নিজস্ব প্রতিবেদক: একদিকে নতুন রিং স্পিনিং ইউনিট থেকে উৎপাদন ও বিক্রির প্রভাব, অন্যদিকে রোটর ইউনিটের সম্পূর্ণ উৎপাদনক্ষমতার ব্যবহার এবং একইসঙ্গে সুতার দর বাড়ার ফলে আয় বেড়েছে মোজাফফর হোসেন স্পিনিং মিলস লিমিটেডের। কোম্পানিটির প্রকাশিত চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২১) অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) মাধ্যমে কোম্পানিটি তাদের চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে। এতে দেখা গেছে, কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৭৩ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল তিন পয়সা। অর্থাৎ আগের বছরের তুলনায় ইপিএস বেড়েছে ৭০ পয়সা। আর প্রথম দুই প্রান্তিক বা ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২১) ইপিএস হয়েছে ৯৭ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৩৯ পয়সা (লোকসান)। এছাড়া ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ১৯ টাকা ১৩ পয়সা, যা ২০২১ সালের ৩০ জুন ছিল ১৮ টাকা ১৬ পয়সা। আর প্রথম দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ দাঁড়িয়েছে চার টাকা ৩৩ পয়সা, অথচ আগের বছর একই সময়ে ছিল সাত টাকা ৫৪ পয়সা (লোকসান)।
আর দ্বিতীয় প্রান্তিকে এই ইপিএস বাড়ার কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের নতুন একটি রিং স্পিনিং ইউনিটের উৎপাদন শুরু হয়েছে এবং বিক্রি বৃদ্ধি পেয়েছে। অন্যদিকে রোটর ইউনিটের সম্পূর্ণ উৎপাদনক্ষমতার ব্যবহার করা হচ্ছে। একইসঙ্গে সুতার দর বেড়ে গেছে, যার ফলে কোম্পানিটির আয় বেড়েছে।
বস্ত্র খাতের ‘বি’ ক্যাটেগরির এ কোম্পানি ২০১৪ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ৩০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১০০ কোটি ৯৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৮২ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১০ কোটি ৯ লাখ ৯৩ হাজার ৩৭৪টি শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে রয়েছে ৩৯ দশমিক ৬১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২১ দশমিক ২৪ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে শূন্য দশমিক ০৪ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ৩৯ দশমিক ১১ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।
এদিকে গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর ২ দশমিক ২২ শতাংশ বা ৭০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ৩০ টাকা ৮০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। ওই দিন কোম্পানিটির ৪১ লাখ ৪৪ হাজার ৩২০টি শেয়ার মোট ২ হাজার ২০২ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ১৩ কোটি ৪৭ লাখ টাকা। ওই দিন শেয়ারদর সর্বনি¤œ ৩০ টাকা ৩০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ৩৪ টাকা ২০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে কোম্পানির শেয়ারদর ১১ টাকা ৮০ পয়সা থেকে ৩৪ টাকা ২০ পয়সায় ওঠানামা করে।
এদিকে ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি তিন শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই সময় শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫২ পয়সা এবং ২০২১ সালের ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৮ টাকা ১৬ পয়সা। আর আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে ১০ টাকা ৩৯ পয়সা (লোকসান)। এর আগে ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরে কোম্পানিটি এক শতাংশ নগদ লভ্যাংশ দিয়েছে। ওই সময় শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ১৯ পয়সা লোকসান এবং ২০২০ সালের ৩০ জুন শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ১৪ টাকা এক পয়সা।