ক্রীড়া প্রতিবেদক: সারা বিশ্বেই ছড়িয়ে পড়েছে করোনাভাইরাস। দিন দিন প্রাণঘাতী এ ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব বাড়ছে। যে কারণে আপাতত ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ (ডিপিএল) বন্ধ করা হয়েছে। কবে আবার কবে এ টুর্নামেন্ট মাঠে গড়াবে, তা জানে না কেউ। তাই ঢাকায় থাকবেন, নাকি গ্রামের বাড়িতে যাবেন এ নিয়ে মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজরা পড়েছেন দোটানায়।
লিগ বন্ধ, তাই দলগুলোর আনুষ্ঠানিক অনুশীলনও নেই। তবে ব্যক্তিগত উদ্যোগে যে যার মতো করে ফিটনেস ঠিক রাখতে করছেন জিম। গতকাল তাই মিরপুর একাডেমিতে এসেছিলেন মোস্তাফিজুর রহমান, মেহেদি হাসান মিরাজ, মোহাম্মদ মিথুন, তাইজুল ইসলাম, আবু জায়েদ রাহি, ইবাদত হোসেনরা। আপাতত তারা ঢাকায় আছেন। ঢাকায় বসেই ফিটনেস ঠিক রাখবেন, নাকি বাড়ি চলে যাবেন এ নিয়ে অনেকের মধ্যেই আছে দ্বিধাদ্বন্দ্ব।
ফিটনেস নিয়ে কাজ করলেও ক্রিকেটারদের চোখ বেশিরভাগ সময়ই থাকছে মোবাইলের স্ক্রিনে। কেননা, করোনাভাইরাসের খবর রাখছেন তারা। ফিটনেস ট্রেনিং শেষে ফেরার পথে গতকাল এ ব্যাপারে আবু জায়েদ রাহি বলেন, ‘ভাই, এখন সত্যিই ভয় লাগছে। আগে এতটা ভয় লাগেনি। আর কি করব, তাও বুঝতে পারছি না। লিগ শুরু না হলে তো সিলেটে চলে যেতাম। এখন যেতেও পারছি না, আবার থেকেই-বা কি করব।’
এদিকে এবাদত হোসেন জানিয়েছেন, লিগ না চললে সিলেট চলে যাবেন। সেখানে আবু জায়েদ রাহী ও সৈয়দ খালেদ আহমেদের সঙ্গে বোলিং অনুশীলন করবেন।
খেলা নেই বলে অনেকটা নির্ভার ক্রিকেটাররা। তাই গতকাল তাইজুল ইসলামের সঙ্গে বেশ খানিকক্ষণ রানিং করেন মোহাম্মদ মিথুন। তার বাড়ি কুষ্টিয়ায়। লিগ আর সহসা শুরু না হলেও অনেকের মতো তার বাড়ি যাওয়ার পরিকল্পনাও নেই। এ ব্যাপারে এ ডানহাতি ব্যাটসম্যান বলেন, ‘আপাতত বাড়ি যাচ্ছি না। কারণ, চিকিৎসার দিক চিন্তা করলে ঢাকাতেই ব্যবস্থা ভালো। খেলা বন্ধ থাকলে তখন হয়তো বাসায় বসে ফিটনেস নিয়ে টুকটাক কাজ করতে হবে। এছাড়া কিছু করার নেই।’
মোস্তাফিজ আবার বাড়ি যেতে উদগ্রীব। তাই ফিটনেস অনুশীলনের মাঝে চেনা সাংবাদিক দেখে তিনি জানতে চান খেলা চালু হবে কি না তার খবর, ‘লিগ নিয়ে কোনো খবর আছে? কিছু জানলে বলুন, তাহলে বাড়ি চলে যেতে পারি।’
গত সোমবার ক্রীড়া মন্ত্রণালয় ৩১ মার্চ পর্যন্ত দেশে সব খেলা বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। কিন্তু বিসিবির ঘোষণা একটু ভিন্ন। তারা জানায়, ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ বন্ধ থাকবে কেবল দ্বিতীয় রাউন্ড। সূচিতে ১৮ ও ১৯ মার্চ হওয়ার কথা ছিল দ্বিতীয় রাউন্ডের খেলা। তবে ১৯ মার্চেই ফের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে নতুন সিদ্ধান্ত দেওয়ার কথাও জানিয়েছে বোর্ড। তবে প্রধান নির্বাহী নিজামউদ্দিন আভাস দিয়েছেন, সহসাই শুরু হচ্ছে না খেলা।
করোনাভাইরাস পরিস্থিতি খারাপের দিকেই যাচ্ছে। তা বুঝে এরই মধ্যে ক্রিকেটাররা অনুমান করছেন, আপাতত বন্ধই থাকছে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ। তাই কি করবেন, মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন মেহেদি হাসান মিরাজ, ‘সবার আগে কিন্তু জীবন। এর থেকে তো বড় কিছুই হতে পারে না। নিরাপত্তা আগে, তারপর সবকিছু। যদি বাঁচতে পারি, অবশ্যই আমরা ক্রিকেট খেলতে পারব। ক্রিকেট বোর্ড আছে, বাংলাদেশ সরকার আছে; তারা যে সিদ্ধান্ত নেবে, অবশ্যই সবার ভালোর জন্যই নেবে। সবার নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই তারা সিদ্ধান্ত দেবে।’
লিগ যদি দীর্ঘ সময়ের জন্য বন্ধ থাকে, তবে ক্রিকেটাররা পড়বেন ফিটনেস সমস্যায়। ব্যাপারটি তাই এখন থেকেই মাথায় রাখছেন মোস্তাফিজ-মিরাজ-মিথুনরা। যে কারণে তারা চাইছেন দ্রুতই সবকিছু স্বাভাবিক হোক। লিগও মাঠে গড়াক।