হাসানুজ্জামান পিয়াস: পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতনে লেনদেনের পাশাপাশি কমছে সূচকসহ সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর। এতে প্রতিনিয়তই কমছে বিনিয়োগকারীদের পুঁজি। বাজার ভালো হওয়ার বিষয়ে খাতসংশ্লিষ্টরা যে আশার বাণী শোনাচ্ছেন, বাস্তবে তার প্রতিফলন লক্ষ করা যাচ্ছে না, যে কারণে পুঁজির নিরাপত্তা নিয়ে শঙ্কায় আছেন বিনিয়োগকারীরা।
অন্যদিকে বড় পতনে ডিএসইতে লেনদেন ৫০০ কোটি টাকার ঘরে নেমে এসেছে। গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয় মোট ৫৭৫ কোটি টাকার শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট। এর মধ্যে লেনদেন আবারও এক বছর আগের অবস্থানে চলে গেছে। এর আগে গত বছরের ১৫ এপ্রিল গতকালের চেয়ে কম লেনদেন হয়েছিল। সেদিন লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৫৫৬ কোটি টাকা।
চলতি সপ্তাহে প্রথম ও দ্বিতীয় কার্যদিবসের মতো গতকাল সপ্তাহের তৃতীয় কার্যদিবসে পুঁজিবাজারে সূচকের পতন প্রত্যক্ষ করেছেন বিনিয়োগকারীরা। গতকাল দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক কমতে দেখা গেছে ২৪ পয়েন্ট। লেনদেন শেষে গতকাল সূচকের অবস্থান হয়েছে ছয় হাজার ৬৯৪ পয়েন্টে। এদিকে সূচকের পাশাপাশি দর হ্রাস পেয়েছে লেনদেন হওয়া সিংহভাগ প্রতিষ্ঠানের শেয়ারদর। গতকাল ডিএসইতে মোট ৩৮১টি কোম্পানির শেয়ার এবং মিউচুয়াল ফান্ডের ইউনিট লেনদেন হতে দেখা যায়। এর মধ্যে দর বেড়েছে মাত্র ৫১টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের। অন্যদিকে লেনদেন হওয়া সিংহভাগ শেয়ার ও ইউনিটদর হ্রাস পাওয়ার কারণে উল্লেখযোগ্যহারে কমে গেছে বাজার মূলধন। এক দিনের ব্যবধানে ডিএসইতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এবং ফান্ডের বাজার মূলধন হ্রাস পেয়েছে এক হাজার ৩১৬ কোটি টাকা। গতকাল দিন শেষে বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে পাঁচ লাখ ৩৫ হাজার ৮৫৪ কোটি টাকায়। আগের কার্যদিবসে যার পরিমাণ ছিল পাঁচ লাখ ৩৭ হাজার ১৭০ কোটি টাকা।
এদিকে বাজারের এই বড় পতনের কোনো কারণ খুঁজে পাচ্ছেন না সংশ্লিষ্টরা। তারা ঘুরেফিরে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের দিকে আঙুল তুলছেন। তাদের অভিমত, বাজারে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করছেন না। তারা বিভিন্ন সময়ে বাজারমুখী হওয়ার ঘোষণা দিলেও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের মতো বাজারমুখী হচ্ছেন না, যে কারণে বাজার পতনের খোলস ছেড়ে বের হতে পারছে না। বাজার সংশ্লিষ্টদের কেউ কেউ মনে করছেন, সম্প্রতি শ্রীলঙ্কার অর্থনীতিতে বড় ধসের পাশাপাশি দেশের বাজারে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে বাজার থেকে মুনাফা তুলে নেয়ার প্রবণতা দেখা গেছে। এতে করে বিক্রির চাপ সৃষ্টি হচ্ছে এবং ক্রেতা সংকটে বাজারের করুণ চিত্র বদলাচ্ছে না।