দেশে ৩ কোটি ৮০ লাখ মানুষ কিডনি রোগে ভুগছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশে কোনো না কোনো কিডনি রোগে ভুগছে এমন মানুষের অনুমিত সংখ্যা ৩ কোটি ৮০ লাখ। কিডনি রোগ প্রতিরোধের বার্তা মানুষ ঠিকভাবে পায় না। তবে সরকার গ্রাম পর্যায়ে রোগ শনাক্তের উদ্যোগ নিয়েছে।

গতকাল শনিবার সকালে জাতীয় প্রেস ক্লাবে এক গোলটেবিল বৈঠকে সরকারি কর্মকর্তা ও বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন।

‘সবার জন্য কিডনি স্বাস্থ্য-কিডনি চিকিৎসায় সহ-অধিকার: অর্জনে করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকের আয়োজন করে বেসরকারি সংগঠন ‘কিডনি অ্যাওয়ারনেস মনিটরিং অ্যান্ড প্রিভেনশন সোসাইটি (ক্যাম্পস)’। অনুষ্ঠানে কিডনি রোগীদের জন্য বিমা চালুর ব্যাপারে উদ্যোগী হতে সরকারের কাছে অনুরোধ জানানো হয়।

জাতীয় অধ্যাপক ও ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি এ কে আজাদ খান বলেন, কিডনি রোগ, ডায়াবেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে দীর্ঘদিন ধরে বলা হচ্ছে, প্রচার-প্রচারণা চালানো হচ্ছে। কিন্তু মানুষ তা শুনছে না। কারণ ঠিকভাবে মানুষের কাছে তা বলা হচ্ছে না। কীভাবে বললে মানুষ শুনবে, গ্রহণ করবে তা নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার বলে মন্তব্য করেন এই ডায়াবেটিস বিশেষজ্ঞ।

প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ  বলেন, ‘কিডনি রোগ হয়ে গেলে সমস্যা, সুতরাং এই রোগ যেন না হয়, সে বিষয়ে বিশেষ জোর দিতে হবে।’ তিনি বলেন, অনিয়ন্ত্রিত রক্তচাপ, অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস কিডনি রোগের কারণ।

বছর দুই আগের একটি গবেষণা প্রবন্ধের তথ্য উদ্ধৃত করে সরকারের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক রোবেদ আমিন বলেন, কোনো না কোনো কিডনি রোগে ভুগছেÑদেশে এমন মানুষের সংখ্যা ৩ কোটি ৮০ লাখ। এর মধ্যে ৪০ থেকে ৫০ হাজার মানুষের কিডনি বিকল।

দীর্ঘদিন কিডনি রোগে ভুগছেন, এমন একজন রোগী ও তার ছেলে অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। তিনি বলেন, ২০০০ সালে তার কিডনি রোগ ধরা পড়ে। এরপর তিনি কিডনি প্রতিস্থাপন করেন। প্রতিস্থাপনের পর কয়েক বছর ভালো ছিলেন। এর মধ্যে তিনি বিয়ে করেন, একটি ছেলের জš§ হয়। পরে আবার কিডনি খারাপ হয়। এখন তিনি নিয়মিত ডায়ালাইসিস করছেন। তার স্বামী বিদেশে থাকেন।

ওই রোগী আরও বলেন, চিকিৎসা খরচ মেটাতে তিনি নিঃস্ব হয়ে গেছেন। সরকার যেন তাদের মতো রোগীদের জন্য বিমাব্যবস্থা চালু করেন।

কিডনি ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক হারুন-উর-রশিদ বলেন, ৪০ বছরের বেশি বয়সী মানুষের নিয়মিত কিডনি পরীক্ষা করানো উচিত। কারণ শুরুর দিকে কিডনি রোগের কোনো উপসর্গ থাকে না। ৮০ থেকে ৮৫ শতাংশ কিডনি নষ্ট হয়ে যাওয়ার পর উপসর্গ দেখা দেয়। তিনি বলেন, চিকিৎসকদের গাইডলাইন মেনে চিকিৎসা দেয়া উচিত।

আলোচনায় অংশ নিয়ে শিশু কিডনি রোগবিশেষজ্ঞ অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন বলেন, দেশে ১৬ দশমিক ২ শতাংশ শিশুর জš§ হয় সময়ের আগে। সময়ের আগে জš§ নেয়া শিশুদের কিডনি রোগের ঝুঁকি বেশি। ঝুঁকি এড়াতে এদের বিশেষ যত্ন নেয়া প্রয়োজন।

অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক হারিসুল হক। অনুষ্ঠানে মূল বক্তব্য উপস্থাপনের সময় আয়োজক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি বলেন, কিডনি রোগীদের জন্য পৃথক বিমাব্যবস্থা চালু হলে অনেক রোগী চিকিৎসার সুযোগ পাবেন।

অনুষ্ঠানে জাতীয় ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক গাজী আশরাফ হোসেন এবং বাংলাদেশ রেনাল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক নিজামউদ্দিন চৌধুরীও বক্তব্য দেন।

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০