নিজস্ব প্রতিবেদক: পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান বলেছেন, পাটুরিয়া-গোয়ালন্দ অবস্থানে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু নির্মাণ করবে সরকার। তবে আমি সেখানে টানেল নির্মাণ করার পক্ষে। টানেল নির্মাণ করলে সময় ও পদ্মা নদী বাঁচবে।
মঙ্গলবার (২৬ আগস্ট) নগরীর শেরেবাংলা নগরে ডেভলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের (ডিজেএফবি) সদস্যদের সম্মানে ইফতার মাহফিলে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।
পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমার মতে টানেল ব্যয় সাশ্রয়ী। দ্বিতীয় পদ্মাসেতু-পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় টানেল নির্মাণ করা ভালো হবে। দ্বিতীয় যমুনা সেতু নির্মাণের বদলে টানেল নির্মাণ করা ভালো হবে। সেতুর বদলে টানেল নির্মাণ করলে ব্যয় কম হবে ও সময় কম লাগবে। সেতুর বদলে এসব স্থানে টানেল নির্মাণ করা যায় কিনা চিন্তা করা দরকার। প্রধানমন্ত্রীর খুব ইচ্ছা এখানে কিছু হোক। তারপরও বলি আপনারা প্রধানমন্ত্রীর উপর ভরসা রাখেন এখানে টানেল বা সেতু হবে। এখানের মানুষের সমস্যা নিরসন হবে।’
উন্নয়ণ প্রসঙ্গে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, দেশের মালিক জনগণের কাছে বিষয়টি পরিষ্কার হয়ে গেছে। দেশে এখন উন্নয়ন জরুরি। উন্নয়নের বার্তা সবার কাছে পৌঁছে গেছে। সবার কাছে পরিষ্কার উন্নয়নই মৌলিক, উন্নয়নই ভিত্তি। সংস্কৃতি, রাজনীতি যাই কিছু বলুন না কেন, উন্নয়ন সবার চায়। সবার মধ্যে একটু পরিবর্তন এসেছে কেউ হানাহানি চায় না সবাই উন্নয়ন চায়। আগামীতে আরও উন্নয়ন হবে।
তিনি আরও বলেন, আমাদের মানুষের প্রয়োজন উন্নয়ন। তবে দিন শেষে আমাদের দরকার রুটি রুজির সংস্থান, বৈশ্বিক কল্যাণ। বৈশ্বিক কল্যাণের বাইরে আমার অন্য বিষয়ে এতোটা ধারণা নেই। তবে এই কাজ সবাই করছি। এখন উন্নয়ন আগে রাজনীতি পরে।
উন্নয়ন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, গ্রামের মানুষ এখন একনেক সমন্ধে জানে। তারা মঙ্গলবার সমন্ধে জানতে চায়। সাধারণত একনেক সভা মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। তারা আমাকে জিজ্ঞেস করে মঙ্গলবার কি কি প্রকল্প পাশ হবে। কোন মন্ত্রীর কি হলো কোন মন্ত্রী মরে গেল না বেঁচে গেল এটা নিয়ে তাদের আগ্রহ নেই। মানুষের আগ্রহ এখন উন্নয়ন নিয়ে।’
এম,এ,মান্নান বলেন, গণমাধ্যম, আমলা, মন্ত্রী সবাই এক সঙ্গে কাজ করতে হবে। দেশের উন্নয়নে আরও বেশি করে কাজ করতে হবে। পরিকল্পিত উন্নয়ন হয়েছে বলেই দেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের অর্থনীতি শক্ত ভিতের উপর দাঁড়িয়েছে। ফলে যেকোন দুর্যোগে সহজই ভেঙ্গে পড়বে না।
পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী ড.শামসুল আলম বলেন, বাংলাদেশ কোনদিনও শ্রীলংকা হবে না। কেননা আমরা এখনো ঋণ সীমার অনেক নিচে আছি। আমাদের মেগা প্রকল্পগুলো সবগুলোই গুরুত্বপূর্ণ। কোন প্রকল্প ফেইল করবে না। শ্রীলংকার হাম্মাম টোটা বন্দর তৈরি হয়েছে অপরিকল্পিত ভাবে। ফলে তাদেরকে চীনের কাছে ৯৯ বছরের জন্য লিজ দিতে হয়েছে। আমাদের জিডিপির আকার অনেক বড়। আওয়ামীলীগ সরকার রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসার পর থেকেই পরিকল্পিত উন্নয়ন ও অর্থনীতির পথে দেশ পরিচালিত হচ্ছে। আমাদের পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পায় বাজেটের যে আকার ধরা হয় সেটিই প্রতিবছর বাজেটে প্রতিফলন ঘটে। ফলে শ্রীলংকার সঙ্গে তুলনা করে বিরোধী একটা পক্ষ ফায়দা হাসিলের চেষ্ট করছে। যা মোটেও ঠিক নয়।
পরিকল্পনা বিভাগের সচিব প্রদীপ রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে আমরা সতর্ক রয়েছি। অপ্রয়োজনীয় কোন ব্যয় সরকার করে না। জনগণের জন্য দেশের প্রয়োজনে প্রকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। এদেশ এগিয়ে যাচ্ছে এবং এই অগ্রগতি চলমান থাকবে। গণমাধ্যম দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। যেকোন ভুলক্রটি যেমন ধরিয়ে দেওয়া গণমাধ্যমের দায়িত্ব, তেমনি ভাল কাজগুলোও তুলে ধরাটাও কর্তব্য।
পরিসংখ্যান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের সচিব ড.শাহনাজ আরেফিন বলেন, যে কোন উন্নয়ন টেকসই হতে হবে। যেটি টেকসই নয়, সেটি কোন উন্নয়নই নয়। তাই সরকার টেকসই উন্নয়ন করে যাচ্ছে। আমরা সবাই মিলেই কাজ করছি। এ দেশ এককভাবে আমলার, রাজনীতিবিদের বা সাংবাদিকদের নয়। সকলের এই দেশ। তাই সবাই মিলেই দেশকে এগিয়ে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ অনুসারে আমাদের সবাইকে উন্নয়নে সামিল হতে হবে।
ডিজেএফবির সভাপতি হামিদ-উজ-জামানের সভাপতিত্বে ইফতার মাহফিলে অংশ নেন সংগঠনের সহ-সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সাধারণ সম্পাদক সাহোনেওয়ার সহিদ শাহীন, যুগ্ম-সম্পাদক মফিজুল সাদিক প্রমুখ।
দ্বিতীয় পদ্মাসেতু নয়, আমি টানেল নির্মাণের পক্ষে: পরিকল্পনামন্ত্রী
