নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁ সদর মডেল থানায় জিডি করতে ডিউটি অফিসারের হাত-পা ধরে অনুরোধ না করায় এক সাংবাদিককে লাঞ্ছিত করা হয়েছে। হাত-পা ধরতে হবে কেন এ বিষয়ে প্রতিবাদ করায় তার ঘাড় ধরে থানাহাজতে নেয়ার জোর চেষ্টা করা হয়। এ ছাড়াও তার মোবাইল ফোনটিও কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করে। অপরদিকে সব সাংবাদিককে থানার দালাল বলে উল্লেখ করা হয়েছে। পুলিশের এই এমন আচরণের প্রতিবাদে প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক জরুরি সভায় জেলা পুলিশের বিরুদ্ধে বেশ কিছু সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে।
জানা গেছে, নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবের সদস দৈনিক জবাবদিহি ও আমার বার্তার জেলা প্রতিনিধি রাসেল রানা তার এক আত্মীয়কে সাথে নিয়ে গতকাল রোববার বেলা সাড়ে ১২টায় পাসপোর্ট হারানোবিষয়ক একটি সাধারন ডাইরি (জিডি) করতে যান। এ সময় ডিউটি অফিসার হিসেবে দায়িত্বে ছিলেন এএসআই আল আমীন। সেখানে কনস্টেল তহুরা ও কনস্টেবল মুমিন ছিলেন। প্রাথমিকভাবে জিডি নিতে অস্বীকৃতি জানানো হয়। পরে কনস্টেবল তহুরা বলেন যে, স্যারের হাত-পা ধরে অনুরোধ করলে মন ভালো হলে জিডি নিতেও পারেন। এ কথা শুনে হতবাক রাসেল রানা বলেন, জিডি করা সাধারণ মানুষের অধিকার। কেন জিডি নেবেন না। এটি পুলিশের সাথে তর্কের শামিল উল্লেখ করে ডিউটি অফিসার আল আমীন ও কনস্টেবল মুমিন রাসেল রানার ঘাড়ে হাত দিয়ে থানা হাজতের দিকে নিয়ে যেতে থাকেন। এ সময় ওসি (তদন্ত) সেখানে এসে বিষয়টি জানতে চান। ডিউটি অফিসার মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বলেন রাসেল থানার ভেতরে উত্তেজিত হয়ে কথা বলেছেন। তখন রাসেলের পরিচয় জানতে চান ওসি (তদন্ত)। সাংবাদিক পরিচয় বিশ্বাস না হওয়ায় প্রেস ক্লাব সভাপতির কাছে মোবাইলে তার পরিচয় নিশ্চিত হয়ে জিডি গ্রহণের নির্দেশ দেন তিনি।
জিডি নেয়ার পর মুমিন নামের এক কনস্টেবল আস্ফালন করে বলেন, সব সাংবাদিক থানার দালাল। তাদের কাজ না করে দেয়াই ভালো। রাসেল সে কথার প্রতিবাদ করে চলে আসেন।
এদিকে সন্ধ্যায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে নওগাঁ জেলা প্রেস ক্লাবে এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় পুলিশের এই ন্যক্কারজনক আচরণের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। এ ছাড়াও অতিসত্বর এ ঘটনার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে পুলিশের সাথে সাংবাদিকরা কোনো সম্পর্ক রাখবে কি না, তা ভেবে দেখা হবে। পুলিশের সব অনুষ্ঠান বর্জন ও তাদের যে কোনো সংবাদ প্রকাশ বন্ধ রাখা হবে বলেও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।