দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে বিটিসিএল এমডিকে দুদকে জিজ্ঞাসাবাদ

নিজস্ব প্রতিবেদক: বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেডের (বিটিসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক রফিকুল মতিনকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। উন্নয়ন কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ খতিয়ে দেখতে সোমবার সকাল ৯টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। অভিযোগের সঙ্গে সম্পৃক্ততা পাওয়া গেলে পর্যায়ক্রমে অন্য কর্মকর্তাদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে বলে জানিয়েছে দুদক সূত্র।

দুদকের ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘ডিজিটাল কানেকটিভিটি শক্তিশালীকরণে সুইচিং ও ট্রান্সমিশন নেটওয়ার্ক উন্নয়ন (এসটিএনপি)’ শীর্ষক প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি একনেকে অনুমোদন পায়। ব্যয় ধরা হয় ১৫৫ কোটি ৩৯ লাখ টাকা। একই বছরের ১০ জুন দরপত্র দলিল ও দাপ্তরিক প্রাক্কলিত ব্যয় প্রস্তুতের জন্য কমিটি গঠন করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নে ওই বছরের ১২ ডিসেম্বর আন্তর্জাতিক দরপত্র আহ্বান করা হয়। ২০২০ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি পাঁচটি প্রতিষ্ঠান দরপত্র জমা দেয়। সাত সদ্যস্যের দরপত্র মূল্যায়ন কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে এক্স-ফারকে একমাত্র যোগ্য ও সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে ঘোষণা করা হয়। তবে পুনঃদরপত্র আহ্বানকে কেন্দ্র করে কমিটির সদস্যদের মধ্যে মতভেদ সৃষ্টি হয়। কমিটিতে থাকা বিটিসিএলসহ সরকারি কর্মকর্তারা পুনঃদরপত্র আহ্বানের সুপারিশ করেন।

অভিযোগ রয়েছে, মূল্যায়ন প্রতিবেদনের বেশ কয়েকটি পৃষ্ঠা নম্বর হাতে কেটে অতিরিক্ত দুই পাতা সংযোজন করেন তারা। কাটছাঁটের বিষয়টি গোপন করতে বোর্ড সভায় মূল্যায়ন প্রতিবেদন ছাড়া শুধু কার্যপত্র উপস্থাপন করা হয়। সভায় বহিঃসদস্যরা দরপত্র বাতিলের বিপক্ষে ও বিটিসিএলসহ সরকারি কর্মকর্তারা বাতিলের পক্ষে মত দেন। পরের বোর্ড সভায় দরপত্র

বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এসব ক্ষেত্রে ক্রয় আইন, বিধি ও দরপত্র দলিলের শর্ত লঙ্ঘিত হয়েছে। এরপর দরপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিল করে একমাত্র যোগ্য প্রতিষ্ঠানটি। অন্যদিকে আপিল নিষ্পত্তির আগেই গত বছরের নভেম্বরে পুনঃদরপত্র আহ্বান করে বিটিসিএল। পুনঃদরপত্রের ভিত্তিতে জিটিইকে কার্যাদেশ দেয়ার সুপারিশ করা হয়। তবে পরবর্তী সময়ে সেটিও বাতিল করে বিটিসিএল কর্তৃপক্ষ।

দুদক সূত্র জানিয়েছে, অভিযোগের বিষয়ে এমডির বক্তব্য জানতে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। অন্য কর্মকর্তাদের সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেলে তাদেরও পর্যায়ক্রমে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। দরপত্র প্রক্রিয়ায় কোনো অনিয়ম হয়েছে কি না, সেটি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

এসটিএনপি শীর্ষক প্রকল্পের ২০২২-২৩ আর্থিক সালের বার্ষিক কর্ম ও ক্রয় পরিকল্পনা-সংক্রান্ত ২০২২ সালের ১৯ জুনের এক চিঠি থেকে জানা যায়, এটির পরিচালক তৌফিকুল ইসলাম। প্রকল্পের কাজ ২০২৩ সালের ৪ এপ্রিলে সমাপ্ত হওয়ার সময়সীমা নির্ধারণ করা রয়েছে। প্রকল্পটির কার্যালয়ের ঠিকানা রাজধানীর বনানীর কাড়াইল এলাকার মহাখালী উপগ্রহ ভূ-কেন্দ্র।

এসটিএনপি শীর্ষক প্রকল্পে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগটির অনুসন্ধান করছেন দুদকের উপপরিচালক (ডিডি) নারগিস সুলতানা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০