শেয়ার বিজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, দেশের অগ্রগতির অদম্য গতি কেউ থামাতে পারবে না, কারণ এ দেশ এখন বিশ্বে উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ হয়ে উঠেছে। এ মর্যাদা বজায় রেখে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে সবাইকে একযোগে কাজ করা আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশের এ অপ্রতিরোধ্য অগ্রযাত্রা কখনও কেউ কেউ থামিয়ে দিতে পারবে না, সেভাবেই বাংলাদেশকে সামনের দিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে।
গতকাল ডিফেন্স সার্ভিসেস কমান্ড অ্যান্ড স্টাফ কলেজের (ডিএসসিএসসি ‘ডিএসসিএসসি কোর্স ২০২১-২২’ এর গ্র্যাজুয়েশন প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মিরপুর সেনানিবাসের শেখ হাসিনা কমপ্লেক্সের এ অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হন। খবর: বাসস।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে আমরা উন্নত বাংলাদেশ গড়তে চাই, আর ২০৭১ সালে আমাদের স্বাধীনতার শতবর্ষ আমরা উদ্যাপন করব কাজেই আমাদের নবীন ট্রেনিংপ্রাপ্ত অফিসারদের কাছে আমার একটাই আবেদন থাকবে, ’৪১ সালের উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়ে তোলার সৈনিক হিসেবে কাজ করতে হবে। সবসময় মাথা উঁচু করে চলতে হবে এবং দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবাসতে হবে এবং দেশের জন্য নিবেদিত প্রাণ হতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, এখন আর বাংলাদেশকে কেউ অবহেলা করতে পারে না। বাংলাদেশ উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে বিশ্ব দরবারে মর্যাদা পেয়েছে। এ মর্যাদা ধরে রাখতে হবে।
প্রধানমন্ত্রী কভিড পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে সবাইকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার কথাও স্মরণ করিয়ে দেন। শেখ হাসিনা বলেন, আমি অনুরোধ জানাচ্ছি কভিডের আবার নতুন ধরন দেখা দিয়েছে। কাজেই সবাই স্বাস্থ্য সুরক্ষা মেনে চলবেন। নিজেকে ও নিজের পরিবারকে সুরক্ষিত রাখবেন। ডিএসসিএসসি কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল জুবায়ের সালেহীন অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন। এবারে প্রতিষ্ঠানটি থেকে ১৮টি দেশের ৪৭ জন বিদেশি কর্মকর্তা এবং বাংলাদেশ পুলিশের তিনজন কর্মকর্তাসহ মোট ২৫১ জন পিএসসি ডিগ্রি লাভ করেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা ‘ফোর্সেস গোল-২০৩০’ বাস্তবায়নের মাধ্যমে সেনা, নৌ ও বিমানবাহিনীর আধুনিকায়ন, সম্প্রসারণ ও উন্নয়ন করছি। ২০১৬ সালে ‘বাংলাদেশ পিস বিল্ডিং সেন্টার’ প্রতিষ্ঠা করেছি। প্রতিরক্ষানীতিকে যুগোপযোগী করে ‘জাতীয় প্রতিরক্ষানীতি, ২০১৮’ প্রণয়ন করেছি। অ্যারোস্পেস ও অ্যাভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছি এবং ’৯৬ সালে যখন সরকারে আসি তখনই ‘বিপসট’ প্রতিষ্ঠা করে দেই। পাশাপাশি সিএমএইচগুলোকে অত্যাধুনিক হাসপাতালে রূপান্তরিত করি এবং আরও অনেক মেডিকেল কলেজ তৈরি করে দেই।
তিনি বলেন, আমরা আমাদের এ নীতিমালার কারণে সমগ্র বিশ্বে আজ একটা সম্মানজনক অবস্থান সৃষ্টি করতে সমর্থ হয়েছি। বাংলাদেশ সবসময় বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাস করে এবং আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ঐক্য উন্নয়নে আমাদের দেশ অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পেরেছে। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বাংলাদেশ সবসময়ই বিপন্ন মানবতার ডাকে সাড়া দিয়েছে।
দেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার পাশাপাশি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা যে কোনো জাতীয় প্রয়োজনে সর্বোচ্চ ত্যাগ শিকারে প্রস্তুত থাকেন এবং সহযোগিতা করে থাকেন উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কভিডে তাদের সম্মুখযোদ্ধা হিসেবে বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার প্রসঙ্গও টেনে আনেন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, তারা জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে দক্ষতা ও নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে বিশ্ব দরবারে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল করেছেন। আমরা আবারও সর্বোচ্চ শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে গৌরবের স্থানটি ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছি। আন্তঃবাহিনী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ডিএসসিএসসির উন্নয়নে তার সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপ তুলে ধরে প্রতিষ্ঠানটি শিক্ষা-প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে উচ্চমানের ধারাবাহিকতা অব্যাহত রাখবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।