দেশের প্রথম ডিজিটাল জনশুমারি ১৫-২১ জুন

নিজস্ব প্রতিবেদক: আগামী ১৫ থেকে ২১ জুন সপ্তাহব্যাপী সারাদেশে পরিচালিত হবে জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ এর কার্যক্রম। সপ্তাহব্যাপী বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রতিটি খানার আর্থ-সামাজিক অবস্থাসহ মোট জনসংখ্যার তথ্য নেয়া হবে। যার পরিপ্রেক্ষিতেই দেশের মোট জনসংখ্যাসহ খানার আর্থ-সামাজিক অবস্থার চিত্র উঠে আসবে।

রাজধানীর শেরে বাংলা নগরে এনইসি সম্মেলন কক্ষে গতকাল ‘জনশুমারি ও গৃহগণনা-২০২২ বিষয়ে সাংবাদিকদের অংশগ্রহণে অবহিতকরণ’ কর্মশালায় এ তথ্য জানানো হয়। কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান, বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রকল্প পরিচালক মো. দিলদার হোসেন। পরে প্রশ্ন উত্তর পর্ব পরিচালনা করেন পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের উপসচিব ড. দীপংকর রায়।

প্রকল্প পরিচালক দিলদার হোসেন বলেন, স্বাধীনতা-পরবর্তী বাংলাদেশ দীর্ঘ পথ পরিক্রমায় বিভিন্ন চড়াই-উৎরাই পেরিয়ে বর্তমান ডিজিটাল বাংলাদেশে রূপান্তরিত হচ্ছে। উন্নয়নের মহাসড়কে দুর্বার গতিতে এগিয়ে চলছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্ব দরবারে উন্নয়নের রোল মডেল। করোনা মহামারিতে বিপর্যস্ত বিশ্বে ঘুরে দাঁড়িয়ে পুনরায় অর্থনীতির চাকা সচল করার বিষয়ে তথ্য প্রযুক্তির ভূমিকা অনস্বীকার্য। বাংলাদেশও এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশ সরকারের বিভিন্ন ডিজিটাল উদ্যোগ মানুষকে দেখিয়েছে নতুন পথ, জুগিয়েছে প্রেরণা। সময় ও যুগের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে সময়োপযোগী, নির্ভুল তথ্য প্রদান এবং সরকার ঘোষিত ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ বিনির্মাণে অবদান রাখার অভিপ্রায়ে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) প্রথম ‘ডিজিটাল শুমারি’ পরিচালনার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।

তিনি জানান, পরিসংখ্যান আইন ২০১৩ অনুযায়ী আদম শুমারিকে ‘জনশুমারি’ হিসেবে অভিহিত করা হয়। জনশুমারি ও গৃহগণনা বাংলাদেশসহ বিশ্বের প্রায় সব দেশেই পরিচালিত সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যাপকভিত্তিক পরিসংখ্যানিক কার্যক্রম। স্বাধীন বাংলাদেশে প্রথম জনশুমারি অনুষ্ঠিত হয় ১৯৭৪ সালে। দ্বিতীয় জনশুমারি ও গৃহগণনা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮১ সালে। দশ বছর পর্যাবৃত্তি অনুসরণপূর্বক দেশের তৃতীয়, চতুর্থ ও পঞ্চম জনশুমারি ও গৃহগণনা যথাক্রমে ১৯৯১, ২০০১ ও ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত হয়। কভিড-১৯ মহামারির কারণে পৃথিবীর অন্য অনেক দেশের ন্যায় ষষ্ঠ জনশুমারি ও গৃহগণনায় ১০ বছর পর্যাবৃত্তি অনুসরণপূর্বক ২০২১ সালে পরিচালনা করা সম্ভব না হলেও আগামী ১৫-২১ জুনে মূল শুমারির তথ্য সংগ্রহ কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে।

অনুষ্ঠানে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমাদের গত বছর শুমারি করার কথা ছিল। কিন্তু আমরা শুমারির কাজ করতে গিয়ে পিছিয়ে গেছি। কয়েকটি কারণে শুমারির কাজ করতে গিয়ে পিছিয়ে গেছি। কভিডের কারণে আমরা প্রথম ধাক্কা খেয়েছি। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম ম্যানুয়ালি শুমারি করব পরে ডিজিটালি করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। যেহেতু বাংলাদেশ ডিজিটালি অনেক এগিয়ে গেছে। সর্বত্র এখন স্মার্টফোন ব্যবহার হচ্ছে, ইন্টারনেট সংযোগও বেড়েছে। ডিজিটালি শুমারির কারণে নিখুঁত বেশি হবে, বিশুদ্ধতা বেশি হবে। ডিজিটালের মাধ্যমে শুমারি বেশি নিখুঁত হবে, বেশি বিশুদ্ধ হবে। তিনি বলেন, ‘শুমারি করতে গিয়ে প্রকিউরমেন্টে আমরা হোঁচট খেয়েছি। বিরাট একটা ক্রয়াদেশ ছিল ট্যাব কেনার। এটা তিনবার ক্রয় কমিটি থেকে ফিরে এসেছে। সর্বোচ্চ পরিমাণে স্বচ্ছতায় সঙ্গে ক্রয় কমিটিতে বার বার গেছি, উনাদের বুঝিয়েছি।’

পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড. শামসুল আলম বলেন, ১৫ থেকে ২১ জুন জনশুমারি অনুষ্ঠিত হবে ডিজিটাল মাধ্যমে। দেশ ডিজিটাল হয়েছে এটাই প্রমাণ। জনশুমারি ১০ বছর পর পর অনুষ্ঠিত হবে। ডিজিটালি শুমারির পরে আমরা ৫ বছর পর পর জনশুমারি করার পরিকল্পনা হাতে নেবো। আমার বিশ্বাস আমরা সফল হতে পারব।

পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড. শাহনাজ আরেফিন বলেন, আমরা ডিজিটালি শুমারি করতে যাচ্ছি এটা খুশির বিষয়। স্বাধীন বাংলাদেশে এই প্রথম ডিজিটালি শুমারি হচ্ছে। শুমারিতে দেশের সব মানুষ যাতে তাদের তথ্য দিতে পারেন সেই জন্য প্রচার-প্রচারণায় অধিক গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। সাংবাদিক ভাই-বোনেরা এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারবেন। সবার সহযোগিতায় একটি সঠিক, স্বচ্ছ ও বিশুদ্ধ ডিজিটাল শুমারি সম্পন্ন করতে পারব বলে আশা করি।

পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মহাপরিচালক (ডিজি) মো. তাজুল ইসলামসহ সংশ্লিষ্টরা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০