Print Date & Time : 20 June 2025 Friday 12:59 pm

দেশে ইউরিয়া সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে: শিল্পমন্ত্রী

প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ: শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন বলেছেন, চাহিদা অনুযায়ী বর্তমানে দেশে ইউরিয়া সারের পর্যাপ্ত মজুত রয়েছে। তিনি বলেন, কৃষকদের জন্য শিল্প মন্ত্রণালয় প্রয়োজনীয় ইউরিয়া সার বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশনের (বিসিআইসি) সার কারখানাগুলোর মাধ্যমে উৎপাদন এবং বিদেশ থেকে আমদানি করে থাকে। গতকাল শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিসৌধে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিল্পমন্ত্রী এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা সার্বিকভাবে বাজার নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছি। তবে আমাদের দেশের ব্যবসায়ীরা একটু বেশি সুযোগ নিচ্ছেন। কারণ আমরা ব্যবসায়ীদের নীতিমালার মধ্যে আনতে পারিনি। আমাদের দেশে সারের কোনো কমতি নেই। আমাদের নিজস্ব উৎপাদন রয়েছে। কৃষিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য আমরা কাজ করছি।’

শিল্পমন্ত্রী বলেন, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে ইউরিয়া সারের ব্যবহার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশে বছরে কমপক্ষে ২৫ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের চাহিদা রয়েছে। এর মধ্যে ন্যূনতম শতকরা ৬০  থেকে ৭০ ভাগ বিদেশ থেকে আমদানি করে চাহিদা মেটাতে হয়। আমদানি করা সার দেশের বিভিন্ন জেলার বিএডিসির ২৫টি বাফার গুদামের মাধ্যমে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে ডিলারদের মাধ্যমে কৃষকদের মাঝে সরবরাহ করা হয়ে থাকে।

এছাড়া নিরাপদ মজুত নিশ্চিতকরণে ২৫ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সারের অতিরিক্ত হিসেবে আরও পাঁচ লাখ মেট্রিক টন সার বাফার গোডাউনগুলোয় মজুত রাখা প্রয়োজন। বর্তমানে কারখানা ও সব বাফার গোডাউনের ধারণক্ষমতা সর্বোচ্চ তিন লাখ মেট্রিক টন। তাই প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনায় শিল্প মন্ত্রণালয় সার সংরক্ষণ ও বিতরণ সুবিধার জন্য দেশের বিভিন্ন জেলায় দুটি পৃথক প্রকল্পের মাধ্যমে ১৩টি ও ৩৪টি করে মোট ৪৭টি বাফার গোডাউন নির্মাণ করছে। সবগুলো বাফার গোডাউন নির্মাণ সম্পন্ন হলে প্রতিটিতে ১০ হাজার মেট্রিক টন করে প্রায় পাঁচ লাখ মেট্রিক টন সার মজুত রাখা সম্ভব হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন আরও বলেন, গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার গোবরা মৌজায় ১০ হাজার মেট্রিক টন ধারণক্ষমতার গুদাম নির্মাণকাজের শতকরা ৪০ ভাগ অগ্রগতি হয়েছে। প্রায় ৩৪ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন প্রকল্পটি দ্রুত শেষ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

এদিকে যারা সিন্ডিকেট করছে, তাদের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রকাশের জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে প্রতিমন্ত্রী কামাল আহম্মেদ মজুমদার বলেন, ‘বাংলাদেশে খাদ্য শস্যের কোনো অভাব নেই, সারের কোনো ঘাটতি নেই। গুদামে ছয় লাখ থেকে সাত লাখ মেট্রিক টন সার মজুত রয়েছে। করোনা মহামারি ও রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধকে পুঁজি করে একশ্রেণির ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করেছে।’

এর আগে শিল্পমন্ত্রী জাতির পিতার সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পরে পবিত্র ফাতেহা পাঠ করে বঙ্গবন্ধুসহ ’৭৫-এর ১৫ আগস্ট নিহত শহিদদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে দোয়া ও মোনাজাত করা হয়।

শিল্পমন্ত্রীর সহধর্মিণী নাদিরা মাহমুদ, শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার (এমপি), শিল্প সচিব জাকিয়া সুলতানা, বিসিআইসি’র চেয়ারম্যান শাহ্ মো. ইমদাদুল হক, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নূরুল আলম, জনেন্দ্রনাথ সরকার, এসএম আলম ও যুগ্ম সচিব মো. আব্দুল ওয়াহেদসহ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এ সময় উপস্থিত ছিলেন।