শোবিজ ডেস্ক: গত শুক্রবার থেকে বাংলাদেশের প্রেক্ষাগ্রহে একসঙ্গে ১২টি বিদেশি সিনেমা চলছে। একসঙ্গে এতগুলো বিদেশি সিনেমা এর আগে কখনও চলেনি। এছাড়া একসঙ্গে দেশে এখন চালু রয়েছে ২৭৪টি প্রেক্ষাগৃহ। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতি জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে দেশের ১৭০টিরও বেশি হলে চলছে টালিউডের তিনটি ছবি।
প্রদর্শকদের পক্ষ জানানো হয়েছে, পোড়ামন-২ ছাড়া প্রেক্ষাগৃহে চালানোর মতো কোনো ছবি নেই। এছাড়া বিদেশি ছবি আমদানিতে সংশ্লিষ্টদের উৎসাহ ও দর্শকদের আগ্রহ বেশি বলে জানা গেছে। প্রদর্শক সমিতি থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, শুক্রবার থেকে ১৭০টি হলে আমদানি করা টালিউডের ‘ভাইজান এলো রে’ দ্বিতীয় সপ্তাহে এসে চলছে ১২৯ হলে, ‘সুলতান’ তৃতীয় সপ্তাহে চলছে ১৭ সিনেমা হলে এবং ‘ফিদা’ শুক্রবার মুক্তি পেয়েছে ২৩ হলে। অথচ দেশের সাম্প্রতিক অন্যতম মৌলিক ছবি ‘পোড়ামন-২’ চলতি সপ্তাহে এসে চলছে মাত্র ১২টি প্রেক্ষাগৃহে।
এদিকে বসুন্ধরার স্টার সিনেপ্লেক্সে শুক্রবার একসঙ্গে মুক্তি পেয়েছে হলিউডের ‘দ্য ডার্কেস্ট মাইন্ডস’ ও ‘ক্রিস্টোফার রবিন’। সিনেপ্লেক্সে মোট ৯টি ছবি প্রদর্শিত হচ্ছে চলতি সপ্তাহে। এর মধ্যে সাতটি হলিউডের, একটি টালিউডের (ভাইজান এলো রে); অন্যটি ঢালিউডের (পোড়ামন-২)। এছাড়া যমুনা ব্লকবাস্টারে চলতি সপ্তাহে চলছে মোট সাতটি ছবি। এর মধ্যে পাঁচটি হলিউড, একটি ঢালিউড (পোড়ামন-২), অন্যটি টালিউড (ফিদা)। তবে দেশের প্রেক্ষাগৃহে বিদেশি ছবির আধিক্যকে নেতিবাচক দৃষ্টিতে দেখতে চাইছেন না চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নেতারা। তাদের অভিযোগ, হলে চালানোর মতো ভালো ছবি নেই। আর ভালো ছবি না হলে তো দর্শক হলে আসতে চায় না। তাই সিনেমা হল বাঁচাতেই বাইরের সিনেমা আমদানি করতে হচ্ছে। দেশে ভালো ছবি নেই বলেই তো দর্শক কলকাতার ছবি দেখছে। সারা দুনিয়া থেকে ভালো ভালো ছবি আসা উচিত। চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির নেতা মিয়া আলাউদ্দিন বলেন, কলকাতার ‘ভাইজান এলো রে’ এবং দেশের ‘পোড়ামন-২’ ভালো। এগুলোর মতো মানসম্পন্ন ছবি বানাতে হবে আমাদের। অথচ আমরা এখন ছবি নির্মাণ না করে ব্যাড পলিটিক্স করছি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, চলতি বছরে দেশে ছবি নির্মাণের সংখ্যা কমে গেছে। গত জানুয়ারি থেকে জুলাই পর্যন্ত সাত মাসে দেশীয় ছবি মুক্তি পেয়েছে মাত্র ২৫টি। এর মধ্যে বেশিরভাগ ছবিই লোকসানের মুখ দেখেছে। গুটিকয়েক মানসম্পন্ন ছবি নির্মিত হলেও সে অর্থে মেলেনি বাণিজ্যিক সফলতা। এসব বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করে দেশের অন্যতম চলচ্চিত্র প্রযোজক আবদুল আজিজ বলেন, ‘প্রকৃতি কখনোই শূন্যস্থান পছন্দ করে না। তাই এখন দেশের সিনেমা হলে বিদেশের ছবির আধিক্য। যারা ইন্ডাস্ট্রির নেতা, তাদের এটা আরও আগেই বোঝা উচিত ছিল। সেটা না বুঝে তারা বরাবরই আটকে রাখার চেষ্টা করেছে আমাদের। আমরা যারা দেশে আন্তর্জাতিক মানের ছবি বানাতে চাই, এটা তাদের জন্য খুবই দুঃখজনক।’
এদিকে সাফটা চুক্তির আওতায় আগামী ১০ আগস্ট দেশের প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পাচ্ছে সোহম-শ্রাবন্তী অভিনীত নতুন ছবি ‘পিয়া রে’। কোরবানির ঈদের পর এ তালিকায় যুক্ত হচ্ছে টালিউডের আরও অনেক নতুন নতুন ছবি। বিনিময়ে দেশ থেকে রফতানি হবে পুরোনো কিছু ছবি। সেগুলোও কবে ও কয়টি হলে মুক্তি পাবে সে বিষয়ে জানা যায়নি।
