নিজস্ব প্রতিবেদক: জাতীয় সংসদে গতকাল বৃহস্পতিবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব পেশ করায় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (সিএমসিসিআই) প্রতিক্রয়ায় বলেছে, বিশ্ব অর্থনীতির টালমাটাল অবস্থার মধ্যেও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় নেতৃত্ব ও যুগোপযোগী সিদ্ধান্তের কারণে দেশের অর্থনীতি এখনও সমুন্নত রয়েছে। তার গৃহীত বিভিন্ন প্রকল্পের সঠিক বাস্তবায়ন হলে দেশের অর্থনীতি আরও সমৃদ্ধি লাভ করবে।
সিএমসিসিআই বলছে, এনবিআরকে রাজস্ব আহরণের জন্য ৪ লাখ ৮০ হাজার কোটি টাকার যে লক্ষ্যমাত্রা দেয়া হয়েছে তার যথাযথ তদারকি এবং সর্বক্ষেত্রে দুর্নীতি প্রতিরোধ করা না গেলে এ লক্ষ্যমাত্রা অর্জন কঠিন হবে। বিদেশি ঋণের সুদ পরিশোধ বাবদ বরাদ্দ বৃদ্ধি এবং ভর্তুকি ও প্রণোদনা বাবদ বরাদ্দ কমানোর ফলে জনগণের জীবনযাত্রার খরচ বৃদ্ধি পেতে পারে। নিয়মিত কর প্রদানকৃত ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর করের বোঝা না বাড়িয়ে নতুন করদাতা সৃষ্টির ওপর গুরুত্ব প্রদানসহ পরিবহন ও যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি এবং শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বৃদ্ধির জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানিয়েছে সিএমসিসিআই। করদাতাদের হয়রানি কমাতে আয়কর রিটার্ন অ্যাসেসমেন্টের বিধান বাতিল করায় ব্যক্তি ও কোম্পানি দুই শ্রেণির করদাতাই কিছুটা স্বস্তি পেতে পারে বলে মন্তব্য করেছে সংগঠনটি।
বাজেটে মূল্যস্ফীতি ৬ দশমিক ৫ শতাংশে আনার প্রত্যাশাকে সিএমসিসিআই সাধুবাদ জানিয়েছে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রা রক্ষায় দেশের আমদানিনির্ভরতা কমিয়ে আনতে দেশীয় শিল্প উৎপাদন প্রবৃদ্ধির প্রয়াসে বিশেষ করে টেক্সটাইল সেক্টরে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের আহ্বান জানিয়েছে। পাশাপাশি রপ্তানি শিল্প এবং দেশের যাবতীয় মেশিনারিজ-প্লান্টস আমদানিতে সব প্রতিবন্ধকতার অবসান করে শুধু প্যাকিং লিস্ট মতে, মেশিনারি চালান ছাড় দিয়ে তার যাবতীয় কার্যক্রম প্রতিস্থাপন ইত্যাদির তদারকি ভ্যাট বিভাগের ওপর ন্যস্ত করা প্রয়োজন বলে মন্তব্য করেছে। এছাড়া কিছু পরামর্শ দিয়েছে মেট্রোপলিটন চেম্বার। এর মধ্যে রয়েছেÑযেহেতু কোনো মেশিনারিজ বা প্ল্যান্ট আমদানি হলে তা দেশের যেকোনো স্থানে প্রতিস্থাপন হবে এবং দেশের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। জিডিপি বাড়বে, কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাবে। মেশিনারিজ বা শিল্পায়নে সরকার বহমুখী রাজস্ব আয়ের সুযোগ পাবে। মেশিনারি-প্লান্ট এবং অগ্নিনির্বাপক যন্ত্রপাতি আমদানির বহু রকম শর্ত প্রত্যাহার করে সকল প্রকার মেশিনারি-প্লান্ট আমদানিতে বিদ্যমান হার ১ শতাংশ শুল্ক আদায়ে মেশিনারি আমদানি উš§ুক্ত করা উচিত।
বড় বড় প্রকল্প বাস্তবায়নে বরাদ্দকৃত অর্থের সঠিক তদারকি এবং জবাবদিহির আওতায় আনলে ব্যয় বৃদ্ধি ও সময়ক্ষেপণ হ্রাস পাবে। এ ক্ষেত্রে প্রকল্প পরিচালকের বিশেষ নজরদারি প্রয়োজন। উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার জবাবদিহির জন্য তিন মাস অন্তর প্রকল্প অগ্রগতির রিপোর্ট প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে পাঠানোসহ মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া প্রয়োজন। জনস্বাস্থ্য সুরক্ষায় তামাকজাত পণ্যের ব্যবহার কমানোর লক্ষ্যে সম্পূরক শুল্ক মূল্য বৃদ্ধি সময়োপযোগী বলে মত দিয়েছে সিএমসিসিআই।