শেয়ার বিজ ডেস্ক: দুর্নীতি দমনে ব্যবস্থা নিতে সচিবদের প্রতি নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল সোমবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সচিব সভায় এই নির্দেশ দেন তিনি।
প্রশাসনের শীর্ষ কর্মকর্তা সচিবদের নিয়ে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে নির্ধারিত কোনো আলোচ্য বিষয় থাকে না। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। গতকালের বৈঠকে ১৫ থেকে ১৬ সচিব বক্তব্য দেন। তাদের মধ্যে ১১ জন সংশ্লিষ্ট বিষয়ের ওপর আলোচনা করেন। তার ভিত্তিতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দুর্নীতি দমনে ব্যবস্থা নেয়াসহ একগুচ্ছ নির্দেশ দেন। খবর: বাসস।
বিকালে সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বৈঠকের বিষয়বস্তু সাংবাদিকদের সামনে তুলে ধরেন মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রী ‘জিরো টলারেন্স’-এর কথা বলেছেন। তিনি বলেছেন, দুর্নীতি দমনের দায়িত্ব শুধু দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নয়। দুর্নীতি নিরসন ও প্রতিরোধের দায়িত্ব প্রতিটি মন্ত্রণালয়েরও। তাই যেখানে যেখানে ‘সার্ভিস পয়েন্ট’ রয়েছে, সেখানে নজরদারি বা ভিন্নতর কৌশল অবলম্বন করে যে প্রক্রিয়া নেয়া দরকার, তা নিয়ে দুর্নীতি দমনকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
এছাড়া সরকারি প্রকল্প নেয়ার ক্ষেত্রে খুবই সতর্কতা ও বাছাইয়ের কথা বলেছেন বলে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘যে প্রকল্পগুলো জনগণের কল্যাণে ব্যবহƒত হবে, জনগণ উপকার পাবে, সেদিকে তিনি মনোযোগ দিতে বলেছেন। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, তার মূল লক্ষ্য হলো জনমানুষের অবস্থার উন্নতি। এরকম নয় যে মানুষকে দেখানো। জনমানুষের কল্যাণ হচ্ছে কি না, তাদের ভাগ্য পরিবর্তন হচ্ছে কি নাÑএটি তিনি জিজ্ঞাসা করবেন, জানতে চাইবেন যে কীভাবে এটি জনগণকে বেনিফিট দেবে, সেভাবে যেন প্রকল্পগুলো বাছাই করি। চলমান যে প্রকল্পগুলো আছে, সেগুলো দ্রুত শেষ করার নির্দেশনা দিয়েছেন।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, প্রকল্পের মেয়াদ ও ব্যয় যাতে অহেতুক না বাড়ে, সেজন্য আগে থেকেই পূর্ণাঙ্গ প্ল্যান করে প্রকল্প নিতে হবে। তিনি একটি ব্যাপারে উৎসাহ দিয়েছেনÑপ্ল্যানিং কমিশন একটি নতুন সফটওয়্যার তৈরি করেছে, সেটির পাইলটিং চলছে এখন। পাইলটিং শেষ করে দ্রুত যাতে এই সফটওয়্যারের আওতায় প্রকল্প নেয়া হয়, সে বিষয় তিনি বলেছেন। এটা হলে ভালো হবে।’
নতুন পাঠ্যক্রমে কোনো ত্রুটি-বিচ্যুতি থাকলে সে ত্রুটির বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘নতুন যে শিক্ষাক্রম নেয়া হয়েছে, তা প্রচলিত শিক্ষাক্রম নয়। তা থেকে ভিন্ন একটা। এই বাস্তবতা আমাদের মানতে হবে। আমরা যারা বিশেষজ্ঞ তারা প্রচলিত পাঠ্যক্রমে শিক্ষা পেয়েছি। নতুন যে পাঠ্যক্রম রচনা করতে হবে, সে ব্যাপারে প্রশিক্ষিত লোক খুব বেশি আছে, তা কিন্তু নয়। যারা আছেন, তাদের কাজ হচ্ছেÑপ্রধানমন্ত্রী বলেছেন, যদি কোনো ভুলভ্রান্তি, যদি কোনো তথ্যগত বা কোনো একটা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়, তাহলে দ্রুত যেন ব্যবস্থা নেয়া হয়। তিনি (প্রধানমন্ত্রী) বলেছেন, কোনো বিলম্ব হবে না। কোনো গ্যাপ তৈরি হলে যেন যথাযথভাবে পর্যালোচনা করে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হয়। এ ব্যাপারে সবাইকে সজাগ থাকতে বলেছেন।’
সভায় সরকারের ৭৮ সচিব ও সিনিয়র সচিব অংশ নেন।