কাজী সালমা সুলতানা: ধর্মীয় উৎসব বাঙালি সংস্কৃতির অংশ। ঈদ, পূজা, বড়দিন, বৈসাবি উৎসব, বৌদ্ধ পূর্ণিমাÑএসব মিলেই এদেশের মানুষের আনন্দ। বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার ‘হিন্দু-মুসলমান’ কবিতায় বলেছেন, ‘মোরা এক বৃন্তে দুটি কুসুম হিন্দু-মুসলমান। মুসলিম তার নয়নমণি, হিন্দু তাহার প্রাণ।’ তিনি আরও বলেছেন, ‘সুন্দরের ধ্যান, তার স্তব গানই আমার উপাসনা, আমার ধর্ম। যে কুলে, যে সমাজে, যে ধর্মে, যে দেশেই জš§গ্রহণ করি, সে আমার দৈব। আমি তাকে ছাড়িয়ে উঠতে পেরেছি বলেই কবি (প্রতিভাষণ: নজরুল ১৯২৯)।’ জাতি ধর্ম, বর্ণ ও সম্প্রদায়ের ঊর্ধ্বে উঠে তিনি লিখেছেন, ‘গাহি সাম্যের গান, যেখানে আসিয়া এক হয়ে গেছে সব বাধা-ব্যবধান, যেখানে মিশেছে হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলিম, খ্রিস্টান।’ তিনি আরও লিখেছেন, ‘মানুষের চেয়ে বড় কিছু নাই নহে কিছু মহীয়ান, নাই দেশ-কাল-পাত্রের ভেদ, অভেদ ধর্ম জাতি, সব দেশে, সব কালে, ঘরে ঘরে তিনি মানুষের জ্ঞাতি।’
মহাত্মা গান্ধীকে যখন জিজ্ঞেস করা হয়, তিনি হিন্দু কি নাÑতিনি বলেন, ‘হ্যাঁ, আমি তা-ই। এছাড়া আমি একজন খ্রিস্টান, একজন মুসলমান, একজন বৌদ্ধ ও একজন ইহুদি।’ আবার লালন শাহের ভাষায়, ‘সব লোকে কয়, লালন কী জাত সংসারে? লালন বলে, জাতের কী রূপ দেখলাম না এই নজরে।’
বাংলাদেশের স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান অসাম্প্রদায়িক চেতনাকে ধারণ করতেন। তিনি হিন্দু-মুসলিম কাউকে আলাদা করে না দেখে মানুষ হিসেবে দেখেছেন। বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, ‘ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। সকল ধর্মের মানুষ নিজ নিজ ধর্ম পালন করবে, কেউ কাউকে বাধা দিতে পারবে না।’
বাঙালি হিন্দু সম্প্রদায়ের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা। দুর্গোৎসব উপলক্ষে প্রতিবারেই সারাদেশে আনন্দঘন আবহের সৃষ্টি হয়। এবারও দেশব্যাপী বইছে নির্মল সম্প্রীতি থেকে উৎসারিত উৎসবের ফাল্গ–নধারা। তা অব্যাহত থাকুক প্রতিটি বাঙালির মনে। হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবাইকে শারদীয় শুভেচ্ছা।
যুগ যুগ ধরে এই বাংলায় হিন্দু, মুসলমান, খ্রিস্টান, বৌদ্ধÑসব ধর্মের মানুষ একসঙ্গে মিলেমিশে জীবনযাপন করছে, নিজ নিজ ধর্মের উৎসব-পার্বণের আনন্দ একে অন্যের সঙ্গে ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। নানা ধর্মের এমনই সব বর্ণিল পার্বণের মাঝে জীবন চলে আমাদের এ অঞ্চলের মানুষের। এখানে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য বলা হয়, ১২ মাসে ১৩ পার্বণ তাদের। ইসলাম ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসব ঈদ। আমাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠানের সাধারণত দুটি রূপ লক্ষ করা যায়। একটি অংশ হচ্ছে ধর্মীয় আচার, আরেকটি অংশ সামাজিক আচার। এই সামাজিক অংশটুকু ধর্মীয় বিশ্বাসের সীমা ছেড়ে সমাজের সব মানুষের কাছে হয়ে ওঠে আনন্দের। সমাজের সবাইকে নিয়ে আনন্দ করার মাঝে লুকিয়ে থাকে প্রকৃত উৎসবের আমেজ। ধর্মের এই সর্বজনীন অংশটুকুই সমাজের সব মানুষের মাঝে সৃষ্টি করে ভিন্ন এক আবহ। আর এজন্যই বলা হয়ে থাকেÑ‘ধর্ম যার যার, উৎসব সবার।’ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উৎসবের অংশটুকু প্রকৃতপক্ষে সমাজকে সুদৃঢ় বন্ধনে আবদ্ধ করে। সমাজে সৃষ্টি করে সম্প্রীতির বন্ধন, যার মূলকথা সমাজের মধ্যে প্রেম, মৈত্রী ও শান্তি।
আবহমানকাল থেকেই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির মাঝে বসবাস করে আসছে এ অঞ্চলের মানুষ। এখানকার বাসিন্দাদের মধ্যে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান একটি সুপ্রাচীন ঐতিহ্য। রক্তের বন্ধন না থাকলেও একে অন্যের আপদ-বিপদে পাশে দাঁড়ানোর কৃষ্টি এখানকার মানুষের সহজাত। বিশ্বের অন্য কোথাও এমন সহমর্মিতা লক্ষ করা যায় না। এখানকার বাসিন্দারা নিজেরা সাধারণত প্রতিবেশীর জন্য বিপদ বা সমস্যার কারণ হয় না, বরং একটি পরিবারের মতোই অবস্থান করে ভিন্ন পরিবারের বাসিন্দা হয়েও। সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থান এখানে সবসময় বিরাজমান। বিভিন্ন ধর্মের মানুষ এখানে বসবাস করে, কিন্তু সৌহার্দ্যপূর্ণ অবস্থানের জন্য ধর্ম কখনোই প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায়নি।
ভারতবর্ষের বাসিন্দাদের এমন সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক আর কোনোখানে দেখা যায় না, তবে স্বাধীনতার পর বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুদৃঢ় হয়েছে। এ কারণেই ব্রিটিশ শাসনের অবসান ঘটিয়ে ভারবর্ষের স্বাধীনতা আন্দোলনে বা ভারতবর্ষে রাজনৈতিক দল প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে প্রাথমিকভাবে অসাম্প্রদায়িক চেতনারই প্রতিফলন ঘটার বিষয়টি সুস্পষ্ট। তাই ধর্মের বিষয়টিকে কেন্দ্র করে মানুষের মধ্যে বিভেদের রেখা টানা শুরু করে ব্রিটিশ শাসকরা। তাদের শাসন ব্যবস্থাকে প্রলম্বিত করতে ধর্মের বিষয়কে সামনে নিয়ে আসে, যদিও ব্রিটিশ শাসকেরা এ ভূখণ্ডের অধিকাংশ জনগোষ্ঠী প্রধান যে দুটি ধর্ম হিন্দু ও মুসলমান, তার কোনোটিতেই বিশ্বাসী ছিল না। তবুও এই বিষয়টিকে সামনে টেনে এনে মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে তারা। সে সময় থেকেই মুসলমান ও হিন্দু ধর্মের মধ্যে সৃষ্টি হয় দ্বন্দ্ব। তার পরও রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত অধিকাংশ জনগোষ্ঠীর মধ্যে এ বিভেদ তেমন রেখাপাত করতে পারেনি।
হিন্দু-মুসলমান ঐক্যবদ্ধভাবে ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন করেছে। ব্রিটিশদের কূটরাজনীতির কারণে ১৯৪৬ সালে অবিভক্ত বাংলায় হিন্দু-মুসলিম সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা বাধে, যার পরিণতিতে ১৯৪৭ সালে বাংলা বিভক্ত হয়। তবে ভারত বিভক্তির ঘটনাটি ঘটে ব্রিটিশদের সৃষ্ট সেই ধর্মীয় বিভেদের সূত্র ধরেই। অথচ ভারতের স্বাধীনতার প্রশ্নে ধর্ম কখনোই বিবেচ্য বিষয় ছিল না। ভারত বিভক্তির জন্য যেসব নেতাকে দায়ী করা হয়, তাদেরও অধিকাংশই ভারতের বিভক্তিতে বিশ্বাসী ছিলেন না। পাকিস্তানের জনক বলে খ্যাত মুহম্মদ আলী জিন্নাহ নিজেও প্রথম দিকে ভারত বিভক্ত করে স্বাধীনতা অর্জনের বিষয়ে বিশ্বাসী ছিলেন না। পরিস্থিতি ক্রমেই তাকে সেদিকে ঠেলে দিয়েছিল। আর সেই পরিস্থিতিতে ইসলাম ধর্মের ভিত্তিতে পাকিস্তানের সৃষ্টি হয়। এই পাকিস্তান সৃষ্টির পর সুখকর অনুভূতি আর পাওয়া যায়নি। ধর্মের ভিত্তিতে দেশ বিভাগের ফলে ব্যাপকভাবে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার সৃষ্টি হয়। ভারতে মুসলমানদের ওপর এবং তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে বা আজকের বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর নিধনযজ্ঞ শুরু হয়। সে সময়কার নেতারা এ দাঙ্গা নিয়ন্ত্রণ করতেও ব্যর্থ হয়েছিলেন। নেতাদের অপরিণামদর্শিতার কারণে অসংখ্য মানুষকে প্রাণ হারাতে হয়, যা এ ভূখণ্ডে অতীতে কখনোই ঘটেনি।
প্রকৃতপক্ষে পাকিস্তান সৃষ্টির পর থেকে এখানে মুসলমান ও হিন্দুদের মধ্যে ধর্মীয় বিভেদের বিষয়টি সামনে চলে আসে। কতিপয় রাজনৈতিক নেতার পদবি প্রাপ্তির বিষয়টি নিশ্চিত করতে আবহমানকালের ঐতিহ্যটি ম্লান হয়ে পড়ে। এ সময়ে পূর্ব পাকিস্তান থেকে অসংখ্য হিন্দু ভারতে এবং ভারত থেকে অসংখ্য মুসলমান পূর্ব পাকিস্তানে আশ্রয় নেয়। পাকিস্তানের স্বাধীনতায় ধর্মের বিষয়টি প্রাধান্য পেলেও বাংলাদেশের গণমানুষের মুক্তির সংগ্রাম চলেছে ধর্মের বিষয়টিকে পেছনে ফেলে। কারণ ধর্মের বিশ্বাসে পাকিস্তানের সৃষ্টি হলেও বাংলাদেশের মানুষের ওপর পশ্চিম পাকিস্তানিদের শোষণ-নিপীড়ন চলেছে ধর্মের বিশ্বাসের বাইরে। রাষ্ট্র পরিচালনা করতে গিয়ে তারা নাগরিকদের মধ্যে ধর্মের বিষয়টি আর বিবেচনায় রাখেনি। এদেশের সম্পদ লুটপাটের সঙ্গে এখানে বসবাসরত মুসলমানদের স্বার্থও কুক্ষিগত হয় পশ্চিম পাকিস্তানের শাসকদের দ্বারা। প্রকৃত রাষ্ট্রীয় শোষণ-নিপীড়নের ক্ষেত্রে ধর্ম কোনো বিবেচ্য বিষয় থাকে না, তা বিবেচনায় রাখার কোনো সুযোগও নেই। আর তাই বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে পাকিস্তানের দ্বি-জাতি তত্ত্বের কবর রচনা করে। ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে স্বাধীনতা সংগ্রাম পর্যন্ত দীর্ঘ আন্দোলন সংগ্রাম এগিয়ে চলেছে অসাম্প্রদায়িক চেতনায়। মুসলমান, হিন্দু, খ্রিস্টান, বৌদ্ধসহ সব মানুষের অর্থাৎ ধর্ম, বর্ণ, গোত্র নির্বিশেষে সব মানুষের অংশগ্রহণের স্বাধীনতার সংগ্রাম এগিয়ে গেছে এবং মহান মুক্তিযুদ্ধে এদেশের সব মানুষ জীবনপণ যুদ্ধ করেছে। তাই স্বাধীন বাংলাদেশের মতো রাষ্ট্রে কোনো বিশেষ ধর্মের অনুসারীদের প্রাধান্য পাওয়ার প্রশ্নটি অবান্তর হয়ে পড়ে। স্বাধীনতার পর আমাদের সংবিধানও সে বিষয়টি নিশ্চিত করেছিল। তাই রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতিতে স্থান পেয়েছিল ধর্মনিরপেক্ষতা।
বর্তমান সময়ে সেই সম্প্রীতিতে আঘাত বেশ প্রকট হয়ে উঠেছে, যাকে আমরা সাম্প্রদায়িকতা বলে থাকি। সাম্প্রদায়িকতা বলতে ধর্ম, বর্ণ, জাতি, গোত্র প্রভৃতি নিয়ে পার্থক্য করাকেই বোঝায়। সমাজে বিভিন্ন ধর্ম-বর্ণের উপস্থিতি থাকবেই। ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতা সম্পূর্ণ আলাদা বিষয়। সাম্প্রদায়িকতা মানুষকে পশুতে পরিণত করে, মানুষের সঙ্গে মানুষের সম্মান-ভালোবাসাকে আঘাত করে। এই সাম্প্রদায়িকতার কারণে বর্তমান বিশ্বে মানুষের জীবন বিপন্ন হচ্ছে। এই উপমহাদেশেও অনেক সময় স্বার্থান্বেষী ব্যক্তি-গোষ্ঠী ভিন্ন ধর্মের বিশ্বাস ও লোকদের ওপর আক্রমণ করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি নষ্ট করার চেষ্টা করেছে। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় বাংলাদেশ স্বাধীন হলেও সেই চেতনা ভূলুণ্ঠিত হয় রাজনৈতিক শঠতার কারণে। স্বাধীনতার চেতনায় যে ধর্মনিরপেক্ষতা সাংবিধানিক মর্যাদা লাভ করে, সেটিও পরিবর্তিত হয়ে যায় ধর্মীয় বিশ্বাস নয়, রাজনৈতিক অসততার কারণে। এ কারণে সম্প্রতি আমাদের দেশের কিছু কিছু ঘটনা এ অঞ্চলের সুপ্রাচীন ঐতিহ্য এবং আমাদের মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ম্লান করে দিচ্ছে। কোথাও কোথাও প্রতিমা ভেঙে ফেলার মতো ন্যক্কারজনক ঘটনাও ঘটে। দেখা যায়, কোথাও কোথায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা এসব ঘটনার হোতা। এসব ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন হিসেবেই দেখতে চাই। তার পরও যখন গণমাধ্যম বা সামজিক যোগাযোগমাধ্যমে এমন সংবাদ আসে, তখন কষ্ট লাগে। যারা এসব ঘটনার পেছনের কুশীলব, খোঁজ নিলে দেখা যায় তারা নিজেরা কখনও ঠিকমতো নিজের ধর্ম পালন করে না। তারা ধর্মীয় অনুশাসন মেনে চলে না। কিন্তু অন্য ধর্মের অনুসারীদের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের নিজের অশুভ চিন্তার প্রতিফলন ঘটায়। তারা প্রকৃতপক্ষে নিজের ধর্ম সম্পর্কে সঠিকভাবে জানেও না, বা নিজের ধর্মের আদেশ-নিষেধও মানে না। এসব অপকর্মের পেছনে থাকে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ভয়-ভীতি দেখানো। এভাবে ভয়-ভীতি দেখিয়ে সম্পদ গ্রাস করাই থাকে তাদের মূল লক্ষ্য। আবার দেখা যায়, অন্য ধর্মের আচার-অনুষ্ঠানে বাধা সৃষ্টির পেছনে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যও নিহিত থাকে। একশ্রেণির রাজনীতিকের কারণে বা কিছু অতিলোভী মানুষের সম্পদ দখলের মানসিকতার কারণে হিন্দুরা নির্যাতনের শিকার হয়। ধর্মভিত্তিক রাজনীতির এটাই হচ্ছে কূপমণ্ডূকতা।
ইসলাম ধর্মের বড় দুটি উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা। এ দুটি বড় অনুষ্ঠানের একটি অংশ হলো সকালে নামাজ আদায় করা বা সকালে নামাজ আদায় শেষে পশু কোরবানি দেয়া। কিন্তু আরেকটি অংশ হচ্ছে বাড়িতে বাড়িতে মিষ্টান্ন বা মজাদার খাবার তৈরি করা এবং আত্মীয়স্বজন ও পাড়াপ্রতিবেশীর মাঝে তা বিলানো বা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে খাওয়া। একইভাবে হিন্দুদের বড় উৎসব দুর্গাপূজায় প্রতিমা তৈরি, তাতে পূজা দেয়া বা প্রতিমা বিসর্জন দেয়াÑএসব হচ্ছে যারা হিন্দু ধর্মে বিশ্বাসী তাদের জন্য। কিন্তু এ পূজাকে কেন্দ্র করে যে উৎসব, যেমন নাচ, গান, বাজনা, প্রসাদ বিতরণ বা মজাদার খাবার বিতরণ, সেটি কিন্তু সবাই মিলে উপভোগ করা হয়। এখানে ধর্মীয় বিশ্বাসের প্রয়োজন হয় না; হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানÑসবাই উপভোগ করে। এখানেই ধর্মের সামাজিক রূপ নিহিত। এখানে নিহিত রয়েছে ধর্মের মাধ্যমে সামাজিক সম্প্রীতি ও সামাজিক বন্ধন সৃদৃঢ় হওয়ার মন্ত্র। এই মন্ত্রই পারে আমাদের দেশে শান্তি ও কল্যাণ নিশ্চিত করে দেশকে এগিয়ে নিতে এবং মানুষের প্রতি মানবিকতা ও অসাম্প্রদায়িকতাকে জাগ্রত করতে।
গণমাধ্যমকর্মী
salma15august@gmail.com