Print Date & Time : 16 June 2025 Monday 3:59 pm

দেশে ৩২ দিনের ডিজেল মজুত আছে: বিপিসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে জ্বালানি তেলের কোনো সংকট নেই বলে জানিয়েছে সরবরাহকারী রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। প্রতিষ্ঠানটি জানিয়েছে, দেশে ডিজেলের মজুত সক্ষমতা আছে ছয় লাখ পাঁচ হাজার টন মেট্রিক টন, যা দিয়ে ৪০ দিনের চাহিদা পূরণ করা যাবে। এর বিপরীতে দেশে বর্তমানে ডিজেলের মজুত আছে চার লাখ ৩১ হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন। অর্থাৎ ৩২ দিনের চাহিদার সমান মজুত। আর আমদানি করা আরও কয়েক হাজার টন সমুদ্রপথে দেশে আসার অপেক্ষায় রয়েছে। এছাড়া আরও প্রায় ছয় মাসের আমদানি আদেশ রয়েছে।

বিপিসি সূত্রে জানা যায়, গতকাল পর্যন্ত বিপিসির বিভিন্ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় ডিজেল মজুত ছিল চার লাখ ৩১ হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন। এসব ডিজেল দিয়ে আগামী ৩২ দিন দেশের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। এছাড়া অকটেন আছে ১২ হাজার ২৩৮ মেট্রিক টন (৯ দিনের মজুদ), পেট্রোল আছে ২১ হাজার ৮৩৩ মেট্রিক টন (১৫ দিনের), জেট অয়েল ৬২ হাজার ৮৯১ মেট্রিক টন (৪৪ দিনের মজুদ) এবং ফার্নেস অয়েল মজুত আছে ৮৫ হাজার ৪১ মেট্রিক টন (৩২ দিনের মজুত)। অর্থাৎ স্বাভাবিক সময়ের কাছাকাছি আছে দেশে জ্বালানি তেলের সরবরাহ, আমদানি ও মজুত। এছাড়া জুলাই মাসে ডিজেল আমদানি হয় দুই লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন, জেটফুয়েল দুটি জাহাজে প্রায় ৪৩ হাজার মেট্রিক টন, অকটেন একটি জাহাজ থেকে ২৪ হাজার ৬৭৭ মেট্রিক টন এবং ফানের্স অয়েল দুটি জাহাজ থেকে ৫৩ হাজার ৩৫৮ মেট্রিক টন। আর আগস্ট মাসে ডিজেল দুই লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন, জেট অয়েল ২৫ হাজার মেট্রিক টন, অকটেন ২৫ হাজার মেট্রিক টন আমদানি হবে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ বলেন, দেশে জ্বালানি তেলের মজুত, সরবরাহ ও আমদানিতে কোনো ধরনের সংকট নেই। এখনও ডিজেলের মজুত ৩২ দিনের আছে। হয়তো সরবরাহ প্রক্রিয়ায় কোনোটা মজুদ কম থাকে আবার কোনোটা বেশি থাকে। এটা একটা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তবে সরবরাহ স্বাভাবিক আছে। এছাড়া আগামী ছয় মাসের জ্বালানি তেল আমদানির শিডিউল নিশ্চিত করা আছে।

গুজবের ব্যাখ্যা দিল জ্বালানি বিভাগ: এদিকে জ্বালানি তেল-সংক্রান্ত গুজব নিয়ে ব্যাখ্যা দিয়েছে জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগ। গতকাল বুধবার বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপপ্রধান তথ্য অফিসার মীর মোহাম্মদ আসলাম উদ্দিন স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে।

এতে বলা হয়, একটি স্বার্থান্বেষী মহল জ্বালানি তেলের মজুত নিয়ে অসত্য ও মনগড়া তথ্য প্রচার করছে, যা সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছে। আমরা দৃঢ় প্রত্যয়ে বলছি, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের আওতাধীন কোম্পানিগুলোর ডিপোতে পর্যাপ্ত পরিমাণ জ্বালানি তেল মজুত রয়েছে। বর্তমানে দেশে জ্বালানি তেলের কোনো ঘাটতি বা সংকট নেই। সংকটের কোনো আশঙ্কাও নেই। এরই মধ্যে আগামী ছয় মাসের জন্য প্রয়োজনীয় তেল আমদানির প্রক্রিয়া পাইপলাইনে রয়েছে।

ব্যাখ্যায় বলা হয়, আমাদের ডিজেল বর্তমানে (২৭ জুলাই পর্যন্ত) মজুত রয়েছে চার লাখ ৩১ হাজার ৮৩৫ মেট্রিক টন। দৈনিক গড় বিক্রি ১৩ হাজার ৬০৭ মেট্রিক টন হিসেবে ৩২ দিনের; জেট-এ-১ মজুত রয়েছে ৪৪ দিনের ও ফার্নেস অয়েল মজুত রয়েছে ৩২ দিনের। অর্থাৎ আমাদের মজুত সক্ষমতা অনুসারে যথেষ্ট পরিমাণ জ্বালানি তেল মজুত রয়েছে। এতে জানানো হয়, পেট্রোল পুরোটাই বাংলাদেশ উৎপাদন করে। অকটেনের প্রায় ৪০ ভাগ বাংলাদেশ উৎপাদন করে।

ব্যাখ্যায় বলা হয়, জুলাই মাসে ৯টি জাহাজ থেকে এরই মধ্যে দুই লাখ ৫৫ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল, দুটি জাহাজে প্রায় ৪৩ হাজার মেট্রিক টন জেট-এ-১, একটি জাহাজ থেকে ২৪ হাজার ৬৭৭ মেট্রিক টন অকটেন এবং দুটি জাহাজ থেকে ৫৩ হাজার ৩৫৮ মেট্রিক টন ফার্নেস অয়েল গ্রহণ করা হয়েছে। আগস্ট মাসে আটটি জাহাজে দুই লাখ ১৮ হাজার মেট্রিক টন ডিজেল, একটি জাহাজে ২৫ হাজার মেট্রিক টন জেট-এ-১ এবং একটি জাহাজে ২৫ হাজার মেট্রিক টন অকটেন আসবে।

এতে জানানো বলা হয়, আগামী ছয় মাসের আমদানি পরিকল্পনানুসারে জ্বালানি তেল বাংলাদেশে আসবে। এর ৫০ ভাগ জি-টু-জি চুক্তির মাধ্যমে এবং বাকি ৫০ ভাগ উম্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ক্রয়াদেশ দেয়া হয়েছে। ঘাটতি হওয়ার কোনো আশঙ্কা নেই। ভর্তুকি মূল্যে সরবরাহ করা জ্বালানি তেল ব্যবহারে মিতব্যয়ী এবং সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা যাচ্ছে।