Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 11:48 am

দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রবাসীদের অবদান রয়েছে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশিদের গুরুত্বপূর্ণ অবদান রয়েছে। আমি তাদের অবদান আন্তরিক কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করি। আজ জাতীয় প্রবাসী দিবস। এ উপলক্ষে গতকাল দেয়া এক বাণীতে তিনি বলেন, জাতীয় উন্নয়নে প্রবাসী বাংলাদেশিদের অবদানের স্বীকৃতির পাশাপাশি তাদের দেশের উন্নয়ন কার্যক্রমে আরও সম্পৃক্ত করার লক্ষ্য নিয়ে এ বছর থেকে ৩০ ডিসেম্বরকে ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ ঘোষণা করা হয়েছে। খবর: বাসস।

‘জাতীয় প্রবাসী দিবস, ২০২৩’-এর প্রতিপাদ্য ‘প্রবাসীদের কল্যাণ-মর্যাদা আমাদের অঙ্গীকার; স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ায় তারাও সমান অংশীদার’ অত্যন্ত সময়োপযোগী হয়েছে বলে আমি মনে করি। ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ উদ্যাপনের এ শুভদিনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী ও কর্মরত সকল প্রবাসী বাংলাদেশি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।’”

প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে মহান মুক্তিযুদ্ধে প্রবাসী বাংলাদেশিরা অনন্যসাধারণ ভূমিকা রেখেছেন। মুক্তিযুদ্ধ-পরবর্তীকালে স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি অর্জন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন, বৈদেশিক সহায়তা এবং কূটনৈতিক কার্যক্রম জোরদার করতে প্রবাসীদের সক্রিয় সহযোগিতা ও অবদান অনস্বীকার্য। বর্তমানে বিশ্বের ১৭০টিরও বেশি দেশে বিপুলসংখ্যক অনাবাসী বাংলাদেশি এবং শ্রম অভিবাসনের আওতায় বাংলাদেশি কর্মী অবস্থান করছেন।

তিনি বলেন, ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত প্রবাসী ভাইবোনেরা প্রতিবছরে গড়ে প্রায় ১৭ দশমিক ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। ২০২২-২৩ অর্থবছরে এর পরিমাণ ছিল ২১ দশমিক ৬১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। বৈধ পথে রেমিট্যান্স প্রেরণে প্রণোদনা প্রদানের পাশাপাশি আওয়ামী লীগ সরকার সেবা প্রদান ডিজিটাল ও সহজতর করেছে। সুষ্ঠু, নিরাপদ, নিয়মিত ও দায়িত্বশীল শ্রম অভিবাসন নিশ্চিত করার পাশাপাশি প্রবাসীদের অধিকার ও কল্যাণ নিশ্চিত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়। এ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন ওয়েজ আনার্স কল্যাণ বোর্ড প্রবাসী বাংলাদেশি এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের জন্য বিভিন্ন সেবামূলক কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। ২০০৯ সাল থেকে সেপ্টেম্বর ২০২৩ পর্যন্ত প্রবাসীদের জন্য বিভিন্ন কল্যাণমূলক কার্যক্রমে ব্যয় করা হয়েছে তিন হাজার ৯০০ কোটি টাকা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সরকার প্রবাসী ও প্রবাস ফেরত কর্মীদের সার্বিক কল্যাণে ২০১০ সালে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেছে। প্রবাসীদের সন্তানদের জন্য সংযুক্ত আরব আমিরাত, গ্রিস, বাহরাইন ও সৌদি আরবে বাংলাদেশের পাঠ্যক্রম অনুযায়ী স্কুল পরিচালনায় ভবন নির্মাণসহ বিভিন্ন খাতে সহযোগিতা প্রদান করা হচ্ছে। এছাড়া রেমিট্যান্স প্রেরণ, শিল্পক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও দেশীয় পণ্য আমদানির মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ২০১৮ সাল থেকে আমাদের সরকার প্রতিবছর অনিবাসী বাংলাদেশীদের বাণিজ্যিক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি (সিআইপি) সম্মাননা প্রদান করছে।”

তিনি বলেন, প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের বিশেষায়িত নেটওয়ার্ক, বিনিয়োগ ও দক্ষতার সদ্ব্যবহারের মাধ্যমে দেশের অপ্রতিরোধ্য উন্নয়নে যেন আরও বহুমাত্রিক ভূমিকা রাখতে পারেন, সে লক্ষ্যে এরই মধ্যে আমরা ‘জাতীয় ডায়াসপোরা নীতি, ২০২৩’ প্রণয়নের কার্যক্রম শুরু করেছি। দেশের সঙ্গে প্রবাসীদের আরও নিবিড় ও অর্থবহ সংযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস’ ঘোষণা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমি আশা করি, আমাদের সরকারের এই উদ্যোগে প্রবাসী বাংলাদেশিরা নিজেদের আরও বেশি সম্মানিত বোধ করবেন।

প্রধানমন্ত্রী ‘জাতীয় প্রবাসী দিবস, ২০২৩’ উপলক্ষে গৃহীত সব কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।