ধাক্কা সামলে ২০২৩ সালে সিঙ্গারের ভালো মুনাফা

নিজস্ব প্রতিবেদক: বহুজাতিক কোম্পানি সিঙ্গার বাংলাদেশ কয়েক বছর ধরেই ভালো মুনাফা করছে। তবে ২০২২ সালে হঠাৎ করেই মুনাফায় ধস নামে সিঙ্গারের। এক ধাক্কায় মুনাফা কমে প্রায় ৮৬ শতাংশ। সে বছর মাত্র সাত কোটি ৩১ লাখ টাকা মুনাফা করে সিঙ্গার বাংলাদেশ, যা সাম্প্রতিক বছরগুলোর মধ্যে সর্বনিম্ন। তবে সে ধাক্কা সামলে ২০২৩ সালেই ঘুরে দাঁড়িয়েছে কোম্পানিটি।

গত বছর তাদের মুনাফা সাতগুণ বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়ায় ৫২ কোটি ২১ লাখ টাকা। আমদানি করা পণ্যের চেয়ে নিজস্ব কারখানায় উৎপাদিত পণ্যের বিক্রি বৃদ্ধির সঙ্গে কোম্পানিটির অন্যান্য খরচ হ্রাসের ফলে মুনাফায় এমন উল্লম্ফন সম্ভব হয়েছে বলে জানান কোম্পানি সংশ্লিষ্টরা।

কোম্পানিটির বার্ষিক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালে সিঙ্গার বাংলাদেশ এক হাজার ৭০৩ কোটি টাকা ব্যবসা করে। এতে কোম্পানিটির মুনাফা হয়েছে ৫২ কোটি ২১ লাখ টাকা। আর আগের বছর ২০২২ সালে এক হাজার ৭০৯ কোটি টাকা ব্যবসা করে, যা বিগত বছরগুলোর মধ্যে সর্বোচ্চ। এ বছর কোম্পানিটি মুনাফা করে মাত্র সাত কোটি ৩১ লাখ টাকা। এ হিসেবে এক বছরের ব্যবধানে কোম্পানিটির মুনাফা বেড়েছে ৪৪ কোটি ৯০ লাখ টাকা।

সাম্প্রতিক বছরগুলোয় কোম্পানিটির ব্যবসা সম্প্রসারিত হলেও মুনাফা সমানুপাতিক হারে না বেড়ে উল্টো কমেছে। করোনাকালে ও করোনা-উত্তর সময়ে নানা আন্তর্জাতিক ও স্থানীয় চ্যালেঞ্জের কারণে ব্যয়বৃদ্ধিজনিত কারণে কোম্পানির মুনাফা হ্রাস পায় বলে জানা যায়।

সিঙ্গার বাংলাদেশ আগের বছরগুলোর মধ্যে ২০২১ সালে এক হাজার ৫৮১ কোটি ২৯  লাখ টাকা ব্যবসার বিপরীতে মুনাফা করে ৫১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। ২০২০ সালে এক হাজার ৪৯৫ কোটি ৯৮ লাখ টাকা ব্যবসার বিপরীতে ৮০ কোটি ৩৬ লাখ টাকা মুনাফা করে। ২০১৯ সালে এক হাজার ৫৪৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা ব্যবসার বিপরীতে মুনাফা করে ১০৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা এবং ২০১৮ সালে এক হাজার ৩৫৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা ব্যবসার বিপরীতে ৯০ কোটি দুই লাখ টাকা মুনাফা করে সিঙ্গার।

সাম্প্রতিক বছরগুলোর লভ্যাংশ প্রদানের চিত্র বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, কোম্পানিটির মুনাফার হার কমার সঙ্গে সঙ্গে লভ্যাংশ প্রদানের হারও কমেছে। সিঙ্গার বাংলাদেশ বিনিয়োগকারীদের ২০২৩ সালে নগদ ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ প্রদান করে। ২০২২ সালে মুনাফা হ্রাস পাওয়ায় মাত্র ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করেছিল কোম্পানিটি। এছাড়া আগের বছরগুলোর মধ্যে ২০২১ সালে ৬০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ, ২০২০ সালে ৩০ শতাংশ এবং ২০১৯ সালে ৭৭ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ প্রদান করে সিঙ্গার বাংলাদেশ।

সিঙ্গারের কোম্পানি সচিব কাজী আশিকুর রহমান জানান, সিঙ্গার সবসময় মুনাফার সঙ্গে সংগতি ও অন্যান্য পারিপার্শ্বিক বিষয় বিবেচনায় লভ্যাংশ প্রদান করে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে নতুন প্রকল্পে বিনিয়োগ ও তারল্য বজায় রাখতে মুনাফার তুলনায় লভ্যাংশের হার কিছুটা কম। তাছাড়া ঋণের সুদের হার বেশি হওয়ায় তারল্য বজায় রাখতে লভ্যাংশ কম প্রদান করার প্রবণতা ছিল।

বর্তমানে দেশের চলমান ডলার সংকটে আমদানিনির্ভর অন্য বহুজাতিক কোম্পানিগুলোর মতো সিঙ্গার বাংলাদেশও বাধার সম্মুখীন হচ্ছে। কোম্পানিটির পণ্য উৎপাদনে কাঁচামালের ৯০ শতাংশই আমদানিনির্ভর। বৈদেশিক মুদ্রার চ্যালেঞ্জের কারণে কাঁচামাল আমাদানি ব্যাহত হচ্ছে। এতে উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এর প্রভাব ব্যবসার ওপর পড়ছে।

 

 

 

বিষয় ➧

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০