Print Date & Time : 25 June 2025 Wednesday 3:50 pm

দুর্নীতির অভিযোগ থেকে রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের অব্যাহতি

নিজস্ব প্রতিবেদক: এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) অর্থায়নে ১০টি ইঞ্জিন কিনছে রেলওয়ে। ২০১৫ সালের নভেম্বরে প্রকল্পটি অনুমোদন করে জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক)। তবে শুরুতেই অভিযোগ উঠে বাজার দরের চেয়ে বাড়তি দামে কেনা হচ্ছে ইঞ্জিনগুলো। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। যদিও রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্টদের এ অভিযোগ থেকে সম্প্রতি অব্যাহতি দিয়েছে সংস্থাটি।

তথ্যমতে, ২০১৫ সালে ১০ নভেম্বর একনেক সভায় রেলওয়ের দুটি প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। এর মধ্যে এক হাজার ৩৭৪ কোটি টাকার ‘মিটারগেজ এবং ব্রডগেজ প্যাসেঞ্জার ক্যারেজ সংগ্রহ’ প্রকল্পের আওতায় ২০০টি মিটারগেজ এবং ৫০টি ব্রডগেজ কোচ কেনা হবে। পাশাপাশি কোচগুলো ধুয়ে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য দুটি ট্রেন ওয়াশিং প্ল্যান্ট এ প্রকল্পের আওতায় কেনা হবে।

এদিকে ৭৩৪ কোটি টাকার বাংলাদেশ রেলওয়ের জন্য ‘লোকোমোটিভ, রিলিফ ক্রেন এবং লোকোমোটিভ সিমুলেটর সংগ্রহ’ নামে অপর একটি প্রকল্পের আওতায় ১০টি মিটার গেজ ইঞ্জিন, ৪টি অ্যাকসিডেন্ট রিলিফ ক্রেন ও একটি লোকোমোটিভ সিমুলেটর কেনা হবে। এক্ষেত্রে শুল্ক ও ভ্যাট ছাড়া প্রতিটি ইঞ্জিনের দাম ধরা হয়েছে ৩০ কোটি টাকা। অর্থাৎ ১০টি ইঞ্জিন কেনায় ব্যয় হবে ৩০০ কোটি টাকা।

জানা গেছে, জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থার (জাইকা) ঋণে ২০১২ সালে ১১টি মিটারগেজ ইঞ্জিন কেনা হয়। প্রতিটির দাম পড়ে ভ্যাট ছাড়া ২৭ কোটি ৩২ লাখ টাকা। আর ২০১১ সালে কোরিয়ার ঋণে কেনা ৯টি ইঞ্জিনের গড় দাম ছিল ভ্যাট ছাড়া ২৪ কোটি ৬০ লাখ টাকা। মূল্যস্ফীতি ও আন্তর্জাতিক বাজারদর বিবেচনায় নতুন ইঞ্জিনের দাম ভ্যাট ও শুল্ক ছাড়া ৩০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।

যদিও বাস্তব অবস্থা ভিন্ন মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তারা বলছেন, বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দায় বিভিন্ন ধরনের শিল্পপণ্য ও মূলধনী যন্ত্রাংশের দাম কমছে। এ অবস্থায় রেলের ইঞ্জিনের দামও নি¤œমুখী হওয়ার কথা। কিন্তু বাস্তবে এগুলো বাজার দরের চেয়ে বেশি দামে কেনা হচ্ছে। গত বছর এ সংক্রান্ত চুক্তি সই করা হয়। পরে এ বিষয়ে দুদকে অভিযোগ করেন একটি সূত্র।

এতে বলা হয়, অতি মূল্যায়িত দরে কার্যাদেশ প্রদান করে বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালকসহ সংশ্লিষ্ট অন্যরা সরকারের দুই থেকে তিন কোটি ডলার (১৬০ থেকে ২৪০ কোটি টাকা) ক্ষতিসাধন করেছেন। অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করে দুদক। যদিও সংস্থাটি সংশ্লিষ্ট সবাইকে এ অভিযোগ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে।

গত ১১ মার্চ রেল মন্ত্রণালয়ে পাঠানো এক চিঠিতে অব্যাহতি দেওয়া হয়। পাশাপাশি ইঞ্জিন কেনার ক্ষেত্রে সরকারি অর্থ সাশ্রয় ও স্বচ্ছতা বজায় রাখার স্বার্থে এডিবির প্রকিউরমেন্ট গাইডলাইনস ও সরকারি ক্রয়-সংক্রান্ত আইন ও নীতিমালার (পিপিএ/পিপিআর) নির্দেশনাবলি যথাযথভাবে অনুসরণের জন্য রেল সচিবকে অনুরোধ করা হয়।

জানতে চাইলে রেল সচিব মো. মোফাজ্জেল হোসেন শেয়ার বিজকে বলেন, বিষয়টি নিয়ে দুদক তদন্ত করে দেখেছে বাস্তবে কোনো অনিয়ম হয়নি। এক্ষেত্রে পিপিআর ও এডিবির প্রকিউরমেন্ট গাইডলাইন যথাযথভাবে অনুসরণ করা হয়েছে। এছাড়া এডিবির সঙ্গে কয়েক দফা বৈঠকও হয়েছে। সব দেখে দুদক আশ্বস্ত হয়ে এ চিঠি দিয়েছে।