Print Date & Time : 21 June 2025 Saturday 4:20 pm

দ্বৈত ভোটারের চেষ্টায় ছিলেন দুই লাখ সাত হাজার

নিজস্ব প্রতিবেদক: গত বছর দুই লাখ সাত হাজার ৬৩৫ জন ব্যক্তি দ্বৈত ভোটার হওয়ার চেষ্টা করেছিল বলে জানিয়েছেন জাতীয় পরিচয় নিবন্ধন অনুবিভাগের মহাপরিচালক (ডিজি) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম। গতকাল নির্বাচন ভবনের নিজ কার্যালয়ে এ তথ্য জানান তিনি।

এক সাংবাদিক জানতে চান, সার্ভারে অনেকের দুটি এনআইডি সচল থাকছে। ১২ বছর হয়ে গেল ইসির সার্ভারের বয়স। এত বছরেও কেন সার্ভারটি ত্রুটিমুক্ত করা সম্ভব হলো না? জবাবে এনআইডির ডিজি বলেন, ‘১১ কোটি লোকের সার্ভার এটা। আমরা গতবার যখন হালনাগাদ পরিচালনা করি, তখন কিন্তু আমরাই বের করেছি দুই লাখ সাত হাজার ৬৩৫ ব্যক্তি যারা দ্বৈত ভোটার হতে তালিকায় অন্তর্ভুক্তির জন্য চেষ্টা করেছিল। সুতরাং আমরা যে পারছি না, তা নয়। তবে একটি জিনিসকে ম্যাচুর্ড পর্যায়ে আসতে সময় ও রিসোর্স প্রয়োজন।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০১৩ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ৩৯ কর্মকর্তা-কর্মচারীকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। বিষয়টি আমরা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করেছি। বিশ্লেষণে দেখা যায়, প্রকল্পে কর্মরতদের যদি অনিয়ম পাই, সুনির্দিষ্টভাবে চিহ্নিত হলে তাদের চাকরিচ্যুত করা হতো। কিন্তু কয়েকটা কেসে দেখা গেছে, তারা অনেক এক্সপার্ট। তারা চাকরিচ্যুত হওয়ার পর বাইরে গিয়ে একটি চক্র তৈরি করছে। চক্রের মাধ্যমে তারা অনিয়ম-দুর্নীতির অপচেষ্টা চালাচ্ছে। ফলে সিদ্ধান্ত নিয়েছি যদি কোনো কর্মকর্তা-কর্মচারী এনআইডি জালিয়াতি বা এর সঙ্গে সম্পৃক্ত বা সহযোগিতা করে তাহলে শুধু চাকরিচ্যুত নয়, তাদের বিরুদ্ধে মামলাও করা হবে। তারই অংশ হিসেবে লালমনিরহাটের দুই ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে প্রথমবারের মতো মামলা পরিচালনা করছি।’

১২ অক্টোবর ইসি জানিয়েছে, অবৈধভাবে ভোটার করার প্রচেষ্টার অভিযোগে লালমনিরহাটের আদিতমারি উপজেলা ও সদর উপজেলার দুজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরকে চাকরি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। এছাড়া দায়িত্বে অবহেলা ও অনিয়মের মাধ্যমে ভোটার করায় লালমনিরহাটের আদিতমারি উপজেলা থানা নির্বাচন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মো. জুয়েল বাবু এবং সদর থানা নির্বাচন অফিসের ডাটা এন্ট্রি অপারেটর এসএম আজম শাহীর বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় এনআইডি জালিয়াতি, আমি বলব একটা পুরো সিসটেম, যারা এর সঙ্গে জড়িত, তাদের জালিয়াতি। এনআইডি পর্যন্ত আসার আগেই যে জালিয়াতি হচ্ছে, সেগুলোও তো রোধ করতে হবে। মূল শেকড় যদি উঠাতে না পারি, তাহলে কিন্তু জালিয়াতি ঠেকানো অত্যন্ত কঠিন।  মূল শেকড়টা কারা সেটা তো আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারছেন। প্রথম প্রশ্ন, জন্ম নিবন্ধন কে দিচ্ছেন? জন্ম নিবন্ধন যদি দেয়, অনলাইনে যদি আমরা নিবন্ধন সঠিক পাই, তাহলে কিন্তু আইনগতভাবে আমরা জাতীয় পরিচয়পত্র দিতে বাধ্য। এটা একটা সমন্বিত প্রায়স। শুধু নির্বাচন কমিশন ও এনআইডি উইংয়ের একার পক্ষে এ ধরনের দুর্নীতি রোধ করা অত্যন্ত কঠিন। এ জন্য আমরা পরিকল্পনা করছি এ মাসের শেষের দিকে স্থানীয় সরকার, শিক্ষা মন্ত্রণালয়সহ এনআইডি কার্যক্রম সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠক করা হবে। সেখানে বিষয়গুলো তুলে ধরব আমরা। যাতে এনআইডি কর্তৃপক্ষের কাছে আসার আগেই বিষয়গুলো ধরা পড়ে যায় বা জš§ নিবন্ধন, নাগরিকত্ব সনদ, শিক্ষাগত যোগ্যতার জালিয়াতি না করতে পারে।’