দেশে হালাল পণ্য রফতানির উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে

????????????????????????????????????

নিজস্ব প্রতিবেদক: হালাল পণ্য উৎপাদন ও রফতানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। একই সঙ্গে এ খাতের উৎপাদন ও রফতানি বাড়াতে অবকাঠামো উন্নয়নে স্বল্প সুদে আর্থিক প্রণোদনা চান উদ্যোক্তরা। গতকাল বৃহস্পতিবার ঢাকা চেম্বার মিলনায়তনে এক সেমিনারে এসব কথা বলেন বক্তারা।
‘হালাল সনদের মানদণ্ড এবং প্রতিবন্ধকতা: বাংলাদেশের সম্ভাবনা’ শীর্ষক সেমিনারের আয়োজন করে ঢাকা চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (ডিসিসিআই)। চেম্বার সভাপতি আবুল কাসেম খানের সভাপতিত্বে সেমিনারে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম প্রধান অতিথি ছিলেন। বাংলাদেশে নিযুক্ত সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাষ্ট্রদূত সাইদ মোহাম্মদ আল-মেহেরি বিশেষ অতিথি ছিলেন।
বিডা নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে হালাল পণ্য উৎপাদন ও রফতানির ক্ষেত্রে আমাদের উজ্জ্বল সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি বলেন, বর্তমান বিশ্বে হালাল বিষয়টি শুধু খাদ্যপণ্যের পাশাপাশি অন্যান্য পণ্যের সঙ্গেও জড়িত। তিনি জানান, আমাদের রফতানির পরিমাণ বাড়ানো, রফতানি পণ্যের বাজার সম্প্রসারণ এবং অধিক হারে জনগণের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরির ক্ষেত্রে হালাল পণ্য উৎপাদনের বিষয়টি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ সরকার ইতোমধ্যে ১০০টি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে এবং হালাল পণ্য উৎপাদন বাড়ানোর জন্য একটি অঞ্চল বরাদ্দ দেওয়া যেতে পারে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন।
বিডার চেয়ারম্যান বলেন, হালাল খাদ্য মানুষের জীবনধারণের জন্য অত্যন্ত নিরাপদ, যা কি না মুসলমানদের পাশাপাশি অমুসলিমরাও গ্রহণ করে থাকে এবং এর ফলে এ ধরনের পণ্যের সম্ভাবনা পৃথিবীর সব দেশেই রয়েছে।
স্বাগত বক্তব্যে ঢাকা চেম্বারের সভাপতি বলেন, প্রাইস ওয়াটারহাউজ কুপারস (পিডব্লিউসি) বাংলাদেশকে ২০৩০ সালের মধ্যে ২৮তম এবং ২০৫০ সালে ২৩তম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশে পরিণত হওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য আমাদের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড বিস্তৃত করার কোনো বিকল্প নেই।
তিনি জানান, বর্তমানে বৈশ্বিক ইসলামিক বাজারমূল্য প্রায় দুই ট্রিলিয়ন ডলার, যা পৃথিবীর মোট খরচের প্রায় ১১.৯ শতাংশ এবং এ থেকে প্রতীয়মান হয়, বিশ্বে হালাল পণ্যের বেশ চাহিদা রয়েছে ও প্রতিনিয়ত তা বাড়ছে।
ডিসিসিআই’র সভাপতি বলেন, পৃথিবীজুড়ে হালাল পণ্য রফতানির ক্ষেত্রে ব্রাজিল, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড ও থাইল্যান্ড এগিয়ে রয়েছে, কিন্তু মুসলিমপ্রধান দেশ হিসেবেও আমরা ভালো অবস্থানে যেতে পারিনি।
তিনি বাংলাদেশে হালাল পণ্যে উৎপাদনকে আরও জনপ্রিয় ও এ খাতের উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন ও সহযোগিতা, দক্ষ জনবল তৈরি এবং প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা উন্নয়ন, হালাল সনদ প্রদানের প্রক্রিয়া সহজীকরণ এবং অবকাঠামো উন্নয়নে স্বল্প সুদে আর্থিক প্রণোদনা প্রদানের জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।
রাষ্ট্রদূত সাইদ মোহাম্মদ সাইদ বলেন, মুসলিমপ্রধান দেশগুলোর পাশাপাশি অমুসলিম জনবহুল দেশেও হালাল পণ্যের চাহিদা ও ব্যবহার ক্রমেই বৃদ্ধির ফলে হালাল পণ্য উৎপাদনের বিষয়টি ব্যবসায়িক ক্ষেত্রে নতুন দিগন্তের দ্বার উম্মোচন করেছে। তিনি জানান, ট্রান্সপারেন্সি মার্কেট রিসার্চের হিসাব অনুযায়ী, ২০১৫ সালে সারা পৃথিবীতে হালাল পণ্যের বাজারমূল্য ছিল প্রায় দুই দশমিক সাত ট্রিলিয়ন ডলার এবং ২০২৪ সালে এটি প্রায় ১০ দশমিক ৫১ ট্রিলিয়ন ডলারে এসে দাঁড়াবে। তিনি বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ বেশ কয়েকটি দেশে শুধু মাংস রফতানি করছে এবং বিশেষ করে গোখাদ্যে যেন কোনোভাবেই ক্ষতিকারক রাসায়নিক অথবা ওষুধ ব্যবহার করা না হয়, সেদিকে আরও যত্নবান হতে হবে।
তিনি বলেন, বিশ্ববাজারে বাংলাদেশের হালাল পণ্যের রফতানি বাড়াতে হলে প্রয়োজনীয় অবকাঠামো উন্নয়ন, হালাল সনদ প্রদানের জন্য আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সনদ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠান স্থাপন এবং প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়নের কোনো বিকল্প নেই।
সেমিনারে দুবাইভিত্তিক প্রতিষ্ঠান আরএসিএস কোয়ালিটি সার্টিফিকেটস ইস্যুয়িং সার্ভিসেস এলএলসি’র বিক্রয় ও বিপণন বিভাগের প্রধান ওসামা ইমাম মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।
মুক্ত আলোচনায় ডিসিসিআই পরিচালক ওয়াকার আহমেদ চৌধুরী, সাবেক ঊর্ধ্বতন সহসভাপতি আবদুস সালাম, এমএস সেকিল চৌধুরী ও আহ্বায়ক এমএস সিদ্দিকী বক্তব্য রাখেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০