জাহিদ হোসেন: ভৌগোলিক ও ভূতাত্ত্বিক অবস্থানগত কারণে বাংলাদেশ একটি প্রাকৃতিক দুর্যোগপ্রবণ দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে দুর্যোগের প্রকোপ যেমন বাড়ছে, তেমনি বাড়ছে এর ক্ষতির মাত্রা ও ক্ষতির পরিধি এবং একই সঙ্গে প্রতিনিয়ত বাড়ছে জনগোষ্ঠীর ঝুঁকি। বিগত দশকে দুর্যোগের সংখ্যা ও তীব্রতা বেড়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের গতিপথ পরিবর্তন ও ঘটনের সংখ্যা, তীব্রতা বৃদ্ধিতে দুর্যোগ প্রস্তুতি কার্যক্রম এবং পরিকল্পনা ও বাস্তবায়ন নিয়ে নতুন করে ভাবতে হচ্ছে। বাংলাদেশে ১৭ কোটির বেশি মানুষের বাস, এটি বিশ্বের সবচেয়ে বেশি ঘনবসতির দেশ হিসেবে পরিচিত। এর মধ্যে তিন কোটি মানুষ সমুদ্র উপকূলে বসবাস করে, যাদের প্রতিনিয়ত ঘূর্ণিঝড়, জলোচ্ছ্বাস, লবণাক্ততাসহ অন্যান্য ঝুঁকি মোকাবিলা করতে হয়। প্রায় চার কোটি মানুষ বন্যার দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে থাকে। সেইসঙ্গে খরা, লবণাক্ততা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি প্রভৃতি ধীরগতির দুর্যোগ ক্রমেই বাড়ছে। এতৎসত্ত্বেও বিগত দুই দশকে বাংলাদেশ প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষের মৃত্যুর সংখ্যা সাফল্যজনকভাবে কমিয়ে আনতে সক্ষম হয়েছে। ১৯৭০ সালের ঘূর্ণিঝড়ে যেখানে তিন লাখ মানুষ মারা গিয়েছিল, ২০০৭ সালের সুপার সাইক্লোন সিডরে সেই মৃতের সংখ্যা মাত্র তিন হাজারে নেমে এসেছে। দুর্যোগে ক্ষয়ক্ষতির মাত্রা কমিয়ে আনার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের এ সফলতা এরই মধ্যে বিশ্বব্যাপী প্রশংসিত হয়েছে।
দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রমে ব্যাপক সাফল্য থাকলেও আমরা প্রতিনিয়ত নতুন দুর্যোগের হুমকি ও চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছি। এ রকম একটা পরিবর্তনশীল ও অনিশ্চিত পরিস্থিতিতে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রম বাস্তবায়ন করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান ও উন্নয়ন কার্যক্রম সফলভাবে এগিয়ে নিতে হলে প্রয়োজন বিজ্ঞানভিত্তিক তথ্য, উপাত্ত ও যথাযথ প্রযুক্তি। ঠিক একইভাবে এসব তথ্য, উপাত্ত ও প্রযুক্তি সব ক্ষেত্রের, সব পর্যায়ের ব্যবহারকারী ও উপকারভোগীদের উপযোগী করে ব্যবহার করার জন্য প্রয়োজন জ্ঞান ও দক্ষতা। বিজ্ঞানের বিভিন্ন আবিষ্কার ও বিজ্ঞানভিত্তিক বিভিন্ন গবেষণায় প্রাপ্ত ফলাফল এবং তথ্য ও উপাত্ত ব্যবহারের ফলে সাম্প্রতিক সময়ে দুর্যোগঝুঁকি হ্রাসে উল্লেখযোগ্য সফলতা এসেছে।
দুর্যোগঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রমকে আরও বিজ্ঞানভিত্তিক, সময়োপযোগী ও সব পর্যায়ের জন্য ব্যবহারোপযোগী করে তোলা বর্তমান সরকারের অন্যতম উদ্দেশ্য। ১৯৭২ সালে প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ওয়ারলেসের মাধ্যমে ঘূর্ণিঝড়ের আগাম বার্তা প্রদানের ব্যবস্থা সংযোজন করেছেন। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহার অব্যাহত রেছেন বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকারও। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান, উদ্যোগ, সম্মেলন ও প্রক্রিয়া যেমন দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাসের ক্ষেত্রে ইউএনআউএসডিআরের দুর্যোগঝুঁকি প্রশমনে বৈশ্বিক সম্মেলনের সাম্প্রতিক যে ঘোষণা অর্থাৎ সেনডাই ফ্রেমওয়ার্ক ফর ডিজাস্টার রিস্ক রিডাকশন ২০১৫-২০৩০ দলিলেও দুর্যোগঝুঁকি হ্রাসে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর সমধিক গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। দুর্যোগঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রম বাস্তবায়নের বিভিন্ন ক্ষেত্রে এবং নানা পর্যায়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহারের কিছু প্রাতিষ্ঠানিক দিক, কার্যক্রম ও উল্লেখযোগ্য সফল উদ্যোগ উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা হলো।
আধুনিক ও যুগোপযোগীভাবে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন মডেলের ব্যবহার করে দুর্যোগঝুঁকি ও জলবায়ু পরিবর্তন-বিষয়ক বিভিন্ন গবেষণা ও সমীক্ষা কাজ সম্পন্ন করা হয়েছে। যেমন তাপমাত্রা, বৃষ্টিপাত, আর্দ্রতা ও বায়ুর গতিবেগ-বিষয়ক গবেষণা কাজে আঞ্চলিক জলবায়ু মডেল ও প্রেসিস ব্যবহার করা হয়েছে। এই গবেষণালব্ধ ফলাফল জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন ও দুর্যোগঝুঁকি হ্রাস কর্মসূচি প্রণয়নে সহায়ক ভূমিকা রাখছে। যেমনÑইনানডেশন ম্যাপ, রিস্ক ম্যাপ ফর স্টর্ম সার্জ বাংলাদেশের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চল প্রায় প্রতিবছর ঘূর্ণিঝড়জনিত জলোচ্ছ্বাসে প্লাবিত হয়, ফলে জীবন-জীবিকা এবং অবকাঠামোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। এই সমস্যা সমাধানের জন্য দেশের দক্ষিণ উপকূলীয় অঞ্চলের জলোচ্ছ্বাসজনিত বন্যার স্থানভিত্তিক গভীরতার তথ্যনির্ভর ইনানডেশন ম্যাপ এবং রিস্ক ম্যাপ ফর স্টর্ম সার্জ তৈরি করা হয়েছে। এ মানচিত্র থেকে এসব এলাকার ঘরবাড়ির ভিটা কতটা উঁচু করতে হবে, আশ্রয়কেন্দ্র, রাস্তা বা অন্যান্য অবকাঠামো কতটা উঁচু করতে হবে, তার ধারণা পাওয়া যাবে।
জলবায়ু পরিবর্তন বিশেষত খরার জন্য গ্লোবাল সার্কুলেশন মডেল (জিসিএম) ও এমএজিআইসিসি বা সেনজেন সফটওয়্যার ব্যবহার করে খরার গতি-প্রকৃতির চিত্র নির্ণয় করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ২০১৫ সাল থেকে ২০৬৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশের খরার চিত্র সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। হাইড্রোডায়নামিকস/ফ্লুইড ডাইনামিকস-এমআইকেই ১১ ও জিবিএম বেসিন মডেল ব্যবহার করে বন্যা পূর্বাভাসে আগের তিন দিনের স্থানে লিড টাইম আরও দুই দিন বাড়িয়ে পাঁচ দিনে উন্নীত করা হয়েছে, যা এ অঞ্চলের সর্বোচ্চ লিড টাইম। বন্যা পূর্বাভাস স্থানীয় জনগোষ্ঠীর কাছে পৌঁছে দেয়ার জন্য সিরাজগঞ্জ ও গাইবান্ধায় আনসার ও ভিডিপি সদস্যদের দুর্যোগ স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে প্রশিক্ষণ দিয়ে প্রদান করে পাইলট কার্যক্রম শুরু হয়েছে। এছাড়া হাইড্রোডায়নামিকস/ফ্লুইড ডাইনামিকস মডেল ব্যবহারের মাধ্যমে নদীভাঙনের ভবিষ্যৎ চিত্র নির্ণয় করা হয়েছে, যা বিশ্লেষণ করে ভাঙনপ্রবণ এলাকা চিহ্নিত করার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদি পুনর্বাসন পরিকল্পনা গ্রহণ করা যায়। হাজুস সফটওয়্যার ব্যবহার করে ভূমিকম্পের বিপদাপন্নতা ঝুঁকির দৃশ্যকল্প তৈরি করা হয়েছে, যার ফলাফল নগর দুর্যোগঝুঁকি হ্রাস পরিকল্পনায় ব্যবহার করা হচ্ছে; যেমন: রিস্ক ওয়ান ভালনারেবিলিটিটি অ্যাটলাস।
অ্যাকটিভ ফল্ট মডেলিং ব্যবহার করে বাংলাদেশ ও এর আশেপাশে সক্রিয় ফল্ট লাইন চিহ্নিত করা হয়েছে, যার ওপর ভিত্তি করে দেশে প্রথমবারের মতো তিনটি বড় এবং ছয়টি ছোট শহরের জন্য ভূমিকম্প ঝুঁকি মানচিত্র তৈরি করা হয়েছে। কোন ফল্টলাইনে কী মাত্রার ভূমিকম্প হতে পারে, সে সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। পাশাপাশি প্রতিটি শহরের দুর্যোগ ঝুঁকিহ্রাসের জন্য শহরভিত্তিক কন্টিনজেন্সি প্ল্যান তৈরি করা হয়েছে। এছাড়া ভূমিধস, সাবসিডেন্স ও লিকুইফ্যাকশনের গতি-প্রকৃতি অনুধাবনে জিওসায়েন্সের ব্যবহার করা হচ্ছে।
জিওসায়েন্স ব্যবহার করে দেশে প্রথমবারের মতো ভূমিকম্পজনিত বিপদাপন্নতা এবং ঝুঁকি নিরূপণ করে ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট শহরে মাইক্রোনাইজেশন ম্যাপ তৈরি করা হয়েছে এবং আরও ছয়টি শহরে মাইক্রোনাইজেশন ম্যাপ তৈরির কাজ হাতে নেয়া হয়েছে। মাইক্রোনাইজেশন ম্যাপটি কন্টিনজেন্সি প্ল্যান ও বিল্ডিং কোড হাল-নাগাদ করার ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হচ্ছে। জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম অ্যান্ড রিমোট সেন্সিং প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন আপদ ও দুর্যোগের ঝুঁকি নিরূপণ করা হচ্ছে। এছাড়া জিআইএস পদ্ধতিতে বিভিন্ন আপদের ঝুঁকি, বিপদাপন্নতা মানচিত্র ও তথ্যসমৃদ্ধ ডিজিটাল অ্যাটলাস তৈরি করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ ও দুর্যোগের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাচ্ছে। জাপান অ্যারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সির (জেএইএ) কারিগরি ও এশিয়ান উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) আর্থিক সহযোগিতায় স্যাটেলাইট প্রযুক্তি (এসবিটিও) ও তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) ব্যবহার করে ‘বন্যা ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায়’ মনিটরিং ও পূর্বাভাস ব্যবস্থা উন্নয়নে বাংলাদেশ, ফিলিপাইন ও ভিয়েতনামে যুগপৎভাবে ‘অ্যাপ্লাইয়িং রিমোট সেন্সিং টেকনোলজি ইন রিভার বেসিন ম্যানেজমেন্ট’ শীর্ষক পাইলট প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে।
জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় কেন্দ্র (এনডিআরসিসি): দুর্যোগে তাৎক্ষণিকভাবে সাড়াদান এবং বিশেষত আগাম সতর্কসংকেত প্রচার-সংশ্লিষ্ট দুর্যোগ সাড়াদান কেন্দ্রগুলো, যথাÑবাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তর ও বন্যা পূর্বাভাস কেন্দ্র প্রভৃতির সঙ্গে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করার নিমিত্তে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে স্থাপিত কন্ট্রোল রুমকে পরিবর্তন করে জাতীয় দুর্যোগ সাড়াদান সমন্বয় কেন্দ্র (এনডিআরসিসি) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। কেন্দ্রটিতে প্রয়োজনীয় ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি ও টেলিফোন স্থাপন করে ভিডিও ওয়ার্কশপ অনুষ্ঠানের উপযোগী করা হয়েছে। কেন্দ্রটি সপ্তাহে সাত দিন ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা হয় এবং প্রতিদিন ‘দুর্যোগ-সংক্রান্ত দৈনিক প্রতিবেদন’ প্রকাশ করা হয়। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সার্বিক দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মসূচির সহায়তায় জাতীয় পর্যায়ে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা তথ্য কেন্দ্র (ডিএমআইসি) স্থাপন করা হয়েছে এবং ইতোমধ্যে ৪৮৫টি উপজেলায় ও সব জেলায় যথাক্রমে প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এবং জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন অফিসের সঙ্গে নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হয়েছে। মোবাইল ফোনভিত্তিক প্রযুক্তি, যথা ক্ষুদেবার্তা (এসএমএস) ও ইন্টার-অ্যাকটিভ ভয়েস রেসপন্স-ভিত্তিক (আইভিআর) দুর্যোগ সতর্কীকরণ পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। বর্তমানে যে কোনো মোবাইল ফোন থেকে ১০৯৪১ নম্বর ডায়াল করে দৈনন্দিন আবহাওয়া বার্তা ও সতর্কীকরণ বার্তা জানা যায়।
উপকূলীয় অঞ্চলে নির্মিত ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র-সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্যাদি ওয়েবসাইটভিত্তিক ডেটাবেইসে সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ ডেটাবেইসটিতে আশ্রয়কেন্দ্রগুলোর কাঠামোগত এবং আনুষাঙ্গিক তথ্য, যেমনÑভৌগোলিক অবস্থান (অক্ষাংশ/দ্রাঘিমাংশ), ব্যবহার উপযোগিতা, ধারণক্ষমতা প্রভৃতি সংরক্ষণ করা হয়েছে। এ ডেটাবেইজটির তথ্য ব্যবহার করে নতুন ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র নির্মাণের সঠিক স্থান নির্ধারণ করা, ঘূর্ণিঝড়ের সময় লোকজনকে আশ্রয়কেন্দ্রে আনার জন্য উপযুক্ত পথ নির্ধারণ করা এবং আশ্রয়কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনা ও মেরামতের প্রয়োজনীয়তা নিরূপণ করা যাবে।
দেশে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারে বিভিন্ন দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরে একটি ডিএনএ সেল (ড্যামেজ অ্যান্ড নিড অ্যাসেসমেন্ট-ডিএনএ সেল) প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এরই মধ্যে ডিএনএ সেলে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ও সফটওয়্যার স্থাপন ও সংযোজন করা হয়েছে। এই সেলের মাধ্যমে একটি ইন্টারনেটভিত্তিক ক্ষতি ও প্রয়োজন পরিমাপক অ্যাপ তৈরির কাজ চলমান রয়েছে, যার মাধ্যমে অনলাইনে দ্রুততার সাথে মাঠ পর্যায় থেকে দুর্যোগের ক্ষয়ক্ষতির তথ্য সরাসরি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের সার্ভারে সংরক্ষণ ও সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
দুর্যোগসহনশীল জাতি গঠনের উদ্দেশ্যে আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোয় দুর্যোগঝুঁকি হ্রাস ও জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন বিষয়ে আরও উন্নত শিক্ষা ও গবেষণা করার সুযোগ সৃষ্টি করা প্রয়োজন। দুর্যোগঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রমে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছু চ্যালেঞ্জও রয়েছে। এরমধ্যে সক্ষমতার অভাব, প্রাতিষ্ঠানিক ও অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতা, অপ্রতুল বিনিয়োগ এবং অবকাঠামোগত সীমাবদ্ধতা উল্লেখযোগ্য। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সবাই সমন্বিতভাবে কাজ করছে। দেশীয় উদ্যোগের পাশাপাশি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতার গুরুত্বপূর্ণ ভূ মিকা রয়েছে। আগামী দিনে দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস কার্যক্রম বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিনির্ভর করার প্রয়াসে সব চেষ্টা ও উদ্যোগ নিয়ে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে এবং একটি দুর্যোগ-সহনশীল ও সুখী-সমৃদ্ধ দেশ গড়ে তোলার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।
পিআইডি নিবন্ধ