দ্বৈত করারোপ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি: ভুটান ও কাতারের সঙ্গে চুক্তি করবে বাংলাদেশ

 

নিজস্ব প্রতিবেদক: দ্বৈত করারোপণ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে ভুটান এবং কাতারের সঙ্গে চুক্তি করবে বাংলাদেশ। এ লক্ষ্যে দুটি পৃথক চুক্তির খসড়া অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ খসড়া চুক্তি দুটি অনুমোদন দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন।

বৈঠক শেষে এ প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব শফিউল আলম সাংবাদিকদের জানান, বাংলাদেশ-ভুটান-ভারত-নেপাল (বিবিআইএন) এই চার দেশের ফ্রেমওয়ার্কের আওতায় বাংলাদেশ ভুটানের সঙ্গে অনেকগুলো বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ। বাণিজ্য সুবিধা সম্প্রসারণের জন্য দ্বৈত করারোপণ পরিহার ও রাজস্ব ফাঁকি রোধে দুই দেশ মিলে একটি চুক্তিপত্র তৈরি করেছে। সেটাই মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে।

‘আরও ১০টি দেশের সঙ্গে বাংলাদেশের এ ধরনের চুক্তি রয়েছে’ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘সেই (চুক্তির) বিষয়গুলোও এখানে নিয়ে আসা হয়েছে। করের ডুপ্লিকেশনটা যাতে না হয় সেজন্য চুক্তিটি হচ্ছে।’

শফিউল আলম বলেন, ‘কাতারের সঙ্গে একই ধরনের চুক্তির জন্য ১৯৯৭ সাল থেকে প্রক্রিয়া চলছে। অনেক সভার পর দুই দেশের সম্মতিতে এই চুক্তিপত্র তৈরি করা হয়েছে। সেটিও মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে।’

মন্ত্রিপরিষদ সচিব জানান, এছাড়া বৈঠকে আরও চারটি প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়া হয়। এগুলো হচ্ছেÑ ‘সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০১৬’-এর খসড়া, ‘শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউট আইন ২০১৭’-এর খসড়া, ‘জাতীয় যুব নীতি ২০১৭’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন এবং ‘বাংলাদেশ কর্তৃক রিপাবলিক অব কসোভো’কে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দেওয়ার একটি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০১৬: মন্ত্রিসভার বৈঠকে গতকাল ‘সামুদ্রিক মৎস্য আইন ২০১৬’-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নতুন আইনে সামুদ্রিক মৎস্য অধ্যাদেশে বিভিন্ন অপরাধের জন্য জরিমানার পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।

এ বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম সাংবাদিকদের বলেন, ১৯৮৩ সালে ‘দি মেরিন ফিশারিজ অর্ডিন্যান্স’ করা হয়েছিল। সামরিক শাসনামলে জারি হওয়ায় উচ্চ আদালতের নির্দেশনার আলোকে সেটি বাংলায় রূপান্তর করা হয়েছে। প্রস্তাবিত আইনে তিনটি নতুন ধারা যোগ করে শাস্তির পরিমাণ বাড়ানো হয়েছে।

তিনি জানান, কর্তৃত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে বাধা দিলে, ইচ্ছাকৃতভাবে মৎস্য আহরণের নৌযানের ক্ষতি করলে, লাইসেন্সের শর্ত ভাঙলে এবং অপরাধের প্রমাণ ধ্বংস করলে তিন বছরের জেল ও এক লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডের বিধান ছিল অধ্যাদেশে। প্রস্তাবিত আইনে এসব অপরাধের জন্য সাজা তিন বছর রাখা হলেও জরিমানার পরিমাণ এক লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে পাঁচ লাখ টাকা করা হয়েছে।

নৌযান চিহ্নিতকরণে ব্যর্থতা অর্থাৎ কেউ যদি বাংলাদেশের মৎস্য জলসীমায় মাছ ধরার নৌযান পরিচালনা করেন এবং তা নির্ধারিত নিয়মে মার্কিং না করেন, তার জরিমানা ২৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে এক লাখ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে খসড়ায়।

এছাড়া নৌযানে থাকা ব্যক্তিদের অপরাধের জন্য ওই নৌযানের অধিনায়ককে দায়ী করা হবে জানিয়ে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এ অপরাধে জরিমানার পরিমাণ পাঁচ হাজার থেকে বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হয়েছে।

আগের অধ্যাদেশ অনুযায়ী, জরিমানার এক দশমাংশ টাকা দিয়ে আপসের জন্য বৈঠকে বসা যেত। প্রস্তাবিত আইন পাস হলে আপস বৈঠকের আগে জরিমানার এক পঞ্চমাংশ দিতে হবে।

 

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০