দি। ইতোমধ্যে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ৩৯৫ ম্যাট্রিক টন চাল ও ১০ লাখ টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। লক্ষ্মীপুরে পানিবন্দি মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য স্থায়ী ও অস্থায়ী ১৮৯টি সাইক্লোন শেল্টার প্রস্তুত করা হয়। এর মধ্যে কয়েকটি সাইক্লোন শেল্টারে মানুষজন আশ্রয় নিয়েছে। সবাইকে শুকনো খাবার বিতরণ করা হচ্ছে। লক্ষ্মীপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) জেপি দেওয়ান বলেন, নোয়াখালীর পানির চাপ লক্ষ্মীপুরে আসছে। এতে কিছু পানি বাড়ছে। তবে বৃষ্টি না থাকায় রায়পুর ও রামগঞ্জে পানি কমছে। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগামী দুদিনের মধ্যে পানি নেমে যাওয়ার আশা করা হচ্ছে।

নোয়াখালী: নতুন করে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় নোয়াখালীর সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরও অবনতি হয়েছে। গতকাল শনিবার দিনে বৃষ্টি না হওয়ায় কিছু এলাকার বন্যার পানি কমতে শুরু করলেও রাতের বৃষ্টিতে সেটি আবার বেড়ে গেছে। গতকাল সকাল থেকেও জেলার সর্বত্র হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টি হয়। পাশাপাশি পাশের ফেনী জেলার বন্যার পানি ঢুকে নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ের সূত্রে জানা গেছে, স্মরণকালের ভয়াবহ এ বন্যায় এরই মধ্যে জেলার ২০ লাখেরও বেশি মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন। এ ছাড়া জেলার আটটি উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্রে ১ লাখ ৬২ হাজার মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন। এ ছাড়া বন্যার পানিতে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে জেলার বেগমগঞ্জ উপজেলায় গতকাল একজনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। এ নিয়ে জেলায় নিচের সংখ্যা চারজনে দাঁড়াল। জেলা আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রের পর্যবেক্ষক রফিকুল ইসলাম বলেন, গতকাল সকাল ৯টা থেকে কাল ৯টা পর্যন্ত জেলা শহর মাইজদীতে ৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টি রেকর্ড করা হয়েছে। এ ছাড়া আগামী ২৪ ঘণ্টায় জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। জেলা শহর মাইজদী, চাটখিল ও সেনবাগের অনেক এলাকা এখনও পানিতে নিমজ্জিত রয়েছে।

জেলার চাটখিল উপজেলার বন্যা পরিস্থিতিকে মারাত্মক বলে উল্লেখ করেছেন সেখানকার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী এহসান উদ্দিন। তিনি বলেন, গত রাতে বৃষ্টি ও উজানের পানি ধেয়ে আসার কারণে বন্যা পরিস্থিতির মারাত্মক অবনতি হয়েছে। এতে আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নেয়া লোকজনের সংখ্যা ২০ হাজারে ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে পরিস্থিতি দ্রুত অবনতি হচ্ছে। তাই চাটখিলে ত্রাণসহায়তা আরও বাড়ানো প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন তিনি। চাটখিলের পাশাপাশি জেলার সেনবাগের বন্যা পরিস্থিতিও এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে। সেনবাগ পৌরসভার অনেক এলাকায় এখনও হাঁটুসমান পানি রয়েছে। সেনবাগের সাবেক পৌর কাউন্সিলর খোরশেদ আলম বলেন, বন্যার পানিতে তিনি নিজেও এখন বাড়ি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন। ঘরের ভেতর হাঁটুপানি উঠে গেছে। এ কারণে তিনি নিজেও পরিবার-পরিজন নিয়ে প্রতিবেশীর দ্বিতল বাড়িতে উঠেছেন। বৃষ্টির পাশাপাশি ফেনীর দিক থেকে বন্যার পানি আসা অব্যাহত থাকায় সেনবাগের বন্যা পরিস্থিতি প্রতিদিনই অবনতি হচ্ছে।

নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতেও অনেক এলাকা এখনো পানির নিচে। গতকাল সকালে সরেজমিন দেখা গেছে, মাইজদীর জেলা প্রশাসকের কার্যালয় ও পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সামনের সড়কে প্রায় হাঁটুপানি। শহরের লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার বাসিন্দা বিবি খোদেজা বলেন, বাড়ির উঠানে এখনও কোমরসমান পানি। ঘরের ভেতর হাঁটুপানি। রান্নাঘরের চুলা ডুবে গেছে অনেক আগে। বাইরে থেকে কিনে আনা শুকনা খাবার এবং প্রতিবেশীদের দেয়া খাবার এই টিকে আছেন কোনোরকম। রাতের বৃষ্টিতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে।