ধর্মঘটে কেন বাস বন্ধ হয় জানে না বিআরটিএ

নিজস্ব প্রতিবেদক: ধর্মঘটে কেন বাস বন্ধ হয়, সে সম্পর্কে কোনো ধারণা নেই বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআরটিএ) চেয়ারম্যান নূর মোহাম্মাদ মজুমদার। গতকাল রাজধানীর বনানীতে নিরাপদ সড়ক দিবস উপলক্ষে বিআরটিএ প্রধান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এমন কথা বলেন তিনি।

দক্ষিণের জেলা খুলনায় বিএনপির রাজনৈতিক সমাবেশে বাস বন্ধ রয়েছে। এর আগে ময়মনসিংহে বিএনপির সমাবেশেও একই ঘটনা ঘটে। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে সাধারণ লোকজনকে। এ সম্পর্কে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘অফিশিয়ালি আমরা জানি না, কোনো চিঠি পাইনি। পরিবহন মালিক-শ্রমিকরা কখন ধর্মঘট করে আমরা জানি না।’

এ সময়ে ঢাকায় নিরাপদ সড়কের গুরুত্ব তুলে ধরে বিআরটিএ চেয়ারম্যান বলেন, ‘সবাইকে আইন মেনে চলতে হবে, আমাদের যে জনবল রয়েছে দেশের ১৭ কোটি মানুষের জন্যে যথেষ্ট নয়। আমরা সবাই যদি আইন মেনে চলি, তাহলে কোনো জনবলেরই দরকার হয় না। আইন মেনে যদি সড়কে চলি, তাহলে কোন দুর্ঘটনা ঘটবে না। আইন না মানলে শাস্তির আওতায় আনছি। আমাদের ম্যাজিস্ট্রেটরা পদক্ষেপ নিচ্ছেন, জেলা-উপজেলায় নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটরা পদক্ষেপ নিচ্ছেন, হাইওয়ে পুলিশ রয়েছে। ’

সড়ককে নিরাপদ করতে মালিক সমিতির দায়িত্ব রয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, শ্রমিক সংগঠনেরও দায়িত্ব রয়েছে। সড়ক বিভাগেরও দায়িত্ব রয়েছে, ত্রুটিপূর্ণ রাস্তা ত্রুটিমুক্ত করতে। পথচারী ও যাত্রীদেরও দায়িত্ব রয়েছে। সব স্টেকহোল্ডার যদি ইতিবাচক না হয়, তাহলে গণপরিবহনে সফলতা আনা কঠিন।

সড়কে নিরাপদ করতে ১১১ সুপারিশের অধিকাংশ বাস্তবায়িত হয়েছে বলে মনে করেন নূর মোহাম্মাদ। বলেন, বাকিগুলো বাস্তবায়নাধীন। যে সুপারিশ রয়েছে সেগুলোতে সব স্টেকহোল্ডারই দায়বদ্ধ। টার্মিনাল, বিশ্রামাগার তৈরির কাজ চলছে। সরকার ফুটওভার, জেব্রাক্রসিং করে দিয়েছে, কিন্তু পথচারীরা ব্যবহার করে না। লাইসেন্সবিহীন, বেপরোয়া মোটরসাইকেল এ জন্য পদ্মা সেতুতে ওঠার অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। মোট দুর্ঘটনার ৪০ শতাংশের বেশি ঘটে মোটরসাইকেলে। বিধি চূড়ান্ত করা হচ্ছে। আইন সংশোধন করা হচ্ছে। ৫/৭ জন ম্যাজিস্ট্রেট দিয়ে ঢাকা শহরে সড়ক নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না।

আইনের বিধান অনুয়ায়ী আনফিট গাড়ি রাস্তায় চলবে না। এজন্য ১ হাজার ৭২৩ অভিযান পরিচালনা করে ১১ হাজার ৫৭৪টি মামলা হয়েছে। আর জরিমানা করা হয়েছে ৩ কোটি ৩৫ লাখ ৬৩ হাজার ৭৫০ টাকা এবং ডাম্পিং করা হয়েছে ২০৬টি বাস।

তিনি বলেন, কয়েকশ ম্যাজিস্ট্রেট দিলে আমি হয়তো আরও ফলাফল দিতে পারব। এ জন্য সরকারের কাছে ২ হাজার ৩১৫ জনবলের জনবলের চাহিদাপত্র দেয়া হয়েছে।

প্রসঙ্গত, আজ জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস। এ উপলক্ষে ঢাকার ৪টি স্থানে (মৎস্য ভবন মোড়, সাইন্সল্যাব মোড়, বাংলামোটর মোড়, মালিবাগ চৌধুরীপাড়া আবুল হোটেল সংলগ্ন মোড় এলাকা) জনসচেতনতামূলক রোড শো পরিচালনা করা হবে।

এ কর্মসূচিতে বিআরটিএ’র পাশাপাশি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি), নিরাপদ সড়ক চাই, ব্র্যাক, রেড ক্রিসেন্ট ও স্কাউট সদস্যরা অংশ নেবে। জেব্রাক্রোসিং ও ফুটওভারব্রিজ ব্যবহার, ট্রাফিক আইন মেনে চলার বিষয়ে পথচারীসহ পরিবহন শ্রমিকদের সচেতন করার নিমিত্ত লিফলেট, স্টিকার বিতরণ করা হয়।

ঢাকায় কেন্দ্রীয়ভাবে কর্মসূচি পালনের পাশাপাশি জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে যথাক্রম জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের নেতৃত্বে সংশ্লিষ্টদের নিয়ে জাতীয় নিরাপদ সড়ক দিবস-২০২২ র‌্যালি, আলোচনা সভা এবং সপ্তাহব্যাপী জনসচেতনতামূলক বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০