দুষ্ট লোকদের আর সুযোগ দেওয়া হবে না: বিএসইসি চেয়ারম্যান

নিজস্ব প্রতিবেদক: বিএসইসিতে মন্দ লোকের আগমন কমে যাচ্ছে এবং এই লোকদের চিহ্নিত করতে পেরেছেন বলে দাবি করেছেন বিএসইসি চেয়ারম্যান শিবলি রুবাইয়াত-উল-ইসলাম। তাদের আর সুযোগ দেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান।

তিনি বলেন, আমরা দেখে দেখে কাজ করব। তবে কখনও একশোতে একশো কাজ করেত পারব না। সেটা ভুলে হোক আর জেনেই হোক। দুয়েকটা ভুল হতে পারে। ইচ্ছাকৃতভাবে যাতে কোনো অন্যায় করতে না পারে, সেটা আমরা খেয়াল রাখব। সে জন্য আমাদের আইটির প্রস্তুতি নিচ্ছি।

গতকাল রাজধানীর আগারগাঁওয়ে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সম্মেলন কক্ষে বিশ্ব-বিনিয়োগকারী সপ্তাহ উপলক্ষে ‘বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা: ব্যবসায় এবং তথ্য প্রকাশের ক্ষেত্রে কভিড-১৯-এর প্রভাব’ বিষয়ক ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আবু আহমেদ, পরামর্শদাতা হুসেইন সামাদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. মো. মিজানুর রহমান প্রমুখ।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, এটা ‘গ্যাম্বলিং মার্কেট’। ইকুইটি বেইজ মার্কেটের কারণে গ্যাম্বলিং মার্কেটে হয়ে গেছে। এই অবস্থা থেকে উত্তোলনে এফডিআরে বিকল্প হিসেবে বন্ড, মিউচুয়াল ফান্ড এবং সব ব্যাংকগুলোকে পারপিচুয়াল বন্ডের মাধ্যমে ক্যাপিটাল উত্তোলনে সুযোগ দিয়েছি।

তিনি বলেন, গ্র্যাজুয়ালি বন্ড মার্কেট ভালো হবে। ধর্মপ্রাণ মুসলিমদের জন্য সুকুফ বন্ড চালু করব। আগামী বছরের মাঝামাঝি সময়ে দুবাইসহ বিশ্বের অনেক দেশের সুকুফ বন্ড নিয়ে কাজ করব। আগামী ২ বছর পর আপনারা বিভিন্ন চিত্র দেখতে পারবেন।

ফেসবুকে আইপিও অনুমোদন প্রশ্ন তুলেছেন উল্লেখ করে বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, আমরা দেখেছি ২-৩ বছর আগে আইপিওতে আবেদন করেছেন। তাদের আবেদন জমা পড়ে আছে। তারা বারবার অ্যাকাউন্ট দিয়ে যাচ্ছে। আমরা যাদের অনুমোদন দেওয়া দরকার দিয়ে দেব। আগামী এক মাসের মধ্যে পুরোনো দরখাস্তগুলো শেষ হয়ে যাবে। ভালো ভালো কোম্পানি আনার জন্য কাজ চলছে।

‘ভালো পরিবেশ থাকলে, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতা থাকলে তখন খারাপ কোম্পানিগুলো নিরুৎসাহিত হবে। ভালো কোম্পানিগুলো আসবে। সরকারি দুটি কোম্পানি আসার পর্যায়ে রয়েছে। আমাদের সময়ে একটি ব্যাংকের আইপিওর আবেদন করেছে। এটিকে দ্রুত দিয়ে দেব। এখানে আইপিও পেতে আর দেরি করতে হবে।’

অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াত-উল-ইসলাম বলেন, একদিকে আমরা বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা দেব। অন্যদিকে দেশের ব্যবসার কথাও চিন্তা করতে হবে। তাদের জন্য ভালো ভালো কোম্পানির আইপিওর অনুমোদন দেব, উদ্যোক্তারা যাতে খুব সহজে অর্থ উত্তোলন করতে পারেন। তা না দিলে কোম্পানিগুলো বেশি সুদে ঋণ নিয়ে খেলাপি হয়ে পড়ে, রুগ্ণ হয়ে পড়ে; ফলে কোম্পানির উদ্যোক্তা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সব লোকের চাকরি অনিশ্চিত হয়ে পড়ে।

তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংকের সহযোগিতা পাচ্ছি। এনবিআরেরও সহযোগিতা পাচ্ছি। কিন্তু এনবিআরের আরেকটু সহযোগিতা চাচ্ছি। এনবিআরের মতোই অনান্য প্রতিষ্ঠানের যদি আরেকটু সহযোগিতা পাই, আমরা যদি কর রেয়াত সুবিধা দিয়ে বিদেশি কোম্পানিগুলোতে বাংলাদেশে আনতে পারি। দেশের অর্থনীতির চিত্র পাল্টে যাবে। সেটা নিয়ে কাজ করছি।

বিএসইসি চেয়ারম্যান বলেন, পুঁজিবাজার উন্নয়নের জন্য ভালো ভালো আইপিও আনা, ভালো ভালো বন্ড সারকুলেট করতে পারব। কভিডের কারণে যাদের সঞ্চয় কমেছে তাদের জন্য আয় বৃদ্ধির জন্য কাজ করছি। ইনভেস্টর বৃদ্ধির জন্য আগামী বছর যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, চীন এবং দুবাইসহ বিশ্বের বড় বড় দেশগুলোতে রোড শো করব।

তিনি বলেন, পুঁজিবাজারে কেউ একদিন শেয়ার বেশি বিক্রি করবে, কম কিনবেÑফলে কোনো দিন সূচক বাড়বে, কমবে। আমরা শেয়ার ব্যবসা করি না। এটা স্টক এক্সচেঞ্জের হয়। মানুষ যেদিন শেয়ার বিক্রি করে অর্থ ক্যাশ করে নেয় তখন পতন হয়। আবার যখন বিনিয়োগ করে কখন বেড়ে যায়। এটাতে তো আমাদের করার কিছু থাকে না। তারপও আমরা বিনিয়োগকারীদের আশ্বস্ত করতে চাই, জনগণের স্বার্থরক্ষাই আমাদের কাজ। আমরা নিরাপত্তা দেব। এখন থেকে আপনারা শুরু সেকেন্ডারি মার্কেটের দিকে তাকিয়ে থাকবেন না। অন্যান্য সেক্টরে বিনিয়োগ করবেন।

এখন আর ওইভাবে ফাঁকি দিয়ে পার পাওয়ার সুযোগ নেই। আমাদের নিজেরে কোনো এজেন্ডা নেই। একটি শক্তিশালী পুঁজিবাজারের জন্য কাজ করে যাচ্ছি বলেও জানান বিএসইসি চেয়ারম্যান।

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০