Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 2:29 am

দুর্বল নেটওয়ার্কে ভোগান্তিতে হাবিপ্রবি শিক্ষার্থীরা

মো. রুবাইয়াদ ইসলাম, হাবিপ্রবি (দিনাজপুর): দিনাজপুরের হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (হাবিপ্রবি) নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক ও উচ্চমানের ইন্টারনেট সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। ক্যাম্পাসের হলগুলোর ভেতরে একদিকে যেমন মোবাইল নেটওয়ার্ক পাওয়া যায় না; অন্যদিকে নেই ফ্রি ওয়াইফাই সুবিধা। তাই হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের মোবাইল নেটওয়ার্ক ও ওয়াইফাই নিয়ে সব সময় ভোগান্তি পোহাতে হয়।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের তাজউদ্দীন আহমেদ হল, ডরমিটরি-২ হল ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলে মোবাইল নেটওয়ার্ক সমস্যা চরমে উঠছে। হলের সামনে মোবাইলে দু-একটি নেটওয়ার্ক টাওয়ারের দেখা মিললেও হলে প্রবেশের সঙ্গে সঙ্গে সে সিগন্যাল অদৃশ্য হয়ে যায় বলে অভিযোগ করেছেন শিক্ষার্থীরা। শুধু তা-ই নয়, বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি এবং ৯টি আবাসিক হলের দু-একটিতে ওয়াই-ফাই (ইন্টারনেট) সেবা থাকলেও তা টিভি রুম বা রিডিং রুমের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। নামমাত্র এই ইন্টারনেটের সঙ্গে বাড়তি দুর্ভোগ দুর্বল ফ্রিকোয়েন্সি। ফলে ই-লাইব্রেরিসহ বিভিন্ন অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম থেকে পিছিয়ে পড়ছেন বলে মত শিক্ষার্থীদের।

সাধারণ শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেছেন নিরবচ্ছিন্ন নেটওয়ার্ক না থাকায় তারা ঠিকমতো মোবাইল ফোনে একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন না। অধিকাংশ সময়ই তাদের মোবাইল ফোনের নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকে। ফলে গুরুত্বপূর্ণ কাজে বা ফোনে কথা বলতে হলের বাইরে আসতে হয়। বাড়ি থেকে মা-বাবা কল দিয়ে না পেলে দুশ্চিন্তা করেন বলে জানান তারা।

এছাড়া নানা সময়ে পুরো ক্যাম্পাসকে ওয়াই-ফাইয়ের আওতায় আনার কথা থাকলেও তা শুধু বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। ধীরগতি, দুর্বল ফ্রিকোয়েন্সি ও যে কয়েকটি পয়েন্টে ওয়াই-ফাই সুবিধা পাওয়া যায়, সেখানেও সময়ের সীমাবদ্ধতা রয়েছে বলে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। শিক্ষকদের দেয়া বিভিন্ন অ্যাসাইনমেন্ট ও অনলাইনে বিভিন্ন বই কিংবা উপকরণ খোঁজার জন্য শিক্ষার্থীরা নিজেদের খরচে ইন্টারনেট ব্যবহার করছেন। ফলে শিক্ষার্থীদের পড়তে হচ্ছে বাড়তি অর্থের চাপে। আবার সেই ওয়াই-ফাই সংযোগ সেবা নিয়েও রয়েছে বিস্তর অভিযোগ।

নতুন ছাত্রী হলের আবাসিক শিক্ষার্থী আফিয়া আনজুম  জানান, শিক্ষা কার্যক্রমের জন্য আমরা বাড়ি থেকে অনেক দূরে অবস্থান করছি। আমাদের মা-বাবা সবসময় আমাদের খোঁজখবর রাখার চেষ্টা করেন। যখন তারা আমাদের বারবার ফোন করে ফোন বন্ধ পান, তখন তারা দুশ্চিন্তা করেন। অনেক সময় জরুরি প্রয়োজনে ফোন করে আমাদের পান না। এমন পরিস্থিতি আমাদের জন্য কষ্টের।

ডরমিটরি-২ হলের আবাসিক শিক্ষার্থী মো. মুশফিকুর রহমান বলেন, দীর্ঘদিনের এই নেটওয়ার্ক সমস্যা তাদের বেশ ভোগান্তিতে রেখেছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো জায়গায় এমন সংকট কাম্য নয়। আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এই ব্যাপারটি লাঘবে কাজ করবেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের আইটি সেলের কো-অর্ডিনেটর সহযোগী অধ্যাপক মেহেদী হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনসহ (বিটিআরসি) চারটি অপারেটরকে চিঠি পাঠানো হয়। তারা এসে হলগুলো থেকে সিগন্যাল মেজারমেন্ট করে নিয়ে চলে যায়। তবে কবে নাগাদ সমস্যা সমাধান হবে, তা জানেন না কেউ।

তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পাসের প্রতিটি পয়েন্টে যেন ওয়াই-ফাই যায়, ভিসি স্যার আমাদের সে বিষয়ে কাজ করতে নির্দেশ দিয়েছিলেন। আমরা প্রাথমিক স্ট্রাকচার দেখিয়ে দিয়েছি। পুরো ক্যাম্পাস ওয়াই-ফাইয়ের আওতায় আনার ক্ষেত্রে ফান্ডিং একটি বড় বিষয়, যা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব অর্থায়নে অনেকটা কষ্টকর বলেও মন্তব্য করেন তিনি।