Print Date & Time : 18 June 2025 Wednesday 12:48 pm

ধূমপানের তিন থেকে চার ঘণ্টা পরও…

 

একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে, সিগারেট-বিড়ির ধোঁয়ায় রয়েছে শতাধিক ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ। এগুলোর মধ্যে ৭০টি ক্যানসার সৃষ্টির জন্য সরাসরি দায়ী।
ওপরের তথ্য জানার পরও অনেকে ধূমপান করেন। তাদের জন্য ঘরে-বাইরে, রাস্তাঘাটে নাক চেপে থাকতে হয় অধূমপায়ীদের। অথচ ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকরÑএ কথাটা সবাই জানেন।
সিগারেটের প্যাকেটের গায়ে বড় করে ক্যানসার আক্রান্তের ছবি ও সতর্কবার্তা থাকলেও ধূমপায়ীরা একে পাত্তা দেন না। আপনি ধূমপান করছেন না অথচ আপনার পাশে কেউ ধূমপান করছেন, তাতেই বেশি বিপদ। কারণ ধূমপানের পরোক্ষ প্রভাব ক্ষতিকর। এই পরোক্ষ ধূমপান অসুস্থ করে তুলছে শিশুদেরও।
গর্ভবতী মহিলাদের ধূমপানের প্রবণতা থাকলে গর্ভস্থ ভ্রƒণ ভয়ানক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। কোনো গর্ভবতী মহিলার সামনে বা পাশের ঘরে গিয়ে ধূমপান করলেও ওই সন্তানসম্ভবার শারীরিক ক্ষতির ঝুঁকি থেকে যায়। ধূমপান করছেন না অথচ সিগারেট জ্বালাচ্ছেÑএ ক্ষেত্রেও ক্ষতির আশঙ্কা থেকেই যায়। কারণ সেই ধোঁয়া সরাসরি বাতাসের সঙ্গে মিশছে। আর সেই বাতাস
ঘ্রাণের সঙ্গে শরীরে প্রবেশ করলে (সাইড স্ট্রিম) শ্বাসনালী ও ফুসফুস ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শিশুরা খুব দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস নেয়। তাছাড়া শিশুদের শ্বাসনালি আকারেও অনেকটা ছোট। ফলে বিড়ি-সিগারেটের ধোঁয়ায় শিশুদের শ্বাসনালি আর ফুসফুস মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ছোটদের মধ্যে সর্দি-কাশি, ব্রঙ্কাইটিস, হাঁপানি ও নিউমোনিয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়।
যেসব বাড়িতে এক বছরের কম বয়সী শিশু রয়েছে, তাদের আরও সতর্ক হতে হবে। কারণ মা, বাবা অথবা বাড়ির অন্য সদস্যদের ধূমপানের কুপ্রভাবে শিশুদের মধ্যে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়। সমীক্ষায় দেখা গেছে, যেসব সন্তানসম্ভবা নারী ধূমপায়ী, তাদের ক্ষেত্রে শিশুমৃত্যুর ঘটনা অধূমপায়ীদের থেকে ৫৮ শতাংশ বেশি। একইভাবে সন্তানসম্ভবার সামনে বা কাছে ধূমপান সদ্যজাত শিশুর অকাল মৃত্যুর আশঙ্কাও বাড়ায়।
সিগারেটের নিকোটিনের ক্ষতিকারক প্রভাব সম্পর্কে যারা মোটামুটি অবগত, তারা অনেক সময় শিশুর সামনে ধূমপান না করে বাড়ির বারান্দায়, ছাদ বা বাইরে গিয়ে ধূমপান করেন। এরপর শিশুর কাছে যান বা তাকে কোলে নেন। কিন্তু বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলেও শিশুর শরীরে নিকোটিনের বিষ প্রবেশ করে। ধূমপানের পর জামাকাপড় ও ধূমপায়ীর শরীরে বিষাক্ত রাসায়নিক থেকে যায় কমপক্ষে ঘণ্টা
তিন-চারেক। তাই শিশু থেকে দূরে গিয়ে ধূমপান করে এলেও ক্ষতির আশঙ্কা থেকে যায়। শিশুর সুস্থ ভবিষ্যতের কথা ভেবে ধূমপান থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকুন।