প্রতিনিধি, নওগাঁ: নওগাঁর সাপাহারে সরকার-নির্ধারিত দামের চেয়ে অতিরিক্ত মূল্যে সার বিক্রির অভিযোগ উঠেছে বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) ও বাংলাদেশ রাসায়নিক শিল্প করপোরেশনের (বিসিআইসি) ডিলারদের বিরুদ্ধে। তারা সরকারি নির্দেশনার তোয়াক্কা না করে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে অতিরিক্ত দামে সার বিক্রি করছেন বলে দাবি স্থানীয় কৃষকদের। এতে ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকেরা।
এ বিষয়ে গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন উপজেলার খুদারামবাটি মহিলিপুর গ্রামের সাইদুল ইসলামের ছেলে সোবহান আলী। তিনি অভিযোগের অনুলিপি নওগাঁ জেলা প্রশাসক, জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এবং উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বরাবর দাখিল করেন।
সোবহান আলী বলেন, এ বছর ‘সুফলা ট্রেডার্সের মালিক শ্রী মৃণাল সাহার কাছ থেকে ধান চাষের জন্য প্রতি বস্তা ডিএপি এক হাজার ৪০০ টাকায় এবং এক বস্তা টিএসপি এক হাজার ৭০০ টাকায় কিনেছি। কিন্তু সার ক্রয়ের রশিদ চাইলে নির্ধারিত মূল্যের রশিদ প্রদান করা হয়, অতিরিক্ত টাকা লেখা হয় না।
সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন সারের বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৮০০ টাকা মূল্যের ডাই অ্যামোনিয়া ফসফেট (ডিএপি) ৯০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকায় এবং এক হাজার ১০০ টাকার ট্রিপল সুপার ফসফেট বা টিএসপি বিক্রি হচ্ছে এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৭০০ টাকায়। এতে কৃষককে বস্তাপ্রতি অতিরিক্ত গুনতে হচ্ছে ১০০ থেকে ৫০০ টাকা।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সাপাহারের একাধিক কৃষক জানান, বিএডিসি ও বিসিআইসির অনুমোদিত উপজেলার প্রতিটি সার দোকানে মূল্যতালিকা থাকার পরও নির্ধারিত দামে মিলছে না সার। আবার অতিরিক্তি দামে সার ক্রয়ের পর রশিদ চাইলেও দেয়া হয় না। রশিদ চাইলে সার দিতে অপারগতা জানান ডিলাররা। সরকার স্যারের দাম কমালেও আমাদের কোনো উপকার হচ্ছে না। কেনার সময় ডিলাররা দাম অনেক বেশি নিচ্ছে। এতে প্রতি বস্তায় ৫০০-৬০০ টাকা বেশি দিতে হচ্ছে আমাদের।
অতিরিক্ত টাকা নেয়ার বিষয়ে সুফলা ট্রেডার্সের মালিক শ্রী মৃণাল সাহা বলেন, আমি দোকানে বেশি সময় দিতে পারি না। বাবুল হোসেন নামের একজন ম্যানেজার থাকে, তার কাছ থেকে শুনে আপনাদের জানাতে পারব। পরে মুঠোফোনে অনেকবার কল দিলেও তিনি আর ফোন রিসিভ করেননি।
সাপাহার উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মুনিরুজ্জামান বলেন, দাম বেশি নেয়ার বিষয়ে লিখিত অভিযোগ পেয়েছি, কিন্তু কোনো প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে না। প্রমাণ পেলে ডিলারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
সাপাহার উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, অতিরিক্তি দামে সার বিক্রির বিষয়টি তদন্ত চলছে। প্রমাণ পেলে ডিলারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।