এসএম রুবেল, কক্সবাজার: প্রায় দেড় যুগ ধরে বন্ধ রয়েছে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্সরে সেবা। এতে উপজেলার প্রায় সাড়ে ছয় লাখ মানুষ ভোগান্তি পোহাচ্ছেন। এখানকার মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে রয়েছে একটিমাত্র সরকারি হাসপাতাল। দ্বীপাঞ্চলে যোগাযোগ ক্ষেত্রে অনুন্নত থাকায় এখানে গড়ে ওঠেনি কোনো বেসরকারি হাসপাতাল। এ কারণে সাধারণ মানুষের একমাত্র আশ্রয়স্থল উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। এরকম একটি জনগুরুত্বপূর্ণ হাসপাতালে ব্যবস্থাপনার অভাবে নষ্ট হয়ে পড়ে আছে একমাত্র এক্সরে মেশিনটি। এটি ঠিক করতে কর্তৃপক্ষের ঘুম ভাঙেনি দীর্ঘ ১৭ বছরেও।
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, প্রতিদিন গড়ে আউটডোরে সেবা নেয়া রোগীর সংখ্যা ৩০০ থেকে ৪০০ জন, ইনডোরে ভর্তি রোগী ৩০-৪০ জন এবং জরুরি বিভাগে সেবা নেয়া রোগীর সংখ্যা প্রায় ২০০ জন। সব মিলিয়ে প্রতিদিন গড়ে ৬০০ থেকে ৭০০ রোগী স্বাস্থ্যসেবা নিতে আসেন। তাদের মধ্যে অনেকের এক্সরে করানোর প্রয়োজন পড়ে। কিন্তু অনন্যপায় হয়ে জেলা সদর কিংবা অন্য উপজেলায় গিয়ে প্রয়োজনীয় এক্সরে সেবা নিতে হয়। এতে দ্বীপ উপজেলার মানুষের অর্থ ও সময় উভয় বেশি খরচ করতে হয়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে মহেশখালী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মাহফুজুর রহমান বলেন, দীর্ঘ ১৬-১৭ বছর ধরে হাসপাতালে এক্সরে সেবা বন্ধ রয়েছে। জনবলের অভাবে এক্সরে মেশিনটিও নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। জনবল ও নতুন এক্সরে মেশিন চেয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে কয়েকবার চিঠি দেয়া হয়েছে।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, হাসপাতালের আশেপাশে বেসরকারিভাবে তিনটি ডায়াগনস্টিক সেন্টার গড়ে উঠেছে। সেই সেন্টারগুলোয় হাসপাতালে চাকরি করা ডাক্তার, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা শেয়ারহোল্ডার হিসেবে থাকায় সরকারিভাবে এক্সরে মেশিনটি চালু করার জন্য দেড় যুগ ধরে কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়া হয়নি এবং ভবিষ্যতেও চালু করার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ কতটা কার্যকর ভূমিকা রাখছে, তাও প্রশ্নবিদ্ধ।
সেবা নিতে আসা রোগীরা জানান, সরকারিভাবে এক্সরে সেবা বন্ধ থাকায় বাধ্য হয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলোয় এক্সরে করাতে হয়। এতে প্রতিটা এক্সরে বাবদ গুনতে হয় প্রায় চার-পাঁচশ টাকা। তারা হাসপাতালে দ্রুত এক্সরে সেবাটি চালু করে সাধারণ মানুষের সরকারি সেবাপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।