Print Date & Time : 19 June 2025 Thursday 4:08 pm

দেড় হাজার কোটি টাকা লেনদেন স্বাভাবিক

প্রতি রবি থেকে বৃহস্পতিবার পুঁজিবাজারের বিভিন্ন ইস্যু নিয়ে এনটিভি ‘মার্কেট ওয়াচ’ অনুষ্ঠানটি সম্প্রচার করে। বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ বিবেচনায় তার গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে শেয়ার বিজের নিয়মিত আয়োজন ‘এনটিভি মার্কেট ওয়াচ’ পাঠকের সামনে তুলে ধরা হলো:

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের পুঁজিবাজারে বর্তমানে বাজার মূলধন তিন লাখ কোটি টাকা। লেনদেন স্বাভাবিকভাবে হওয়া উচিত বাজার মূলধনের দশমিক পাঁচ শতাংশ। অর্থাৎ দেড় হাজার কোটি টাকা লেনদেন স্বাভাবিক। এর নিচে  লেনদেন হলে ডিএসই, সিএসই ও বিএসইসির ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। গতকাল এনটিভির মার্কেট ওয়াচ অনুষ্ঠানে বিষয়টি আলোচিত হয়। হাসিব হাসানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আলোচক ছিলেন আইনজীবী ও পুঁজিবাজার বিশ্লেষক হাসান মাহমুদ বিপ্লব, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী অধ্যাপক মো. সালাহউদ্দিন চৌধুরী, এফসিএ এবং স্টারলিংক স্টক অ্যান্ড সিকিউরিটিজ লিমিটেডের সিইও এসএম নাসিরউদ্দিন।

হাসান মাহমুদ বিপ্লব বলেন, মানি মার্কেট ও ক্যাপিটাল মার্কেট সম্পর্কিত কেন্দ্রীয় ব্যাংক এবং এসইসির কর্মক্ষমতা তুলনা করলে দেখা যাবে, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এসইসির তুলনায় অনেক ক্ষমতাসম্পন্ন। জনবলের দিক থেকেও কেন্দ্রীয় ব্যাংক অনেক শক্তিশালী। তা সত্ত্বেও  চেয়ারম্যানসহ সবার সমন্বিত প্রচেষ্টায় এসইসি এ গ্রুপে উঠে এসেছে। আমরা যদি এসইসিকে শক্তিশালী না করে এবং পুঁজিবাজার থেকে টাকা না নিয়ে কোনো প্রকল্প বাস্তবায়নে শুধু ব্যাংকের ওপর নির্ভর করি সে ক্ষেত্রে অর্থনীতিতে বিপর্যয় দেখা দিতে পারে। সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ক্লোজিং হবে ডিসেম্বরে। প্রত্যেকেই এখন লাভ-লোকসানের হিসাবে ব্যস্ত। তাই তারা মার্কেটে নিষ্পৃহ রয়েছে। আর এ কারণে  ব্যাংক ও ফাইন্যান্স খাতে একটু ধীরগতি।

তিনি আরও বলেন, ভালো শেয়ার কিনে তার দিকে তাকানো যাবে না। কমপক্ষে দুই থেকে তিন বছর রেখে দিতে হবে। সেক্ষেত্রে ভালো মুনাফা আসবে। কয়েক দিন আগে লেনদেন যে পরিমাণ ছিল এখন তা এত কমা উচিত নয়। আমাদের মার্কেট ক্যাপিটাল তিন লাখ কোটি টাকা। স্বাভাবিকভাবে ট্রেড হয় মার্কেট ক্যাপিটালের দশমিক পাঁচ শতাংশ। অর্থাৎ দেড় হাজার কোটি টাকার নিচে ট্রেড হলে ডিএসই, সিএসই, বিএসইসির ব্যবস্থা নেওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।

মো. সালাহউদ্দিন চৌধুরী বলেন, বিএসইসিকে শক্তিশালী না করা   ক্যাপিটাল মার্কেটের জন্য খারাপ। বর্তমান চেয়ারম্যানের উদ্যোগে ক্যাপিটাল মার্কেট এ পর্যন্ত এসেছে। বাজারের গতিতে যেন  ধারাবাহিকতা থাকে। গতকালের টপটেন গেইনারে ছিল ভালো একটি ব্যাংক কোম্পানি। বাকিগুলোর ফান্ডামেন্টাল ততটা ভালো নয়। আপনি যদি ভালো কোম্পানিতে বিনিয়োগ করেন ভালো প্রফিট আসবে। গত কয়েক দিন ধরে মোট লেনদেনের ৩০ থেকে ৩৫ শতাংশ  হচ্ছে ব্যাংক খাতে। বাকি খাতগুলোয় মাত্র ১০ শতাংশ করে লেনদেন হয়। মাঝখানে অনেক ব্যবধান। প্রত্যেকটি সেক্টরে যদি ভালো কোম্পানি না থাকে তাহলে সমস্যা। বাজারে যদি আরও ভালো কোম্পানি আনা যায় তাহলে বিনিয়োগকারীরাও মার্কেটে আসতে আগ্রহী হবে।

এসএম নাসিরউদ্দিন স্কাইপেতে আলোচনায় সংযুক্ত ছিলেন। তিনি বলেন, বাজার উত্থান-পতনের মধ্য দিয়ে চক্রাকারে চলতে থাকবে। কতটুকু উত্থান-পতন হচ্ছে সেটা বিবেচনার বিষয়। সার্বিক দিক বিবেচনায় মার্কেট এখন স্থিতিশীলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, পুঁজিবাজার আমাদের বহুবার কম দামে শেয়ার কেনার সুযোগ দেয় কিন্তু আমরা সে সুযোগ কাজে লাগাই না। আবার ভালো দামে শেয়ার বিক্রয়ের সুযোগ পেলেও আরও বেশি লাভের জন্য অপেক্ষা করি। ফলে সব সুযোগই হারিয়ে ফেলি। তাই আমাদের সঠিক সময়ের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যখন শেয়ার বিক্রির কথা তখন কিনলে আবার যখন কেনার কথা তখন বিক্রি করলে মুনাফা করা সম্ভব হবে না। সেক্ষেত্রে হতাশ হওয়া ছাড়া উপায় নেই। বাজার এখন সার্বিক দিক থেকে ভালো অবস্থানে। অনেক ভালো মানের শেয়ার আছে। সেসব কোম্পানিতে বিনিয়োগ করলে ভালো একটি রিটার্ন অবশ্যই পাওয়া যাবে।