দৃশ্যমান কারসাজিতে শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা অনুসারে, সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংক বাজারে অর্থ সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এসব উদ্যোগ তখনই কাজে লাগবে, যখন সুশাসন নিশ্চিত হবে। অর্থ বা তারল্য সহায়তার উদ্যোগের পাশাপাশি বাজারে এ পর্যন্ত যতগুলো কারসাজি হয়েছে, তার মধ্যে দৃশ্যমান কারসাজিগুলোতে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়।  

মাহমুদ হোসেনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পুঁজিবাজার বিনিয়োগকারী ঐক্য পরিষদের সভাপতি একেএম মিজানুর রশীদ চৌধুরী, প্রাইম ব্যাংক লিমিটেডের ডিএমডি অ্যান্ড সিএফও হাবিবুর রহমান চৌধুরী, এফসিএ এবং ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরামের সাবেক প্রেসিডেন্ট সুলতান মাহমুদ।

একেএম মিজানুর রশীদ চৌধুরী বলেন, একটি দেশের অর্থনীতির উন্নয়নের দুটি দিক রয়েছে। একটি হচ্ছে মানি মার্কেট, অন্যটি ক্যাপিটাল মার্কেট। কিন্তু দুঃখের বিষয়, এ দুটি খাত থেকে অর্থ লুণ্ঠন হচ্ছে। এটি যদি নিয়ন্ত্রণ করা না যায়, তাহলে মানি ও ক্যাপিটাল মার্কেট ভালো করা যাবে না। তাই এখন সময় হয়েছে এদিকে কঠোরভাবে নজরদারির। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, ২০১০ সালের পর থেকে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাজার নিয়ে পরিকল্পনা, সমন্বয় ও নিয়ন্ত্রণসহ আরও যেসব বিষয় রয়েছে, সেগুলো সঠিকভাবে পরিপালন করছে না।

হাবিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, পুঁজিবাজার দীর্ঘদিন তলানিতে থাকার পর কদিন থেকে ইতিবাচক ধারায় দেখা যাচ্ছে। এখন সূচক চার হাজার ৭০০’র মধ্যে রয়েছে। আমরা যদি একটি টেকসই পুঁজিবাজার করতে চাই, সেক্ষেত্রে সর্বপ্রথম বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াতে হবে এবং তারল্য সংকট কমাতে হবে। আরেকটি বড় বিষয় হচ্ছে সুশাসন। তাই বাজারে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। বাজারে সুশাসনের ঘাটতি রয়েছে। বিনিয়োগকারীর আস্থা, তারল্য সংকট, সুশাসন প্রভৃতি বিষয় যদি ভালোভাবে সমন্বয় করা যায়, তাহলেই বাজার ভালো হবে। আর প্রণোদনা দিয়ে বাজার দীর্ঘস্থায়ীভাবে ভালো করা যাবে না।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজার কোনো বিচ্ছিন্ন বাজার নয়। এটি অর্থনীতির সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িত। পুঁজিবাজারের উন্নয়ন ছাড়া অর্থনীতির উন্নয়ন সম্ভব নয়। তাই পুঁজিবাজারের উন্নয়ন করতে হবে। সরকার এ বিষয়ে অনেক আন্তরিক। তবে যারা বাজার পরিচালনা করছেন, তাদের আরও দক্ষ হতে হবে। কারণ, এখানে দক্ষতা ও জবাবদিহির অনেক অভাব রয়েছে।

সুলতান মাহমুদ বলেন, বর্তমানে পুঁজিবাজার যে প্রেক্ষাপটে এসে দাঁড়িয়েছে, এর জন্য অনেকগুলো বিষয় দায়ী। বিশেষ করে বিএসইসি, ডিএসই বাজারের এ অবস্থার  দায় এড়াতে পারে না। কারণ, ২০১০ সালের পর যেসব কোম্পানি বাজারে এসেছে, তার সঙ্গে নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলো প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত। প্লেসমেন্ট শেয়ার নিয়ে অনেক বাণিজ্য হয়েছে। এখানে ব্যক্তিস্বার্থ ত্যাগ না করতে পারলে কখনও বাজার ভালো হবে না।

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন এবং সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকও বাজারে অর্থ সহায়তা দেওয়ার জন্য একটি  প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। কথা হচ্ছে, এসব বিষয় তখনই কাজে লাগবে যখন সুশাসন নিশ্চিত হবে। অর্থ বা তারল্য সহায়তার উদ্যোগের পাশাপাশি বাজারে এ পর্যন্ত যতগুলো কারসাজি হয়েছে, তার দৃশ্যমান কিছু বিষয়ে শাস্তি দিতে হবে।

শ্রুতিলিখন: শিপন আহমেদ

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০