নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে প্রায় ২৩ লাখ শিশু অটিজমে ভুগছে বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, ‘গবেষণায় দেখা গেছে, দেশে মেয়েশিশুর চেয়ে ছেলেশিশুর সংখ্যা প্রায় আড়াই গুণ বেশি। অটিজমে আক্রান্ত এসব শিশুর আমরা চিকিৎসা দিচ্ছি, কিন্তু গবেষণায় আমরা কিছুটা পিছিয়ে আছি। এক্ষেত্রে আমাদের আরও গবেষণা বাড়াতে হবে।’ গতকাল মঙ্গলবার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে (বিএসএমএমইউ) ‘সার্টিফিকেট কোর্স অন নিউরো-ডেভেলপমেন্ট ডিসঅর্ডার’ শীর্ষক কোর্সের উদ্বোধন ও সনদ বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরো-ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা) এ আয়োজন করে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘প্রতিবন্ধী শিশুদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী খুবই আন্তরিক। যারা অটিজমে ভুগছে, তারা আগে স্কুলে যেতে পারত না, বাড়িতে মেহমান এলে তাদের লুকিয়ে রাখা হতো। এখন অবস্থার পরিবর্তন হয়েছে। এক্ষেত্রে সব কৃতিত্ব প্রধানমন্ত্রী ও তার কন্যা সায়মা ওয়াজেদের।’
তিনি বলেন, ‘যারা অটিস্টিক শিশু আছে, তারা আগামী দিনে আরও ভালো সেবা পাবে। তাদের চিকিৎসা সেবায় দেশে অনেক ইনস্টিটিউট হচ্ছে, তাদের জন্য আলাদা স্কুল করা হচ্ছে। এমনকি বিদ্যমান স্কুলগুলোয় তাদের শিক্ষায় আলাদা ব্যবস্থা করা হচ্ছে। কাউকে পেছনে রেখে আমরা কেউই এগিয়ে যেতে চাই না।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশে পাঁচ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের করোনাভাইরাস প্রতিরোধী টিকা পাওয়া গেছে। শিগগিরই তাদের এই টিকা দেয়া শুরু হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) অনুমোদন পেয়েছি।’
শিশুর সংখ্যা বেশি, তাই টিকা দিতে সময় লাগবে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘দেশে করোনাভাইরাস প্রতিরোধে ৫ থেকে ১২ বছর বয়সী শিশুদের টিকার আওতায় আনা হবে। এরই মধ্যে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা এর অনুমোদন দিয়েছে। সরকারি পরিসংখ্যান বলছে, দেশে ৫-১২ বছর বয়সী শিশুর সংখ্যা দুই কোটি ২০ লাখ। তাদের জš§সনদ দিয়ে সুরক্ষা অ্যাপে টিকার নিবন্ধন করতে হবে। যারা এখনও নিবন্ধন করেনি, তাদের অভিভাবকদের অনুরোধ করব, দ্রুত নিবন্ধন করুন।’
সবাইকে মাস্ক পরার অনুরোধ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সংক্রমণ বাড়ছে এবং নিয়মিত প্রাণহানি ঘটছে। তাই অফিস-আদালতে মাস্ক পরতে এবং স্বাস্থ্যবিধি মানতে হবে।’
অনুষ্ঠানে বিএসএমএমইউয়ের শিশু নিউরোলজি বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. গোপেন কুমার বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বিএসএমএমইউ) ইনস্টিটিউট অব পেডিয়াট্রিক নিউরো-ডিজঅর্ডার অ্যান্ড অটিজম (ইপনা) কর্তৃক দেশব্যাপী পরিচালিত জরিপে দেখা গেছে, প্রতি ১০ হাজারে ১৭ শিশুর অটিজম পাওয়া যায়। এদের মধ্যে পল্লি এলাকায় প্রতি ১০ হাজারে ১৪ জন, শহর এলাকায় প্রতি ১০ হাজারে ২৫ জন আক্রান্ত পাওয়া যায়।’
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মো. শারফুদ্দিন আহমেদ। স্বাগত বক্তব্য দেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিশু অনুষদের ডিন ও ইপনার প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ডা. শাহীন আখতার।