নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশবিরোধী চুক্তি আড়াল করতেই ছাগলকাণ্ড, বেনজীরকাণ্ড, আজিজকাণ্ড এবং হেলিকপ্টার দিয়ে অভিযান চালিয়ে আসামি গ্রেপ্তারকাণ্ড সামনে আনা হচ্ছ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, দেশে দুর্নীতির মহামারি, লুণ্ঠন আর কুৎসিত অনাচারের নানা রংবেরঙের কাহিনি এখন মানুষের মুখে-মুখে। আর এসব অপকর্মে জড়িতরা প্রায় সবাই ক্ষমতাসীনদের ঘনিষ্ঠ। এসব ঘটনা ফাঁস হওয়ায় সরকারের মন্ত্রী ও এমপিরা বেসামাল হয়ে পড়েছেন। ভারসাম্যহীন কথাবার্তা বলছেন।
গতকাল শুক্রবার বিকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। তিনি বলেন, ‘একজন ডিক্টেটরের হুকুমে দেশ চলছে বলেই জনগণ আজ নিজ দেশে পরবাসী হতে চলেছে। হাসিনা ভাইপার নিয়ে আজ গোটা জাতি ভীতি। তবে জনগণ চূড়ান্ত বাধা টপকিয়ে বাংলাদেশকে কারও আশ্রিত রাজ্য বানাতে দেবে না।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেছেন যারা ভারতবিরোধিতার ইস্যু খুঁজছেন, তারা আবারও ভুল পথে যাচ্ছেন। তার কথায় ধরে নিতে হবে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে কেউ রাস্তা নিয়ে যাবে সেটার বিরোধিতা করলে সেটিও ভুল পথ হবে। এ ধরনের কথা কেবলমাত্র নতজানু, দেশদ্রোহীদের মুখেই সাজে।’
তিনি বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রী ও এমপিরা একদিকে বলছেন দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রচার ষড়যন্ত্রের অংশ, আবার অন্যদিকে বলছেন অভিযোগ সত্য। এ কথার কী অর্থ হতে পারে তা আমার জানা নেই। অভিযোগ সত্য হলে দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে প্রচার ষড়যন্ত্রের অংশ হবে কেন? এরা বিভ্রান্তিতে ভুগছেন, কারণ এ দখলদার আওয়ামী সরকারের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারাই ছিল ডামি সরকারকে টিকিয়ে রাখার বিশ্বস্ত সৈনিক। অবৈধ একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠিত করতে এসব কর্মকর্তাই ভোটারদের নতজানু রাখতে রীতিমতো ব্লাড-স্পোর্ট বা রক্ত খেলায় মেতেছিল। এরা জনগণকে নতজানু রাখতে যথেচ্ছাচার রাষ্ট্রশক্তিকে ব্যবহার করেছে। এরাই ডেলিবারেট কিলিং করেছে, নিয়ন্ত্রণহীন হত্যাকাণ্ডের জন্য নিজ বাহিনীর সদস্যদের কেন সক্রিয় হচ্ছে না সেই জন্য ভর্ৎসনা করেছে। গণতন্ত্রকামী মানুষের বিরুদ্ধে উগ্রতা এবং বন্দুকের ভয় দেখিয়ে নীরব রাখার চেষ্টা করেছে। সে জন্যই মন্ত্রী-এমপিরা তালগোল পাকিয়ে স্ববিরোধী বক্তব্য রাখছেন।’
বিএনপির শনিবারের সমাবেশ সফল করার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের প্রতীক, ‘গণতন্ত্রের মা’ স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার এক নিরবচ্ছিন্ন অঙ্গীকারবদ্ধ নেত্রী দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবিতে শনিবার নয়াপল্টনে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দুপুরে ২টা থেকে সমাবেশের কার্যক্রম শুরু হবে।
এরই মধ্যে আমরা সমাবেশের জন্য পুলিশ কমিশনারের দপ্তরে চিঠি পাঠিয়েছি। বিএনপির একটি প্রতিনিধি দলও পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে। সমাবেশ সফল করার জন্য বিএনপি জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসকে সমন্বয়ক করে পর্যায়ক্রমে নানা প্রস্তুতিমূলক সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। এরই মধ্যে সমাবেশ সফল করতে সব প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি, আগামীকাল একটি ঐতিহাসিক সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে। দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার মুক্তির দাবিতে ঢাকাবাসীসহ দলের সর্বস্তরের নেতাকর্মীদের যথাসময়ে সমাবেশে উপস্থিত থাকার জন্য আহ্বান জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দীন চৌধুরী এ্যানি, সৈয়দ এমরান সালেহ প্রিন্স, সাংগঠনিক সম্পাদক কাজী সাইদুল আলম বাবুল, প্রচার সম্পাদক সুলতান সালাউদ্দিন টুকু, সহ-সম্পাদক আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।