নিজস্ব প্রতিবেদক: খাদ্য উৎপাদনে বন্যার ধাক্কায় গত অর্থবছরের শেষ দিক থেকে মূল্যস্ফীতি বাড়তে শুরু করলেও দেশে বর্তমানে দ্রব্যমূল্য ‘মোটামুটি স্বাভাবিক’ রয়েছে বলে মনে করছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ। গতকাল বুধবার সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ মত প্রকাশ করেন।
তিনি বলেন, ‘হাওরে যে বন্যা হয়েছে, তাতে আমাদের উৎপাদন কম হয়েছে। এটা বাস্তব কথা। একটা জিনিস ভালো যে, যেটা বলা উচিত না, যেহেতু মানুষের ক্রয়ক্ষমতা আছে এখন, তাই বাজারে যা চায়, তাই দিয়ে কেনে।’
তার এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামের পার্থক্যের তথ্য তুলে ধরে সাংবাদিকরা মন্ত্রীকে প্রশ্ন করতে থাকেন।
জবাবে তোফায়েল বলেন, মোহাম্মদপুর বাজারে যে পণ্যের দাম ১০ টাকা, কারওয়ান বাজারে হয়তো তা ১৫ টাকা। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের পক্ষে তা নিয়ন্ত্রণ করা ‘সম্ভব না’। তবে প্রত্যেক বিভাগ ও জেলায় জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের কার্যক্রম রয়েছে, তারা এসব বিষয় দেখবে।
‘আমি যেটা মনে করি, সব কিছুই মোটামুটি স্বাভাবিক আছে। হয়তো কোনো একটা জায়গায় একটা সমস্যা হয়েছে। আপনি পেঁয়াজের জন্য গুলশানের ল্যাভেন্ডারে যদি যান, আমি নিজেও যাই, সেখানে পেঁয়াজের দাম আগে যা ছিল, এখনও তাই আছে।’
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) তথ্য অনুযায়ী, গত অর্থবছরের ১২ মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ছয় দশমিক শূন্য এক শতাংশ, যা আগের অর্থবছর ছিল চার দশমিক ৯০ শতাংশ ছিল।
দ্রব্যমূল্য আরও বাড়বে কি-না, এমন প্রশ্নে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আশা করি না। কারণ বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। আমাদের দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হবে, যাতে কোরবানির ঈদে আরও ভালো করে মনিটরিং করা হয়। মোবাইল কোর্টের বিষয়ে আরও দুই সপ্তাহ সময় পাওয়া গেছে সুপ্রিম কোর্ট থেকে।’
এ সময় এক সাংবাদিক মন্ত্রীকে বলেন, রোজার আগে যেদিন তার সঙ্গে ব্যবসায়ীদের মিটিং হয়, সেদিন চিনির কেজি ছিল ৫৪ টাকা। ওই বৈঠকের পর দাম চার টাকা বেড়ে যায়।
উত্তর দিতে গিয়ে বাণিজ্যমন্ত্রী হাসতে হাসতেই বলেন, ‘না না, এটা তো খারাপ কথা। আমার সাথেই…।’
ওই সাংবাদিক তখন বলতে থাকেন, গত এক সপ্তাহে চিনির দামে বেড়েছে ১৪ টাকা। মিল গেটে দাম।
জবাবে মন্ত্রী বলেন, ‘আমার বাসার নিচে একটা মুদি দোকান আছে। আমার ড্রাইভার সেখানে গিয়ে দেখে দাম বেশি। পরে ওরে নিয়া আমি ল্যাভেন্ডারে গেলাম। সেখানে ২০ টাকা কম।’
শেষে মন্ত্রী বলেন, ‘যাই হোক, আমরা খোলামেলা আলোচনা করলাম, আমরা জানতে পারলাম, অ্যান্ড উই উইল টেক প্রোপার অ্যাকশান।’
১৯৯৮ ও ২০০৮ সালের বন্যার প্রসঙ্গ তুলে মন্ত্রী বলেন, ‘দশ বছর পরপর আমরা এ রকম একটা বন্যা লক্ষ করেছি। আমি অনেকবার মন্ত্রী ছিলাম। সচিবালয়ে এ রকম পানি আমি দেখিনি। আমি এখান থেকে যাওয়ার সময় সিঁড়ি থেকে গাড়িতে উঠেছি।
‘আগামী বছর এগুলো আমাদের থাকবে না। অত্যন্ত ভালোভাবে এটার ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যাতে ঢাকা শহরে জলাবদ্ধতা না হয়।’