শেয়ার বিজ ডেস্ক: দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি এবং ডলারের বিপরীতে মুদ্রার দর পতনের প্রতিবাদে ইরানের রাজধানী তেহরানের গ্রান্ড বাজার বন্ধ করে দিয়ে বিক্ষোভ করেছেন ব্যবসায়ীরা। দোকানপাট বন্ধ করে দিয়ে গত সোমবার রাজপথে প্রতিবাদে অংশ নেন তারা। পার্লামেন্ট অভিমুখে যাত্রা শুরু করলে বিক্ষোভকারীদের ওপর টিয়ার গ্যাস ছুড়েছে দাঙ্গা পুলিশ। পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে আন্তর্জাতিক নিষেধাজ্ঞার জেরে বিপর্যস্ত অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কারণে ২০১২ সালের পর তেহরানে এটিই সবচেয়ে বড় বিক্ষোভ। এদিকে মার্কিন নিষেধাজ্ঞার হুমকি থেকে ইরানের অর্থনীতিকে রক্ষা করতে এক হাজার ৩৩৯টি পণ্য আমদানি নিষিদ্ধ করেছে ইরান। খবর বিবিসি।
২০১৫ সালে ছয় বিশ্বশক্তির সঙ্গে ইরানের স্বাক্ষরিত পারমাণবিক চুক্তির আওতায় ২০১৬ সালে দেশটির ওপর থেকে আন্তর্জাতিক অবরোধ তুলে নেওয়া হয়। গত মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ওই চুক্তি থেকে বেরিয়ে গিয়ে অবরোধ বহালের ঘোষণা দেন। আগামী আগস্টে এ নিষেধাজ্ঞা বহাল ও পারমাণবিক চুক্তি ভেস্তে যাওয়ার আশঙ্কায় ডলারের বিপরীতে পড়তে শুরু করে ইরানের মুদ্রা রিয়ালের দাম। বেসরকারি বৈদেশিক মুদ্রা বাজারে এক ডলারের দাম পৌঁছেছে ৯০ হাজার রিয়ালে। ২০১৭ সালের শেষ নাগাদ ৪২ হাজার ৮৯০ থেকে ট্রাম্পের ঘোষণার আগে এ দাম ছিল ৬৫ হাজার রিয়াল।
রিয়ালের দাম কমায় রোববার ধর্মঘটের ডাক দেন মোবাইল বাজার হিসেবে পরিচিত তেহরানের দুটি শপিং মলের ব্যবসায়ীরা। দেশটির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ আজারি-জাহরমি জানিয়েছেন, সরকারের তরফ থেকে আমদানির ক্ষেত্রে প্রণোদনা (হার্ড কারেন্সি) দেওয়ার ঘোষণা দিলে ব্যবসায়ীরা কাজে যোগ দিয়েছেন।
রিয়ালের দাম কমানো ঠেকাতে গত এপ্রিলে সরকারি ও বেসরকারি মুদ্রা বাজারের মূল্য এক করে দেয় ইরানি কর্তৃপক্ষ। ডলারের দাম ৪২ হাজার রিয়াল নির্ধারণ করে অন্য কোনো দামে বিনিময় নিষিদ্ধ করে দেওয়া হয়। তবে ব্যবসায়ীরা বলছেন, কর্তৃপক্ষ তখন থেকে মুদ্রার চাহিদা মেটাতে ব্যর্থ হয়েছেন।
এছাড়া অর্থনৈতিক সংকটের কারণে গত বছরের ডিসেম্বর এবং এ বছরের জানুয়ারিতে বড় ধরনের সরকারবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। ওই সময়
অন্য শহরগুলোতে তেহরানের চেয়ে বড় বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়।
দেশের সীমান্তের ভেতরে উৎপাদন সম্ভব এমন এক হাজার ৩৩৯ পণ্য আমদানির নিষিদ্ধ করেছেন ইরানের শিল্প ও বাণিজ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ শরিয়তমাদারি। এসব পণ্যের মধ্যে রয়েছে- ইলেকট্রনিক যন্ত্রপাতি, টেক্সটাইল পণ্য, জুতা, চামড়া, ফার্নিচার, ওষুধ প্রভৃতি। মার্কিন নিষেধাজ্ঞার ফলে হুমকির মুখে থাকা ইরানের অর্থনীতিকে স্বয়ংসম্পূর্ণ ও বিদেশি মুদ্রা সংরক্ষণ বাড়ানোর উদ্দেশ্যে এ নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে ইরানে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ
