প্রতিনিধি, যশোর: দুর্নীতির মামলায় নড়াইল পৌরসভার সাবেক মেয়র বর্তমানে জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সোহরাব হোসেন বিশ্বাসসহ ১১ আসামিকে পাঁচ বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড প্রদান করেছেন আদালত। একই সঙ্গে প্রত্যেককে ১০ হাজার টাকা করে অর্থদ- এবং অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদ- প্রদান করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) যশোরের স্পেশাল জজ (জেলা ও দায়রা জজ) আদালতের বিচারক মোহাম্মদ সামছুল হক এই রায় প্রদান করেন।
সাজাপ্রাপ্ত অপর আসামিরা হলেন-নড়াইল পৌরসভার তৎকালীন কাউন্সিলর খন্দকার আল মুনসুর বিল্লাহ, আহম্মদ আলী খান ও তেলায়েত হোসেন, নড়াইল সদর উপজেলার ভওয়াখালী গ্রামের মৃত আব্দুল হামিদ বিশ্বাসের ছেলে রূপগঞ্জ সাধারণ হাটের তৎকালীন ইজারাদার রকিবুল ইসলাম, হাটবাড়িয়া গ্রামের মৃত দুলাল চন্দ্র কু-ুর ছেলে তৎকালীন ইজারাদার রাধে কুণ্ডু মহিষখোলা গ্রামের খন্দকার নওশের আলীর ছেলে ইজাজুল হাসান বাবু, দুর্গাপুর গ্রামের নুরুল ইসলাম খানের ছেলে নড়াইল বাস টার্মিনালের তৎকালীর ইজারাদার জিল্লুর রহমান, মহিষখোলা গ্রামের আবু সাঈদ মিয়ার ছেলে তৎকালীন ইজাদার এইচ এম সোহেল রানা পলাশ, নড়াইল পৌরসভার সাবেক সচিব বর্তমানে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা পৌরসভার সচিব শফিকুল আলম ও নড়াইল পৌরসভার সাবেক সহকারী প্রকৌশলী বর্তমানে লোহাগড়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী ওয়াজিহুর রহমান।
দুদক যশোরের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, রায় ঘোষণার পর সাজাপ্রাপ্ত সোহরাব হোসেনসহ উপস্থিত আট আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া সাজাপ্রাপ্ত তিন আসামি ইজারাদার রকিবুল ইসলাম, ইজাজুল হাসান বাবু ও জিল্লুর রহমান পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আদেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক।
মামলার বিবরণীতে জানা যায়, হাট ইজারা নীতিমালা, ২০০২-এর ৩(দ) অনুচ্ছেদে বর্ণিত নিয়ম ভঙ্গ করে নড়াইল পৌরসভার রূপগঞ্জ সাধারণ হাট, নড়াইল শহর বাজার ও নড়াইল টার্মিনাল ইজারা দিয়ে বাংলা ১৪২২ সালে ৭ লাখ ৮১ হাজার ২০ টাকা এবং ১৪১১ সালে চার লাখ ৪১ হাজার ৮০ টাকা পৌরসভায় জমা না দিয়ে আসামিরা আÍসাৎ করেন। টাকার মোট পরিমাণ ১২ লাখ ২২ হাজার ৮০ টাকা। এ ঘটনায় দুর্নীতি দমন কমিশন সমন্বিত জেলা কার্যালয় যশোরের তৎকালীন সহকারী পরিচালক মো. ওয়াজেদ আলী গাজী ২০০৮ সালের ৭ আগস্ট উল্লিখিত ১১ জনকে আসামি করে নড়াইল সদর থানায় একটি মামলা করেন। পরে মো. ওয়াজেদ আলী গাজী মামলাটি তদন্ত করে ২০০৯ সালের ৪ মার্চ আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। এই মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় আদালতের বিচারক প্রত্যেককে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদ- এবং ১০ হাজার টাকা অর্থদ- অনাদায়ে আরও ছয় মাসের সশ্রম কারাদ-াদেশ দেন।
অ্যাডভোকেট মো. সিরাজুল ইসলাম জানান, এছাড়া আদালত ক্রিমিনাল ল অ্যামেন্ডমেন্ট আইনে আসামিদেরকে ১২ লাখ দুই হাজার ২৮০ টাকা জরিমানা করেন। আসামিদের মধ্যে জিল্লুর রহমানকে এক লাখ ৮৬ হাজার ৬০ টাকা, এইচ এম সোহেল রানা পলাশকে ৩ লাখ ৫২ হাজার ১২০ টাকা, রকিবুল ইসলামকে এক লাখ ৮৫ হাজার টাকা ও ইজাজুল হাসান বাবুকে এক লাখ ৪৮ হাজার ৯০০ টাকা জরিমানা করা হয়।