দুর্বল ব্যাংকের উন্নয়নে দ্রুত ব্যবস্থা নিন

ব্যাংক খাতের অনিয়ম, অব্যবস্থাপনা কমবেশি সবসময় ছিল। কিন্তু গত কয়েক বছরে লুটপাট ও দুর্নীতির কারণে এ খাতের প্রতি সাধারণ মানুষের অনাস্থা তলানিতে পৌঁছেছে। কাগজে-কলমে নৈতিকতা ও সুশাসন প্রতিষ্ঠায় উদ্যোগ নেয়া হলেও কিছু উদ্যোক্তার স্বেচ্ছাচারিতার কারণে ব্যাংক খাতের প্রতি আস্থা কোন পর্যায়ে এসেছে, তা গতকালের শেয়ার বিজ পড়ে কিছুটা অনুধবান করা যায়। গতকাল ‘৯ ব্যাংকের চেক ও পে-অর্ডার গ্রহণ করবে না চট্টগ্রাম বন্দর’ শীর্ষক প্রতিবেদনে জানা গেছে, বন্দরের সেবা নিতে কোনো প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ইসলামী ব্যাংক, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক, পদ্মা ব্যাংক, ন্যাশনাল ব্যাংক ও আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের চেক বা পে-অর্ডার দিলে সেগুলো গ্রহণ না করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশনা দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ (চবক)।

শিশুদের মধ্যে নৈতিকতা বোধ জাগ্রত করতে সরকার ঘোষিত জাতীয় শুদ্ধাচার কৌশলের অংশ হিসেবে ‘ছড়ায় ছড়ায় শুদ্ধাচার’ গ্রন্থ বই প্রকাশ করেছে ব্যাক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ ব্যাংক। ছড়াগুলোয় দেশের আর্থিক খাতের অনিয়ম ও দুর্নীতি তুলে ধরে এগুলোর প্রতি ঘৃণা প্রদর্শনে শিশু-কিশোরদের উজ্জীবিত করা হয়েছে। বইটির প্রকাশনা অনুষ্ঠানে তৎকালীন গভর্নর আতিউর রহমান বলেছেন, ‘শুদ্ধাচার মানেই সুশাসন। আর সুশাসন মানেই স্বচ্ছতা। আমরা ব্যাংকগুলোকে সেই আলোর নিচে নিয়ে আসার চেষ্টা করছি।’ সরকারি খাতের ব্যাংকগুলো এখনও ‘অন্ধকারে’ রয়ে গেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, এদের এখনও সম্পূূর্ণ ডিজিটাইজড করা সম্ভব হয়নি। বইটির প্রাক্-কথনে তিনি বলেছেন, ‘… সুশাসনের জন্য দরকার স্বচ্ছতা, জবাবদিহি ও অংশীদারত্ব। সমাজের সব ক্ষেত্রে এগুলো প্রতিষ্ঠা করা প্রয়োজন। আর সবচেয়ে জরুরি হলো শিশুদের মধ্যে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠা করা।’

দুঃখজনক হলো শিশুদের মধ্যে শুদ্ধাচার প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেয়া হলেও ব্যাংক খাতে স্বচ্ছতা, জবাবদিহির সংস্কৃতি চালু করা যায়নি। ব্যাংক খাতের সমস্যা দূর করতে এর আগে সরকার ‘প্রম্পট কারেক্টিভ অ্যাকশন’ বা পিসিএ গ্রহণ করেছে। সেখানে দুর্বল ব্যাংকগুলোকে চারটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে। কথা ছিল, সেই ব্যাংকগুলোকে সুযোগ দেয়া হবে দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে। যদি তারা তা না পারে, তখন তাদের বিলোপ করা, অধিগ্রহণ করা বা অন্য কোনো ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করার উদ্যোগ নেয়া যেতে পারে। কিন্তু সেটা ২০২৫ সাল থেকে বাস্তবায়নের কথা বলা হয়েছে। অথচ সুশাসন প্রতিষ্ঠায় এক মুহূর্তও বিলম্ব করা সমীচীন নয়। যখন সব অনিয়ম চিহ্নিত তখন সময়ক্ষেপণ করার কোনো যুক্তি নেই। নিয়ন্ত্রক সংস্থা কার্যকর ব্যবস্থা না নিয়ে ভালো কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গে দুর্বল ও খারাপ ব্যাংক একীভূত করার উদ্যোগ নেয়। যদিও শেষ পর্যন্ত তা হয়নি। অর্থনীতিবিদরা বলেন, নীতির ক্ষেত্রে দূরদর্শিতা না থাকায়ই ব্যাংক একত্রীকরণের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। সে যা হোক, শূন্যসহনশীলতায় দুর্বল ব্যাংক পরিচালনায় সংশ্লিষ্টদের যোগসাজশ ও ত্রুটি যাচাইপূর্বক কঠোর ব্যবস্থা নেয়া উচিত।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০