নিজস্ব প্রতিবেদক: ভাস্কর্য ইস্যুকে দেশের আলেম সমাজ ও কিছু ধর্মভিত্তিক সংগঠন বিরোধিতা করলেও ঢাকার ধোলাইপাড়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ভাস্কর্য তৈরি হবেই বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছেন তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ। গতকাল সচিবালয়ে ফ্রান্সের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এক বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নে তিনি বলেন, ‘ধোলাইরপাড়ে ভাস্কর্য নির্মিত হচ্ছে এবং হবেই।’
সরকার বিভিন্ন মতের মানুষের সঙ্গে ‘বসতেই পারে’ মন্তব্য করে তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন মত-পথের সঙ্গে বসা মানে এ নয় যে আমরা আমাদের অবস্থান থেকে বিচ্যুত হয়েছি। আমাদের অবস্থান যেখানে ছিলে সেখানেই আছে, থাকবে এবং সব মৌলবাদী অপশক্তি, যারা এ দেশটাকে পিছিয়ে দিতে চায়, তাদের বিরুদ্ধে স্বাধীনতার পক্ষের শক্তির যে ঐক্য-সংহতি, সেটি নিয়ে দেশ এগিয়ে যাবে।
মুজিববর্ষে ঢাকার ধোলাইরপাড়ে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হলে তার বিরোধিতা শুরু করেন কওমি মাদরাসাকেন্দ্রিক বিভিন্ন সংগঠনের জোট হেফাজতে ইসলামের নেতারা।
হেফাজতের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মামুনুল হক ভাস্কর্য তৈরি করা হলে তা ‘বুড়িগঙ্গায় ফেলার’ হুমকি দেন। এরপর চট্টগ্রামে এক ধর্মীয় সভায় হেফাজত আমির জুনাইদ বাবুনগরী যে কারও ভাস্কর্য তৈরি করা হলে ‘টেনে-হিঁচড়ে’ ভেঙে ফেলার হুমকি দেন।
এর প্রতিবাদে রাস্তায় নামে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল এবং সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠন, লেখক-অধ্যাপক, শিল্পী-সাহিত্যিকরা।
এ পরিস্থিতিতে সোমবার রাতে কওমি মাদরাসা বোর্ড বেফাকের সভাপতি মাওলানা মাহমুদুল হাসানের নেতৃত্বে ১২ সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর ধানমণ্ডির বাসায় বৈঠকে বসেন। বৈঠকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী গতকাল সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মনে করি, আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই সব সমস্যা সমাধান করব। ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারব। যে সব কথাবার্তা আলাপের মাধ্যমে বেরিয়ে এসেছে, এগুলো সবই আমরা ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারব।’
মন্ত্রী বলেন, ‘জিয়াউর রহমানের আমলে ফখরুল সাহেবদের মতো নেতাদের কেনাবেচা হয়েছে। জিয়ার আমলে যারা দলছুট রাজনীতিবিদ, তাদের হাট বসত, সেই হাটে অনেকে বিক্রি হয়েছেন। মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর সাহেবও রাজনীতির হাটে বিক্রি হওয়া একজন রাজনীতিবিদ।’
হাছান বলেন, সেই সময় একটি ধনিক শ্রেণি তৈরি করা হয়েছিলে, ব্যাংক লুটেরা শ্রেণি তৈরি করা হয়েছিল। তখন বিএনপি সমর্থিত ব্যবসায়ীদের, বিএনপি নেতাদের ব্যাংক লোন দেয়া হয়েছে, যে লোন শোধ করা হয়নি। লোন দেয়াই হতো এই লোন শোধ করতে হবে না জেনে। অর্থাৎ লুটপাট শুরু হয়েছিলে জিয়ার আমলে। আর সেই লুটটপাট ষোলকলায় পূর্ণ হয়েছে খালেদা জিয়ার আমলে।
