দুর্গাপূজায় নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকুক

 

কয়েক দিন পরেই শুরু হতে যাচ্ছে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা। একে যথাযথভাবে উদ্যাপনের লক্ষ্যে সংশ্লিষ্টরা ইতোমধ্যে নিয়েছেন প্রস্তুতি। প্রতিমা নির্মাণ ও মন্দির-মণ্ডপ সাজানোর কাজও শেষের দিকে। এ ধর্মের অনুসারীদের কেনাকাটা ঘিরে ক্রেতাদের ভিড় বাড়ছে বিপণিবিতানে। দেশে উদ্যাপিত অন্যান্য উৎসব ঘিরে যেমন অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বেড়ে ওঠে, দুর্গোৎসবও তার ব্যতিক্রম নয়। হিন্দুধর্মের অনুসারীরা যাতে এ সময়ে নিরাপদে কেনাকাটা ও উৎসব উদ্যাপন করতে পারেন, সেটি নিশ্চিতে পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। এ লক্ষ্যে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিও কাম্য। অবশ্য সরকারের পক্ষ থেকে এরই মধ্যে মন্দির ও পূজামণ্ডপ ঘিরে একাধিক স্তরের নিরাপত্তা পদক্ষেপ নেওয়ার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। এর মধ্য দিয়ে সরকারের আন্তরিকতাই স্পষ্ট হয়। তবে পূজা উদ্যাপনে বিঘ্ন সৃষ্টিতে সাম্প্রতিককালে যেসব ঘটেছে, এক্ষেত্রে সেটিও বিবেচনায় রাখতে হবে। দেশে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টির জন্য যেসব গ্রুপ সক্রিয়, তারা যেন কোনো রকম সুযোগ নিতে না পারে, তা নিশ্চিত করার জন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে থাকতে হবে সদাতৎপর। আমরা মনে করি, প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পর্যাপ্ত সদস্য মাঠে থাকলে দুর্গোৎসবকে নির্বিঘ্ন করা যাবে। এ উৎসব ঘিরে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াতে যাতে ভোগান্তি না হয়, সে লক্ষ্যেও নিতে হবে পদক্ষেপ। উল্লেখ্য, দেশে এ উৎসবে সরকারি ছুটি মাত্র একদিন। এটি বাড়ানোর লক্ষ্যে দীর্ঘদিন ধরে দাবি জানিয়ে আসছেন সংশ্লিষ্টরা। এমন দাবির কিছু যৌক্তিকতাও রয়েছে। আমরা চাইব, সেসবের প্রতি দৃষ্টি আকৃষ্ট হবে নীতিনির্ধারকদের।

দুর্গাপূজা এবার এমন সময় উদ্যাপন করা হবে, যখন রোহিঙ্গা শরণার্থীদের আর্তনাদে ভারী হয়ে উঠছে দেশের দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলের বাতাস। তাদের মধ্যে কিছু হিন্দুও রয়েছে। এ উৎসব তারা যে আনন্দের সঙ্গে উদ্যাপন করতে পারবে না, তা সহজেই অনুমেয়। মিয়ানমার থেকে আগত শরণার্থীদের সাহায্যার্থে হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন অনেকেই। আমরা চাইব, দুর্গাপূজা উপলক্ষে হিন্দু শরণার্থীদের ঘিরে তাদের থাকুক বিশেষ প্রস্তুতি। এজন্য স্থানীয় প্রশাসনের প্রয়োজনীয় সহায়তাও কাম্য। মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নির্যাতনের প্রতিবাদে এবার প্রবারণা পূর্ণিমায় ফানুস না ওড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন দেশের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা। সন্দেহ নেই, এমন ঘোষণায় মানবিকতা হয়েছে সমুন্নত। প্রধান এ উৎসব ঘিরে হিন্দুধর্মের অনুসারীরাও এমন কিছু করতে পারেন, যার মাধ্যমে জয় হবে মানবতার। বস্তুত প্রায় প্রত্যেক ধর্মীয় উৎসবই আসে সম্প্রীতি ও সর্বজনীনতার বাণী নিয়ে। স্থিতিশীলতা বিদ্যমান থাকলেই কেবল এসবের যথাযথ প্রচার সম্ভব। এজন্য নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদারে সরকারকে সব রকম পদক্ষেপ নিতে বলব আমরা। হিন্দুধর্মের প্রত্যেক অনুসারী আসন্ন দুর্গাপূজা উদ্যাপন করুক নিরাপদে ও ভোগান্তিমুক্তভাবে সেটাই প্রত্যাশা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০