ধাঁধা ও ধান্ধায় বিপর্যস্ত ধান ব্যবস্থাপনা আধুনিক ভর্তুকি বরাদ্দ প্রস্তাব

ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব

কৃষক হিসেবে আত্মপরিচয়ের সংকট, পেশাগত মর্যাদাহীনতা, প্রান্তিক সামাজিক অবস্থান, ধানিজমির একক ফলন নির্ভরতা, বন্যা, জলাবদ্ধতা, খরা, সার ও সেচ সংকটজনিত ফসলহানি, কৃষিঋণ ও ভর্তুকির অপব্যবস্থাপনা, অনিয়মিত শস্য উৎপাদন, উৎপাদন খরচের বিপরীতে চরম মূল্য বিপর্যয়, উচ্চ খরুচে কৃষি শ্রম, গতরখাটা কষ্টকর শ্রমে অনীহা, কৃষিতে যন্ত্র ব্যবহারের পশ্চাদপসরণতা, চাহিদার সঙ্গে অসমন্বিত কৃষিপণ্যের বাম্পার উৎপাদন, কৃষিপণ্য উৎপাদনের সঙ্গে আমদানির অসামঞ্জস্য, কৃষিজমির সংকোচন ও বিচারহীন শিল্পব্যবসা আবাসনজনিত বেদখল, গ্রামে ভার্টিক্যাল ভিলেজ সম্প্রসারিত না করা, জমির মালিকানাজনিত জটিলতা, উৎপাদিত ফলনের নিরাপত্তাহীনতা, ব্যক্তি ও জাতীয় পর্যায়ে ফলন সংরক্ষণের অক্ষমতা, পারিবারিক কৃষির জন্য সহায়ক নীতি ও কর্মসূচির অভাব, কৃষিঋণ সংস্কার, বৃহৎ কৃষি অবকাঠামো সুবিধার অপ্রতুলতা ও কৃষি বিনিয়োগে অনাগ্রহ, যথাস্থানে কার্যকর প্রণোদনার অভাব, কৃষক-উৎপাদক-ক্রেতা-পাইকার-মজুদদার-ভোক্তার পারস্পরিক সম্পর্কে টানাপড়েন, উপকূলে লবণ পানির আগ্রাসন, কৃষিপণ্য বাজারজাতকরণ ও পরিবহনে বহু স্তরের রাজনৈতিক ও পুলিশি চাঁদাবাজি, বালাইয়ের আগ্রাসন এবং জলবায়ু বিপর্যয়জনিত ফসলহানির মতো অনেক কারণে বাংলাদেশের কৃষি ও খাদ্যনিরাপত্তা বিঘ্নিত ত হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। এর বাইরেও আছে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিতে ভাটা এবং সীমান্ত অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গা শরণার্থীদের বর্ধিষ্ণু খাদ্য চাহিদার মতো কিছু পরোক্ষ সংকটও।
এত বেশিসংখ্যক অনিশ্চয়তার ফলে দেখা যাচ্ছে, ৮৩ শতাংশের বেশি কৃষকের আয় পরিবারের চাহিদার তুলনায় যথেষ্ট নয় এবং এ কারণে ৬৫ শতাংশেরও বেশি কৃষক নানা সময় অন্য পেশায় চলে যেতে চান (অ্যাকশনএইড ও খাদ্যনিরাপত্তা নেটওয়ার্ক পরিচালিত জরিপ)। ২০০০ সাল পরবর্তী সময়ে দেশে প্রতি বছর অন্তত ৬৮ হাজার ৭৬০ হেক্টর আবাদি জমি অকৃষি খাতে চলে যাচ্ছে (বছরপ্রতি মোট আবাদযোগ্য জমির প্রায় এক শতাংশ-বাংলাদেশের কৃষিজমি বিলুপ্তির প্রবণতা এসআরডিআই)। এ অবস্থায় ধান উৎপাদনে মণপ্রতি প্রায় ২০০ টাকা লোকসান হওয়া, সরকার নির্ধারিত মূল্য কৃষকের হাতে না পৌঁছানো, কৃষি ভর্তুকি প্রদানের পদ্ধতিগত ভুল, কৃষি আধুনিকায়নের অভাব হেতু অতি উচ্চ কৃষি শ্রমের খরচ, আঞ্চলিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীকেন্দ্রিক ধান-চাল সংগ্রহ ও মজুদদারি এবং মাফিয়া চাল আমদানির বিষয়গুলো নিয়ে স্বল্পমেয়াদি পদক্ষেপের বিপরীতে দীর্ঘমেয়াদি আধুনিক ও টেকসই পরিকল্পনা গ্রহণ জরুরি। ধান বাংলাদেশের খাদ্য নিরাপত্তার প্রধান উপাদান বিধায় ধান চাষের সঙ্গে সম্পর্কিত সমুদয় ব্যবস্থাপনাগুলোকে সমন্বিত করে দুর্নীতিহীন আধুনিক ব্যবস্থাপনার একটা সৎ রাষ্ট্রীয় চেষ্টা থাকা চাই।
সরকার বছরে ৯ হাজার কোটি টাকার কৃষি ভর্তুকি দিচ্ছে, আপতদৃষ্টিতে এটা বড় একটা সংখ্যা হলেও ২০১৮-১৯ অর্থবছরের জন্য চার লাখ ৬৪ হাজার ৫৭৩ কোটি টাকার বাজেটের মাত্র এক দশমিক ৯ শতাংশ। যদিও কল্যাণ রাষ্ট্র চিন্তায় বলা হয়, কৃষি ভর্তুকিতে জাতীয় বাজেটের অন্তত চার থেকে পাঁচ শতাংশ বরাদ্দ বাঞ্ছনীয়। তবে কৃষি ভর্তুকির পরিমাণের চেয়ে ভর্তুকি দানের পদ্ধতিগত দুর্বলতা ও দুর্নীতিই সমস্যার প্রধান কারণ। সরকার প্রদত্ত ভর্তুকি স্থানীয় অকৃষক রাজনৈতিক নেতাকর্মীরাই ভোগ করছেন সার বীজের ডিলার, শুল্কমুক্ত যন্ত্র আমদানির ডিলার, ধান-চাল সংগ্রহের সরবরাহকারী হিসেবে আবির্ভূত হয়ে। একদিকে তারা সরকার নির্ধারিত সার ও সেচের দামের সঙ্গে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করছে, অন্যদিকে সরকার নির্ধারিত ধান-চাল মূল্যে তোয়াক্কা না করে মাফিয়াচক্র তৈরি করে সুবিধামতো নিন্ম বাজার মূল্য তৈরি করছে। ফলে ফলন উৎপাদন ও বিপণনের উভয় পর্যায়েই কৃষক প্রতারিত, অর্থাৎ কৃষি ভর্তুকির সুফল রাজনৈতিক ধান্ধায় হারিয়ে যাচ্ছে। ৯ হাজার কোটি টাকার কৃষি ভর্তুকিও কিষান-কিষানীর মুখে সামান্যতম হাসি ফুটাতে ব্যর্থ। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ এখনও অর্থনৈতিক প্রান্তিক ও কৃষক পর্যায়ে রেশন দেওয়ার মতো মহৎ ব্যবস্থা প্রবর্তনে ব্যর্থ হয়েছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায় বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী ভাতা দেওয়া হয়, অনিয়মিতভাবে ১০ টাকা কেজির চাল বিতরণ প্রকল্প চলে কিন্তু তা সঠিক হাতে সঠিক পরিমাণে পৌঁছে কি না, তা নিয়ে বিস্তর সন্দেহের অবকাশ আছে।
পুরো ভর্তুকি ব্যবস্থাই যে অকার্যকর সেটা বলা বড় অন্যায় বটে, বর্তমানে ধান উৎপাদন রেকর্ড ব্রেক করেছে, এটা একটা বড় সাফল্য। তথাপি নৈরাজ্যকর ব্যবস্থাপনার কারণে কৃষক বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছেন, চাষে আগ্রহ হারিয়ে অন্য পেশায় ঢুকছেন, উপায় না পেয়ে কর্মের খোঁজে শহরে এসে বস্তিতে ভিড় করছেন। তাই ভর্তুকি ব্যবস্থা এবং সরকারের খাদ্যপণ্য সংগ্রহ ব্যবস্থার সংস্কার করে আধুনিক ও দুর্নীতিমুক্ত করা সময়ের দাবি। সরকারের হাতে নাগরিক ডেটাবেজ আছে যেখানে পেশার উল্লেখ আছে। আছে উপজেলা পর্যায়ে আঞ্চলিক কৃষি অফিস। কৃষি অফিস আন্তরিক হলে খুব সহজেই গ্রামভিত্তিক ভূমিসহ, ভূমিহীন ও বর্গাচাষির তথ্যব্যাংক তৈরি করা যায় সম্ভাব্য চাষের জমির সঠিক পরিমাণসহ (ডিজিটাল ভূমি ব্যবস্থাপনা ডেটাবেজ দিয়ে সেটা যাচাই করে মালিক-বর্গাচাষির ফলন ভাগাভাগির পরিমাণও করা যায়)। তথ্যপ্রযুক্তির যুগে মোটেই কষ্টকর কাজ নয় এটা। চাহিদার সঙ্গে সমন্বিত করে ফলন রেজিস্ট্রেশন করাও উচিত। ফলন রেজিস্ট্রেশনসাপেক্ষে ন্যায্যমূল্যের নিশ্চয়তা দেওয়া হলে কৃষক স্বতঃপ্রণোদিত হয়েই নিবন্ধন করতে আসবেন। ফলন নিবন্ধনের সুফল হলো, এতে এক ফসলের সম্ভাব্য বাম্পার ফলন ঠেকিয়ে চাহিদা মোতাবেক অন্য ফলনে উৎসাহ দেওয়া যাবে, জরুরি ক্ষেত্রে বাধ্য করা যাবে, এতে একদিকে বিশেষ ফলনকেন্দ্রিক প্রশাসনিক প্রস্তুতি সঠিক হবে, ভূমির ব্যবহার যৌক্তিক হবে আর অপ্রয়োজনীয় কৃষিপণ্য আমদানিতে বৈদেশিক মুদ্রার সাশ্রয় হবে। অর্থাৎ চালসহ অন্য কৃষিপণ্য আমদানির আইন, আমদানির পরিমাণ ও এমনকি চাহিদার বিপরীতে ব্যাংক এলসি নিয়ন্ত্রণও করা যাবে। আমদানিকেন্দ্রিক মজুদদারির চক্রেও লাগাম টানা যাবে। কৃষি নাগরিকের পেশা, চাষকৃত ভূমির পরিমাণ, সম্ভাব্য সার সেচ বীজের পরিমাণ, আপদকালীন খাদ্যসংগ্রহে ব্যক্তি কৃষকের কন্ট্রিবিউশন ইত্যাদি রেজিস্ট্রেশনের আওতায় চলে এলে আর শুধু একটা অটোমেশন স্তর বাকি থাকবে, সেটি হচ্ছে কৃষকের ব্যাংক ও মোবাইল অ্যাকাউন্টকে এই ডেটায় সংযুক্তকরণ। ইতোমধ্যে মোবাইল সিমের রেজিস্ট্রেশন হয়ে গেছে, উপরন্তু সরকার প্রশাসনের একাধিক সংস্থার কাছে বায়োমেট্রিকসহ নাগরিক ডেটাবেজ আছে, এগুলো সমন্বয় করে ভেরিফিকেশন পদ্ধতিও নিখুঁত করা যাবে। অর্থাৎ নাগরিক শনাক্তকরণের (পরিচয়পত্র এবং মোবাইল) কাজ আগেই হয়ে গেছে; এর সঙ্গে শুধু দরকার কৃষি তথ্য এবং ব্যাংক-মোবাইল অ্যাকাউন্টের যোগসূত্র স্থাপন। একই পদ্ধতিতে সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর অন্য সব খাতও নিয়ে আসা যায়। এই পর্যায়ে একটি কার্যকর অটোমেশনের যাবতীয় প্রস্তুতি সরকারের হাতে চলে আসবে অর্থাৎ সরকার জেনে যাবে কোন ফসল কোন এলাকায় কোন চাষি কতটুকু জমিতে আবাদ করছেন। কে নিজের জমিতে চাষ করছেন কে বর্গা জমিতে। কার কতটুকু সার ও সেচের প্রয়োজন। কে কতটুকু সম্ভাব্য ফলন উৎপাদন করবেন এবং সরকার এটাও জানবে যে, দুর্যোগকালীন সংগ্রহে কোন এলাকার কোন কৃষক কত মণ ধান বা অন্য ফলন জমা করবেন। অর্থাৎ আলাদা করে ধান ও চাল সংগ্রহে সরকারকে মজুদদারিকে ভর্তুকি দিতে হবে না।
এই অবস্থায় সরকার পরিবারের চার বা ছয় মাসের ভোগের জন্য যতটুকু ধান বা অন্য ফলন দরকার পড়ে তা বাদ দিয়ে বাকি জমির বাণিজ্যিক উৎপাদনের বিপরীতে (যা আগেই রেজিস্ট্রেশন করা হয়েছে) উৎপাদন ও বাজার মূল্যের পার্থক্য পরিমাণ ভর্তুকি ভেরিফাইড ব্যাংক বা মোবাইল ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অটোমেটিক ব্যাংক ট্রান্সফারের মাধ্যমে পাঠিয়ে দেবে। আর আমরা আগেই জানি যে, বর্গা করলে কৃষক মালিককে এক তৃতীয়াংশ পরিমাণ ধান দেন, ফলে এখানে ভূমি মালিকের ভর্তুকির হিস্যাও সুরক্ষিত রাখা যাবে। পরিবারের চাহিদা নির্ণয়ের ভালো পদ্ধতি হলো, ফলন নিবন্ধনের সময় পোষ্য গণনা করা। এটা জটিল মনে হলে একটি পরিবারের গড় চার পোষ্য ধরে হিসাব করা যায়। এটাও জটিল মনে হলে রেজিস্ট্রেশনের সময় শুধু বাণিজ্যিক উৎপাদনের পরিমাণ জাতীয় উৎপাদনের গড়ে রেকর্ড করা হবে। উৎপাদন মূল্য ও বাজার মূল্য কত তা নির্ণিয়ের পদ্ধতি এখনই আছে, যা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর আরও নিখুঁত করতে পারে। অর্থাৎ সংখ্যাগত ও গুণগত সমীক্ষার পরিসর বাড়িয়ে মণপ্রতি ভর্তুকির নিখুঁত অঙ্ক জাতীয়ভাবে ঠিক করা হবে। এই স্তরে পৌঁছালে কৃষককে ধান বিক্রি করতে দালালদের কাছে বা সরকারি গোডাউনে বা চাতাল-অটোমিলের মাফিয়াচক্রের কাছে ধরনা দিতে হবে না। বাজারে ধানের দাম যাই হোক সে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে মণপ্রতি লোকসানের পরিমাণ ব্যাংক হিসেবে পেয়ে যাবেন, কোনো বছর উৎপাদনে লোকসান না হলে ভর্তুকি পাবেন না। আঞ্চলিক ও জাতীয়ভাবে বন্যা-খরাসংক্রান্ত কারণে কৃষকের উৎপাদন পরিমাণে যে কিছু হেরফের হবে, তার শতাংশ ভর্তুকি হারের হিসাবে (ট্রেইড অফ) বিভিন্ন সংস্থা মিলে ঠিক করে দেবে। কৃষক ও তার বিপরীতে কৃষিভূমি শনাক্তকরণ এমন কোনো ধাঁধা নয়, যা সমাধান করা যাবে না, শুধু দরকার সরকারের সদিচ্ছা।
একবার তথ্য ব্যবস্থাপনা ঠিক হয়ে গেলে সরকার চাইলে একই কৃষক, তার আবাদের বিপরীতে সব ব্যাংক থেকে কৃষিঋণের পরিমাণ সংগ্রহ করে ঋণের সুদ (আসল নয়, শুধু সুদ) মার্জনার প্রক্রিয়াও স্বয়ংক্রিয় করা যাবে। এমন ব্যবস্থাও করা যাবে, যাতে রেজিস্টার্ড ফলনের সমপরিমাণ সার ও সেচের ভর্তুকিও ব্যাংকে পাঠানো যাবে; সে ক্ষেত্রে কৃষক বাজার মূল্যে সার কিনবেন। তবে এটা পরবর্তী ধাপ। আরেকটা ধাপ এমন হতে পারে যে, কোনো বিশেষ এলাকায় বন্যা-খরা-ঝড় ও লবণাক্ত পানির আগ্রাসন হলে সে এলাকার কৃষকের ভর্তুকির হার বাড়বে। কিংবা ভবিষ্যতে রেশনিং চালু হলে ক্ষতিগ্রস্ত আবাদকারীদের বাড়তি সুবিধা দেওয়া যাবে। অর্থাৎ একবার তথ্য সংগ্রহ ও ভর্তুকি প্রদানের ব্যবস্থাপনা সেন্সিবল হয়ে গেলে স্বয়ংক্রিয় সফটওয়্যার ও ব্যাংকিং সেবা দিয়ে জাতীয় বাজেটের কৃষি ভর্তুকি সত্যিকারভাবে কৃষক কল্যাণে ব্যয় করা সহজ হবে এবং একই প্রক্রিয়া ও পদ্ধতি দিয়ে ভবিষ্যতে কৃষি ও শস্যবিমাসহ নতুন নতুন কল্যাণধর্মী সেবা, দুর্নীতিহীন ও স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে চালু করা সম্ভব হবে।

ইনফ্রাস্ট্রাকচার রাইটার ও সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট অ্যাক্টিভিস্ট
প্রকৌশলী, ইইই, বুয়েট। সিনিয়র সফটওয়্যার সলিউশন আর্কিটেক্ট, ভোডাফোন নেদারল্যান্ডস
faiz.taiyeb@gmail.com

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০১১১২
১৩১৪১৫১৬১৭১৮১৯
২০২১২২২৩২৪২৫২৬
২৭২৮২৯৩০৩১